পঙ্কজদা আর দিদি গিয়েছিলেন নেমন্তন্নে পাশের বাড়ি। এ বাড়িতে পঙ্কজদা এই প্রথম ঢুকবেন। ২ বছরে প্রথম ঢুকবেন তথা বলা বাহুল্য, এ বাড়িতে অষ্টাদশী না হোক, কোন অল্প বয়সী রমণী অবশ্যই আছে। সঠিক, পঙ্কজদা এখনও ঠিক করতে পারছেন না, নেমন্তন্ন রক্ষা করা খুবই জরুরি কি না। উনি রমণীকুলের সামনে অস্বস্তিবোধ করেন।
দিদি কড়া নাড়েন। ত্রস্ত পায়ের শব্দ আসে ভেতর থেকে। দিদি বার কয়েক পঙ্কজদাকে দরজার সামনে আনতে চেষ্টা করেন, উনি সরে যান।
খট করে দরজা খুলে যায়, এক কপাট এসে পঙ্কজদাকে আড়াল করে ফেলে।
ও বাড়ির অষ্টাদশী, নীলিমাদি খুলেছেন। দিদির পিছনে উঁকি দেন তিনি, “তোমার দাদা আসে নি?”
দিদি খানিক অপ্রস্তুত হয়ে যান, চোখের কোণে পঙ্কজদার প্রবলভাবে মাথা নাড়ানো ধরা পড়ে তার।
অস্ফুটে বলেন, “না রে। কত করে বললাম আসতে, এলো না।“
“ওহ” খানিকটা হাসার চেষ্টা করেন নীলিমাদি।
পঙ্কজদা ফিরে যাচ্ছেন, “কেন করলো প্রশ্নটা? যদি মুখ দেখাতেন। কি লজ্জাটা পেত। যাহ! আজকেও দেখতে পারলাম না, ও দেখতে কেমন!”
আমি অবাক হই না, “তুমি আজকেও ঢুকো নি ও বাড়িতে?”
উনি হালকা একটু হাসি দেন।
“কি সমস্যা তোমার বলো তো। এমন কর কেন? নিজেকে খুব সুপুরুষ ভাবো?” গলা কঠোর হয়ে যায় আমার।
ফেসবুকের পাতা থেকে চোখ সরিয়ে বলেন, “শোন, ভিজিএ ক্যামেরায় ভাঙা মানুষের মুখও ভরা ভরা লাগে, স্ট্যাটাস পড়ে মানুষ চিনতে পারা মনে করা বোকামী”।
তার এ অদ্ভুত কথায় রাগ এবার আমার আরাম-কেদারায় আছড়ে পড়ে, “নীলিমাদি তোমার ফেসবুকে নাই, উনি তোমাকে বাস্তবে দেখেছেন”।
বলার কিছু আর রইলো না পঙ্কজদার বুঝতে পারি। আবার ফেসবুকের পাতায় ডুব দেন। তার নীরবতার কারণ সম্পর্কে আমি অবগত।
ঘরের বড় ছেলেদের মনে হয়, অনেক কিছুই বিসর্জন দিতে হয়! ছোট্টবেলা থেকে, বড়বেলাতেও... খুন করে ফেলে নিজের অনেক সুখ! অবশ্য তারা সে সম্পর্কে জ্ঞাত কি না, আমার জানা নাই। শিক্ষিত ভদ্র পরিবারের মান তো তাদের হাতে ন্যস্ত থাকে।
“নীলিমাদি দেখতে কেমন জানো?” আস্তে করে প্রশ্নটা করি।
উত্তর আসে না।