সৃষ্টিকর্তা আরশে এক মনে বসে আছেন। প্রশান্ত হৃদয়। প্রশান্ত চারিপাশ।
হঠাৎ খানিক একটা অদ্ভুত সুন্দর জিনিস উনার ভাবনায় উঁকি দিয়ে যায়। চমকে উঠেন, কি দেখলেন তিনি এক চিলতে! উনি সৃষ্টিকর্তা, ভাবনা পালিয়ে যেতে পারে না। উনি মুগ্ধ বিস্ময়ে প্রতিটা সেকেন্ড দেখলেন তার যাদুর পটে।
কি অদ্ভুত সুন্দর!
তাঁর প্রশান্ত হৃদয় অস্থির হয়ে উঠলো। এক মুহুর্ত দেরী করলেন না সিদ্ধান্ত নিতে।
কি ভেবেছিলেন সৃষ্টিকর্তা? কি দেখে এত মুগ্ধ হয়ে ছিলেন?
দু’টো ছোট্ট ভেজা চোখ আস্তে আস্তে খুলে দেখে নিলো কার কোলে আছে সে। তার পর নিশ্চিন্তে চোখ বুজলো।
ঠোট দু’টো একটু প্রসারিত হলো, মিষ্টি একটা আভা ছড়িয়ে পড়লো পুরোটা জায়গা জুড়ে...
ছোট্ট ঠোট দুটো জোড়া লাগছে, আলদা হচ্ছে, সেই দিকে একটা মানুষ একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ঠোট জোড়া থেকে, “মাহ” শব্দ আসলো। বড় মানুষটার চোখ থেকে নিঃশব্দে অশ্রু গড়ালো। বুকে চেপে ধরে ছোট্ট মানুষটাকে।
ছোট ছোট আঙ্গুল দিয়ে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা তার বড় মানুষটার একটা আঙ্গুল!
এই দৃশ্যকল্পগুলোতে সৃষ্টিকর্তা অপেক্ষা করতে পারেন নি! অস্থির হয়েছিলেন সৃষ্টির জন্য। সৃষ্টি হলো।
সৃষ্টিকর্তা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছেন। ফেরেশতারা বলললেন, “আপনি এমন কিছু সৃষ্টি করবেন যা দুনিয়ার বুকে ফিৎনা-ফ্যাসাদ রক্তপাত সৃষ্টি করবে?”
সৃষ্টিকর্তা মানলেন না সেটা। এত সুন্দর সৃষ্টি এত তুচ্ছ কারণে বাতিল হতে পারে না। হলোও না।
তিনি মুগ্ধতা লুকোলেন, "আমি একে আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।"
ফেরেশতাদের দিকে পেছন ফিরে তিনি গভীর ভালোবাসায় তাকিয়ে থাকলেন মানুষটার দিকে।
এমনটাই ভাবতে ইচ্ছা করছে, সৃষ্টিকর্তাও বুঝি মুগ্ধ হয়েছিলেন ঐ মুখ দেখে! মানুষ বুঝি এভাবেই সৃষ্টি হয়েছিল।
[...একটা ছোট্ট বাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় কথা গুলো মাথায় এসেছিলো। এত শান্তি-পবিত্রতা মুখটায়! এখানে ধর্মের কোন যুক্তি-ভাবনা নেই। শুধু একটু মুগ্ধ-ভাবনা আছে।]