“ বাধ ভেঙ্গে দাও ” এই বাধ কি টেলিটক থ্রিজি ভাঙ্গতে পারবে !!!!
টেলিটক থ্রিজি “ বাধ ভেঙ্গে দাও ”, এই টিভি বিজ্ঞাপনের কল্ল্যানে একটি থ্রিজি ইন্টারনেট মডেম কিনেছিলাম । যদিও আমার একটি কিউবি মডেম ছিল। কিছু দিন ভালই ইন্টারনেট ব্যবহার করছিলাম, হঠাৎ ডিসট্রাব শরু হলো । মাঝে মাঝে ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। কিছু ডাউনলোড করছি এর মধ্যেই ডিসকানেক্ট হয়ে যেত, আবার পুনরায় কানেক্ট করে কাজ করতে হতো । যাই হোক কয়েকদিন পরে চিন্তা করলাম এর চেয়ে এটাকে সার্ভিস সেন্টারে পাঠাতে হবে বা কাষ্টমার কেয়ার এর সার্পোট নিতে হবে। ইন্টারনেট থেকে ঢাকা শহরের সমস্ত কাষ্টমার কেয়ারের ঠিকানা ও টেলিফোন নাম্বার যোগার করে আমাদের ম্যানেজার সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হলো এদের সঙ্গে কথা বলে প্রবলেম সলভ করার । দায়িত্ব দেওয়া হলো রবিবার ১২ টার দিকে কিন্তু অফিসের ব্যস্ততার জন্য ঐদিন আর জিঙ্গেস করতে ভুলে গেলাম । পরের দিন অফিসে ঢুকেই ম্যানেজার সাহেবকে জিঙ্গেস করতেই বলল স্যার , কোন কাস্টমার কেয়ারে ফোনে পাওয়া যায়নি, আমাদের উত্তরা আজমপুরে একটা আছে অনেকবার ফোন করেছি কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। আমি একটু বিরক্ত হয়ে বললাম, ঠিক আছে নাম্বারটা দাও আমি ট্রাই করব । ম্যানেজার সাহেব একটা লিষ্ট দিয়ে বলল, স্যার আমি উত্তরার নাম্বারটি মার্ক করে দিয়েছি । আমি আমার রুমে গিয়ে বেশ কয়েকবার ডায়াল করে কোন রেচপঞ্চ পাওয়া গেল না । দুপুরের লাঞ্চের সময় ম্যানেজার সাহেবের সাথে দেখা হতেই বলল, স্যার যোগাযোগ করতে পেরেছেন ? আমি একটু বিরক্ত হয়ে বললাম, না । ম্যানেজার হাসতে হাসতে বলল, স্যার এটাই হচ্ছে গর্ভমেন্টের সার্ভিস। থ্রিজি আপনাকে ভোগাবে। আমি বললাম ঠিক আছে বিকেলে আমি যাব দেখি কিছু করা যায় কিনা । তুমি কাউকে পাঠিয়ে ওদের অফিস টাইম টা জেনে নাও । লাঞ্চ শেষ হতেই জানাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। ঠিক আছে তুমি যাও , আমি মডেমের কাগজপত্র সহ যখন পৌছালাম তখন প্রায় চারটা বাজে। গেটে কোন দারোয়ান দেখা মিলল না । একজন এমএলএল টাইপের লোক আমাকে একটা টুল দিল বসার জন্য (সম্ভবত ঐ লোকটার বসার টুল)। আমি টুলে না বসে জিঙ্গেস করলাম আমাকে কোন সিরিয়াল নম্বর বা টোকেন দেওয়া হবে কি না ? লোকটি অন্যদিকে তাকিয়ে বলল আপনি এখানে বসেন সময় হলে আপনাকে ডাকবে, এখানে কোন টোকেনের সিষ্টেম নাই । আমি বেশ বিরক্ত হলাম কারন রুমে প্রায় আট দশ জন লোক বসে আছে । আর আমার টুলের পাশেই বেশ সুন্দরী একজন মহিলা বসেছেন, তার পাশে টুলে বসতে বেস অসস্তি লাগছিল। দুইটি সার্ভিস কাউন্টার, তার একটাতে লোক নেই, অন্যটিতে একজন মধ্য বয়স্কা মহিলা বসে কাজ করছেন কিন্তু তার কাজের গতি দেখে মনে হলো না যে আজকে কোন বাধ ভাগতে পারবে । আমি কিছুক্ষন পরে ঐ লোকের দিকে চোখ পড়তেই জিঙ্গেস করলাম ভাই আর কতক্ষন লাগবে। সে খুবই বিরক্ত হয়ে বলল, আপনার বাম পাশে যে পাঁচজন বসে আসে তার পর আপনাকে ডাকবে । আমি পাশের মহিলার দিকে তাকিয়ে বললাম ভাই আপনার ম্যাডাম যে ভাবে কাজ করছে এতে তো আমার সিরিয়াল আসতে পরের দিন সকাল হয়ে যাবে। সে আমার কথা না শুনে আমার সামনে থেকে চলে গেল । এদিকে টুলে বসে থাকতে থাকতে আমার বাথুমের চাপটা বেড়ে গেল। ঐ লোককে কাছে ডেকে বললাম, ভাই আমার একটু বাথরুমে যেতে হবে। সে বলল নিচতলায় একটি বাথরুম আছে সেখানে চলে যান । আমি বললাম কেন এইটা একটা কাষ্টমার কেয়ার আর এখানে কোন বাথরুম নেই । আমার কথা শুনে পাশে বসা ভদ্র মহিলা শব্দ করে হেসে ফেলল।
আমার ডাক পড়তে প্রায় সারে পাঁচটা বেজে গেল । কাউন্টারের কাছে যেতেই ভদ্র মহিলা মনিটর স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আমাকে বলল- আপনার সমস্যা কি ? সিম না থ্রিজি মডেম । এত তারাতারি কথা বলতেছিলেন মনে হচ্ছে এখনই কাউন্টার বন্ধ করে বাসায় চলে যেতে পারলে উনার খুব ভাল হয়। আমি মহিলার দিকে তাকিয়ে আমার মডেমের সমস্যার কথা বললাম। বেশ কিছুক্ষন পরে বলল আপনাকে কালকে আসতে হবে আজ সারে পাচটা বেজে গেছে কাউন্টার বন্ধ ৫ টায়। আমি ডানদিকের কাউন্টারের দিকে তাকিয়ে বললাম, ঐ ডেস্কের লোক কোথায় ? সে ভ্র কুচকে আমার দিকে চেয়ে বলল ওনার আজকে ডে অফ। আমি আজকে একায় । আমি ম্যাডেমের দিকে চেয়ে বললাম-ম্যাডাম অন্য প্রসঙ্গে একটা কথা জিঙ্গেস করি । ম্যাডাম আমার দিকে কৌতুহল দৃষ্টিতে বলল, ঠিক আছে বলেন। আমি আস্তে করে বললাম আপনাদের এখানে একটা বাথরুম আছে কিন্তু আপনারা যারা মহিলা এরা ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারে না । আমি একটু বাথরুমে যেতে চাচ্ছি কিন্তু পিয়ন বলল নিচতলায় যেতে হবে । এখানে শুধু আপনারা যেতে পারবেন । ম্যাডাম বলল ঠিক আছে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন, আসলে সকলেই ঢুকলে নষ্ট করে ফেলবে।
আমি ম্যাডামের হাত থেকে মডেমটি নিয়ে বাথরুমের দিকে রওয়ানা হলাম । বাথরুম থেকে সোজা অফিসের দিকে । কেন যে ”বাধ ভেঙ্গে দাও” এ প্রেমে মডেম কিনেছিলাম। আর এই যদি হয় এদের কাষ্টমার কেয়ার! জিপি , কিউবি বা বাংলালায়ন এরাও সার্ভিস দিচ্ছে আর আমার গর্ভমেন্ট ও সার্ভিস দিচ্ছে। মনটা কেন যেন খারাপ হয়ে গেল । ড্রেনের পাশে মডেমটি রেখে আমি অফিসে চলে এলাম।
Aakash
06.07.2013