অনেক্ষন ফেইসবুকে জেমিকে না দেখে অনিন্দ্য অস্থির হয়ে পড়ল।
এমনতো কখনো হয়নি। হঠাৎ আজ এমন হচ্ছে কেনও। নাম্বারটাও নেওয়া হইনি যে কল করে জিজ্ঞেস করবে।
কিছুদিন আগেও কেউ কাউকে চিনতো না। অথচ এখন একজন আরেকজনকে ছাড়া কিচ্ছু বোঝেনা।
তারা বাস্তবে কখনো দেখেনি, কিন্তু ফাইসবুকে টুকটাক ছবি দেখা ততটুকুই।
অনিন্দ্যেরে মনে পড়ে যায়, প্রথম কথা বলার কথা!
মেয়েরা যে কোন ছেলেকে নিজ থেকে নক করে তাই বিশ্বাস হচ্ছিল না।
কেনও জানি অদ্ভুত এক ভালোলাগা কাজ করত অনিন্দ্যের জেমির জন্য।
মেয়েটা কেমন জানি, একেবারে অন্য রকম। আজকালের অন্য সব মেয়েদের মত না।
একটু সরল, কোনো লুকোচুরি নেই, এক মনে সব বলে ফেলে। অন্য মেয়েদের মত বয়ফ্রেন্ড নিয়ে এক গাদা আকাশ কুসুম কোন ভাবনাও নেই।
এমন মানুষ গুলো আর যাই হোক খারাপ হতে পারেনা বলে অনিন্দ্য মনে করে। এমন মানুষরা মনের মধ্যে জটিলতা বাসা বাঁধতে দেয়না। ্তাই তাদের মন সূর্যের আলোর মতই উজ্জ্বল আর সদ্য জন্মানো শিশুর মতই নিষ্পাপ।
কালো ফ্রেমের চশমা পরে জেমি, অনিন্দ্যেরে আবার অনেক আগে থেকেই কালো ফ্রেমের ওপর একটা ঝোক আছে।
তাদের পছন্দ-অপছন্দ সবই এক। তাদের মাঝে দারুণ মিল।
কিছুদিন আগে জেমি নানুর বাড়িতে বেড়াতে গেছে, অনেক মজাও করেছে।
৮ বছর পর গেছে। মজা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
নানুর বাড়িতে কেমন মজা করলে? অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে।
অনেক অনেক মজা করেছি, জেমি জবাব দেয়।
ছবি তোলো নি?
নাহ, তুলতে মনে নেই।
মন খারাপ হয়ে যায় অনিন্দ্যের।
কেনও হঠাৎ?
নাহ এমনেই।
অনিন্দ্য ভেবেছিলো তার কাছে নানুর বাড়ীর ছবি দেখতে চাইবে।
তাতে করে জেমিকেও দেখা হয়ে যাবে।
অদেখার প্রতি মানুষের আজন্ম একটা আগ্রহ থাকে। অনিন্দ্য ও তার ব্যতিক্রম নয়।
অনিন্দ্য বলেই ফেলে " তোমাকে অনেক দেখতে ইচ্ছে করে"
কেনও?
এমনি। ইচ্ছে করাটাই কি স্বাভাবিক না?
তোমার চশমা পরা একটা ছবি দেবে?
নাহ , দেবো না। জেমি উত্তর দেয়।
অনিন্দ্য কিছু বলেনা।
অনিন্দ্য অন্য কথায় আবার তার সাথে মেতে ওঠে।
ছবি পেয়েছ? জেমি জিজ্ঞেস করে।
অনিন্দ্য তাড়া হুড়ো করে ইনবক্স চেক করে।
জেমির চোখ জুড়ে এক অন্যরকম রহস্য ছিল, আর চুল গুলো ছিলো একেবারে অনিন্দ্য যেমন পছন্দ করে, ঠিক সে রকম।
আচ্ছা তোমার হাসিটা কোথায়? কোথায় হারিয়ে ফেলেছ? আমি ত অনেক্ষন খুঁজেও কথাও পেলাম না।অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে।
আরে কোথায়! আমি হেসেছি তো!
কোথায়! আমি তো দেখতে পেলাম না!
আসলে আমি অনেক কুলতো জেমি উত্তর দেয়।
আমিও বরফের মত ঠাণ্ডা অনিন্দ্য বলে।
অনিন্দ্য ভাবে এক টুকরো হাসিমেয়েটাকে অনন্য করে তুলতো।
প্রায় রাত ১টা বাজতে চলল। জেমি আজ আর এলো না। আজ আর আসবেও না অনিন্দ্য জানে।
তারপরও সে অপেক্ষা করে।
হয়তো সেই অপেক্ষার মানে নেই।
প্রিয় মানুষ গুলোর অপেক্ষা করতে এক অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করে।
নাইবা থাকলো সেই মানুষ গুলোর সাথে নাম না দেওয়া সম্পর্ক।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫