somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি এই গল্পটি লখিছেলিাম ২০০০ সালরে দকি,ে আজ ২য় র্পব শয়োর করলাম, যদি আপনাদরে ভাল লাগে তবে বাকি প্রকাশ করবো,

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১ম পরব:

২)) রনক ও তার বান্ধবী রনকদের বাসায়।

শাম্মী অবাক হয়ে ড্রইংরুমের ভেতর তাকিয়ে আছে।
গ্রামের অনেক বাড়িতে ইলেকট্রিসিটি, গ্যাস, বিল্ডিং সচরাচর দেখা যায় না। এ গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি টিনের তৈরি, উঠোন কাঁচা। শুধু ব্যাতিক্রম হচ্ছে রনকদের বাড়ি।এ বাড়ির অনেক কিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।

শাম্মী বসে আছে রনকদের ড্রইংরুমে। শামমী রনকের বান্ধবী। দু’জনেই রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। বাংলা সাহিত্যে অনার্স করছে, সেকেন্ড ইয়ারে। ড্রইংরুমের সাজসজ্জা দেখে যেকেউ ভাববে এ বাড়ির কেউ বিদেশে থাকে। কেমন ট্রাভেল এজেন্ট অফিস অফিস ভাব। সোফার পাশে সো-কেসে নানান ধরনের মূর্তি। সো-কেসের তিনটি তাক-ই এইসব হিজিবিজি মূর্তি। একটা ব্যাপার মাঝে মাঝে অবাগ লাগে, এইসব হিজিবিজি মূতি ঘরের কোন সোন্দর্য্য বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে মনে হয় না, বরং ঘরে ফেরেসতা ঢোকার পথ বন্ধ। পবিত্র হাদিস শরিফে আছে, ” যেখানে মূর্তি থাকে সেখানে ফেরেসতা প্রবেশ করে না”।

শাম্মী বসে আছে প্রায় ষোল মিনিটের মত। এর মধ্যে সতের আঠার বছরের একটা ছেলে খুবই সংকোচিত ভাবে এসে জিজ্ঞেস করেছে, আপা, আপনাকে চা দেব। শামমী মাথা নেড়ে বলেছে, হ্যা, সাথে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি দিবে। সেই চা এখন পর্যন্ত আসেনি।
’গ্রামে সাধারনত অধিকাংশ বাড়িতে মেয়েরা কাজ করে কিন্তু এই বাড়িতে একটা ছেলে কাজ করছে, ব্যাপারটি ইন্টারেষ্টিং। শাম্মী মাথা তুলে উপরের দিকে তাকাতেই একটা মাঝারী সাইজের ঝাড়বাতি চোখে পড়ল। ঝাঁড়বাতিটি বেশ সুন্দর। কিন্তু ঝাড়বাতির চলিত অনেক আগেই বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে ড্রইংরুম খুবই সিম্পল থাকে।

- আপা, আপনার চা।
শাম্মী ঘুরে তাকাল। বাবুর্চি টাইপ ছেলেটা অবশেষে চা এনেছে, সাথে এক পিরিচ নুডুলস ও এক পিরিচ পায়েস। তবে পরিমানে খুবই কম। দিন দিন মানুষ খুবই কৃপন হয়ে যাচ্ছে। শাম্মী পানি খেতে খেতে ছেরেটির দিকে তাকিয়ে বলল, এ্যাই তোমার নাম কি?
- ছেলেটি চোখ তুলে শাম্মীর দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বলল, ’আনোয়ার জাহিদ’, তবে এ বাড়ির সকলেই জাহিদ নামেই ডাকে।
-তোমার নামটা বেশ কমপ্লেক্র।একাই দ’জনের নাম ব্যবহার করছ। আনোয়ার + জাহিদ। খুব ভাল। আমি যে এসেছি তোমার রনক আপা কি এটা জানে?
-জ্বি জানেন। আপা গোসল শেষ করে উনার রুমে গেছেন।আমি কি আপাকে আবার ডাকবো ? মনে হয় আপনি চা খেতে খেতে উনি চলে আসবে।পিরিচের দিকে তাকিয়ে ছেলেটি আবার বলল,আপনি তো কিছুই খাচ্ছেন না, অন্য কিছু দেব ?
-না, কিছুই দিতে হবে না। আচ্ছা তুমি এ বাড়িতে কত দিন আছ ?
-আমি ছোট বেলা থেকেই এ বাড়িতে আছি। রনক আপা আমার দুর সর্ম্পকীয় বোন।
- তুমি কি এখানে থেকে লেখাপড়া কর ?
- জ্বি, এবার এস এস সি পরীক্ষা দিব।
-ও, আচ্ছা,ভেরী গুড । তুমি আমাকে আরেক কাপ চা দাও, কোন সমস্যা হবে নাতো ? সমস্যা হলে থাক।
ছেলেটি হ্যা সূচক মাথা নেড়ে চলে গেল। শাম্মী আবার ঝাঁড়বাতিটির দিকে তাকাল । ওর খুব ইচ্ছে করছে পুরো ঘর অন্ধকার করে ঝাঁড়বাতিটি জ্বালানোর। একবার সুইচ অন করবে আবার অফ করবে। আলো- আঁধারের খেলা নিঃশ্চয় অদ্ভুদ লাগবে। তাছাড়া বাস্তবে ঝাঁড়বাতির আলো কখনো দেখেনি শাম্মী ।
- আপা, আপনার চা।
-থ্যংকিউ.
-রনক আপা কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পড়বে। দেরির জন্য সরি বলেছে।
-ও কে, তুমি যাও, কোন সমস্যা নেই।
’চা শেষ হয়েছে। টি টেবিলের উপর পায়েস ও নুডুলস এর পিরিচ দুটো রয়েছে। একটু কি খেয়ে দেখবো ? না, বাসা থেকে ফুল-পেট নাস্তা করা হয়েছে। পানিও একটু বেশী খাওয়া হয়ে গেছে। কোথাও বেরুতে গেলে মেয়েদের পানি একটু কম খেতে হয়। যদি একবার চেপে বসে, তবে অবস্থা খারাপ ! যত সমস্যা এই মেয়েদের বেলায় । ছেলেদের পথে-ঘাটে কোথাও কোন সমস্যা নেই। একটু জায়গা পেলেই কাজ সারতে পারে।’

শাম্মী ঘড়ির দিকে তাকাল। না অনেকক্ষন হয়ে গেল। রনরকর আসার কোন খবর নেই। ছেলেটার কথামতে ওর এতক্ষন চলে আসার কথা।
-সরি শাম্মী । লেট করার জন্য সরি।
- শাম্মী ঘুরে তাকাল । একটু হাসবার চেষ্টা করে বলল, সরির কিছু নেই।
শাম্মী উঠে দাঁড়াতেই রনক শাম্মীকে জড়িয়ে ধরল। তারপর আস্তে করে বলল-তুই এসেছিস আমি খুব খুশী হয়েছি। তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে।
-শাম্মী রনককে ছেড়ে দিয়ে বলল, তুই আগে বোস তার পরে বল।
-রনক সোফায় বসতে বসতে বলল,আমরা আজ সারাদিন বাহিরে কাটাবো। দুপুরে বাহিরে খাব ।
- শাম্মী ঠোট উল্টিয়ে বলল, সরি, আমি সারাদিন বাহিরে ঘুরতে পারবো না ।
- কেন, তোর সমস্যা কি ?
- আমি ভাইয়ার মোবাইল নিয়ে এসেছি, লান্চের আগেই ভাইয়ার মোবাইল ফেরত দিতে হবে।
- কেন, তোর সেট ?
- আমার সেট পানির মধ্যে পড়ে গিয়েছিল, কোন ভিউ আসতেছে না। প্লিজ রনক আমার লান্চের আগেই ফিরতে হবে।
- ঠিক আছে, আগে বের হই তার পরে দেখা যাবে।
- আচ্ছা আচ্ছা ভাল কথা, তোদের বাসায় যে চেলেটি দেখলাম ওর নাম কি যেন ?
-কেন, আনোয়ার, কি হয়ছে ?
-না, কিছুই হয়নি, এুিই। আনোয়ারের সাথে আরও কিছু আছে, জাহিদ আনোয়ার। তোর একজন বিশেষ মানুষের নামের সাথে মিল আছে।

রনক একটু অপ্রস্তুত বোধ করল, যেন শাম্মীর কথা কিছুই শুনতে পায়নি।
-রনককে চুপচাপ দেখে শাম্মী আবার বলল, কিরে মনে হয় আমার কথা কিছুই শুনতে পাসনি। এমন ভব ধরে আছিস কেন ?
-ভব ধরলাম কোথায়, চল বের হওয়া যাক।
-চল।
রনক ভার্সিটিতে বোড়খা ব্যাবহার করে । কিন্তু বাড়ি থেকে কাছাকাছি কোথাও বেরুলে বোড়খা ব্যাবহার করে না। আজকে সবকিছুই সাদা পড়েছে। সাদা থ্রী-পিচ, সাথে সাদা সেন্ডেল, পুড়ো হাত ভরা সাদা চুড়ি, গলাতে সাদা ছোট পুথির মালা, মালা থেকে এক ধরনের সাদা আভা বের হচ্ছে, কানের দুল জোড়াও সাদা, ঠোটে এক ধরনের সাদা সিল্কি টাইপের লিপষ্টিক দিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এখনই ডানা পরে পরির দেশে চলে যাবে।
-রিক্সায় ওঠার পর শাম্মী চোখ বড় বড় করে রনকের দিকে তাকিয়ে বলল, কিরে এরকম সাদা পরী সেজেছিস কেন? দেখে মনে হচ্ছে এখনই উড়াল দিবি?
-রনক ফিক করে হেসে বলল, আরে উরতে পারলে তো ভালই হতো।
- শাম্মী বলল, ছাপোজ তোর সত্যি সত্যি ডানা লাগিয়ে দেওয়া হলো তখন তুই কি করবি ?
-তোর কথা বুঝলাম না, কি বলছিস ?
-ধর,তোর পাখির মত ডানা আছে, তুই যেখানে ইচ্ছা উড়ে যেতে পারবি, তাহলে তুই এখন কোথায় যাবি ?
-ও আচ্ছা এই কথা। আমার এই ক্ষমতা টুকু থাকলে এখনই উরাল দিয়ে আমি আমার জানের কাছে চলে যেতাম।
রনকের কথা শুনে শাম্মী শব্দ করে ফেলল, রনকের একটা হাত ধরে আবেগ জড়িত কন্ঠে বলল,দেখ রনক তোর এখন অনেক কিছু বোঝার মত বয়স হয়েছে, এমন কিছু করিস না যাতে তোর পরবর্তিতে কষ্ট বারে।

রিক্সা হাইওয়ে দিয়ে ছুটে চলছে। বাতাসে রনকের চুলগুলো উড়ছে। একধরনের শীতল বাতাস রনকের মুখে লাগছে। রনক এক দৃষ্টিতে শাম্মীর দিকে চেয়ে আছে, ভাবছে,শাম্মী মনে হয় জানে না , জাহিদ যদি বলে পাঁচ তলার ছাঁদ থেকে আমাকে লাফ দিতে-তবে আমিচোখ বন্ধ করে লাফ দিব, কিছুই জিঞ্জেস করব না। ওর জন্য আমি কি করতে পারি আমি নিজেও জানি না। এরা কেও-ই কোন দিন জানবে না আমি জাহিদকে কতটুকু ভালবাসি ।

রনককে চুপচাপ দেখে শাম্মী বলল, কিরে কি ভাবছিস ?
-রনক আস্তে করে বলল, না, কিছুই না।
-তুই যে বলছিলি আজকে বাহিরে খাবি, তা খাবিটা কোথায় ? ঐ আলম চাচার হোটেলে ?
-ধ্যাত তুই যে কি বলিস, এখানে একটা মিনি চাইনিজ আছে। কয়েকটা বড় ফাস্টফুডের দোকানও আছে ।
-ঠিক আছে, আমরা আজকে বাহিরে লান্চ করব।

কোন জানি রনককে আর বাহিরে ঘুরতে ইচ্ছে করছে না। বাসায় গিয়ে রুম বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। বেশ কিছুদিন ধরে রনকের এই সমস্যাটা হচ্ছে। সেজে গুজে ঘুরতে বের হয়, কিছুক্ষন ঘোরার পড় হঠাৎ করে মনে হয় ও জাহিদের সাথে এক রিকশায় বেরাচ্ছে। কিন্তু যখন দেখে ওর সাথে জাহিদ নেই, তখনই ইচ্ছে করে বাসায় গিয়ে রুম বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে থাকতে।

রনক আকাশের দিকে তাকাল। খন্ড খন্ড মেঘ সারা আকাশের বুক জরে আছে। আকাশ কত যতœ করে মেঘ গুলোকে বুকে আগলে রেখেছে। জাহিদের কাছে গেলে কি ও আমাকে মেঘের মত আগলে রাগবে ? হয়ত বা রাখবে না হলে বৃষ্টির মত মাটিতে ফেলে দিবে। রনকের কেন যেন খুব কান্না পাচ্ছে।, মনে হচ্ছে এ কন্না ও থামাতে পারবে না। রাস্তÍ মধ্যেই কেঁদে ফেলবে। তারপরে-ও দুই হাত মুখে চাপা দিয়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করল।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×