somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্যারিয়ার ধ্বংসের পিছনে ৭ টি কারণ

০৮ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এমন অনেক কিছুই যা সৎ ও পরিশ্রমী কর্মীর ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিতে পারে। এমনকি সততার সাথে ভুল স্বীকার করলেও তার কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।
অধিকাংশ মানুষই তাদের ক্যারিয়ার সূক্ষ্ম ও নাটকীয়ভাবে হতাশাবাচক দিকে নিয়ে যান। এটি সবসময়ই যে কোন কর্মীর জন্যই লজ্জাজনক।
ভাইটাল স্মার্ট-এর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে ৮৩ শতাংশ মানুষ এমন মারাত্মক ভুল করে থাকেন যা তাদের ক্যারিয়ার, খ্যাতি কিংবা ব্যবসা আকস্মিক বিপত্তির দিকে নিয়ে যায়। শতকরা ৬৯ জন মানুষ তাদের ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য নিজেদেরকেই দায়ী করেন; ৩১ শতাংশ মনে করেন পদোন্নতির জন্যই তাদের এই দশা, ২৭ শতাংশ মনে করেন এর কারণে তাদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে এবং ১১ শতাংশ মনে করেন এটি তাদের খ্যাতি ধ্বংস করেছ।
১. কূটনৈতিক চাল: কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি অনেকেই কূটনীতির পরিচর্যা করেন অফিসে। যার ফলে দ্বিধা-দ্বন্ধ সৃষ্টি হয়। সহকর্মীদের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ ও গ্রুপিং তৈরি হয়। দৃশ্যপটে আড়ালের এই খেলায় প্রত্যেকেই একে অপরকে নীতিবাচকভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত সততার সাথে নিজেদের কৌশল সম্পর্কে সহকর্মীদের সাথে সম্মুখে আলাপ করা।
২. মাত্রারিক্ত প্রতিশ্রুতি ও তুলনামূলক কম পূরণ: নিজের সহকর্মী কিংবা গ্রাহকদেরকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে সততার সাথে সেটি নিয়ে চিন্তা করা উচিত। আপনি যখন বুঝতে পারছেন সম্ভব নয় তবে অঙ্গীকার করা থেকে বিরত থাকুন। নিজের কর্মতৎপরতা হয়তোবা আপনি বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি কতোটুকু পূরণ করতে পারছেন সেটিও ভাববার বিষয়। বারবার কাজের সময়সীমা ভঙ্গ আপনার ক্যারিয়ারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যে লক্ষ্যে আপনি কোনদিনও পৌছতে পারবেন নাহ, সেটি নিয়ে সকলের সামনে জ্বী হুজুর করলেই আপনার পদোন্নতি হবে না। কারণ বাস্তব ও ন্যায়সঙ্গত প্রত্যাশা আপনার ক্যারিয়ারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
৩. আত্মতৃপ্তি: নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, সর্বশেষ আপনি নতুন কোন দক্ষতা অর্জন করেছেন? আপনি নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে নতুন কার সান্নিধ্যে আসতে পেরেছেন? আপনি শেষ কবে নিজের জীবন বৃত্তান্ত হালনাগাদ করেছেন? যদি কোনটির উত্তরই সাম্প্রতিক না হয় তবে আপনি নির্ঘাত আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন। গত কয়েক বছরে তথ্য ও প্রযুক্তিতে ব্যাপক নতুনত্বের সমাবেশ ঘটেছে। আপনাকে প্রতিনিয়ত এগুলো সাথে নিজেকে হালনাগাদ করে রাখতে হবে। নতুন কিছু শিখার পাশাপাশি আপনার নেটওয়ার্কের মানুষ আরো বাড়াতে হবে। নিজের ক্যারিয়ার উন্নয়ন করতে হলে প্রশিক্ষণ ও নেটওয়ার্কিং করতে হবে অবিরতভাবে নিজের সময় বাচিঁয়ে।
৪. পরিবর্তনের ভয়: আত্মতৃপ্তিতে ভোগা মানুষজনই এই ভয়টি পায়। যখন প্রথমবার কোন কাজ আপনি করেছেন সেটি আপনার জন্য নতুন ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এটিতেই আপনি দক্ষ হয়ে উঠেন। এরপর এই কাজের পদ্ধতিতে পরিবর্তন দেখলেই আপনার কপালে ভাজ দেখা দেয়। কেননা দীর্ঘদিন আপনি একই পদ্ধতিতে কাজ করেছেন। সময়ের একটু বিনিয়োগই হয়তোবা আপনাকে আরো দক্ষ করে তুলবে। শতকরা ৯১ শতাংশ কর্মী মানোন্নয়ন কর্মে লিপ্ত মানুষজন বলছেন যে সফল কর্মী তারাই যারা নিজেদের খুব দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে।আমাদের ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনে পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। মান্ধাতার আমলের ধ্যান ধারণা বর্জন করে আমাদেরকে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে শিখতে হবে।
৫. মাত্রাতিরিক্ত অহমিকা: আপনি কাজ শেষে সফলতা ও ব্যর্থতা দুটোই পেতে পারেন। কিন্তু সফলতার অহমিকা আপনাকে তারকা কর্মী হিসেবে পরিচিত করবে মোটেও সেটি ভাববেন না। নিজের ক্যারিয়ার উন্নয়নে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তোলাটা সমীচিন। তবে সফলতা চিরন্তন নাও আসতে পারে। মুদ্রার ওপিঠ আপনি কাল বা পরশু দেখতে পারেন। কিন্তু সুসময়ে আপনার চিন্তা ভাবনা কিংবা ভাব-ভঙ্গি অনেকটাই আপনার আসল চেহারা উন্মোচন করে। সুতরাং ব্যর্থতার কথা চিন্তা করে হলেও অহমিকা করা উচিত নয়।
৬. নিম্ন স্তরের মানুসিক বুদ্ধিমত্তা: কে জানে হয়তেবা আপনার কাজের প্রতি অনীহা আপনার চাকরি হারানোর কারণ। প্রত্যেক কর্মীই যদি আপনাকে বিরক্তিকর ভাবে, আপনি তাদের কর্মস্পৃহা কমিয়ে দেন তবে এজন্য আপনার বোকামিই দায়ী। কেননা আপনি নিজের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করে সবার সাথে মানিয়ে চলতে পারছেন না। আবেগী কথাবার্তা, সহকর্মীদের কথাবর্তায় অমনোগিতা মূলত আপনার নিজের ক্যারিয়ারের জন্যই হুমকিস্বরূপ।
৭. বসের সাথে লেগে থাকা: কিছু মানুষের ধারণা এই রকম যে সবসময় বসের সাথে লেগে থাকলেই পদোন্নতি পাওয়া যায়। কিন্তু আপনার বস আপনাকে মূল্যায়ন করবে প্রতিষ্ঠানের প্রতি আপনার অবদানকে বিবেচনা করে। সার্বক্ষণিক বসের সাথে থাকাটা আপনার সহকর্মীরা মোটেও ভাল চোখে দেখবেন না এটিই স্বাভাবিক। সুতরাং মেধা দিয়ে চেষ্টা করলে আপনি নিজের আয়নাতে ভাল কিছুর প্রতিফলন দেখতে পারবেন। মেধা ও পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। চাটুকারিতা সবসময় ভাল ফল দিবে নাহ। বিশেষত: ভবিষ্যতেতো নয়ই।
সবোর্পরি আমার যেটি দেখতি পাচ্ছি তা হলো অনেক বিচ্যুতিই আছে যা আপনার ক্যারিয়ার নস্যাৎ করতে সক্ষম। কিন্তু বাস্তবাতা এতোটাও নাটকীয় নয়। হয়তোবা একটি ভুল পদক্ষেপই যথেষ্ট হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:২৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×