somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: একদল দুষ্ট ছেলে (২য় পর্ব)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শুভদের বাড়িটা অনেক পুরোনো। তার দাদার বাবা এ বাড়ি বানিয়েছে। তাদের বংশের সবাই এ বাড়িতেই থাকে। শিহাবের বাড়ির ঘরটা শুরুতেই। ঘরের সামনে বড় উঠোন। উঠোনের এক পাশে একটা বড় পেয়ারা গাছ। এটা লাল পেয়ারার গাছ। উঠোনে রোদ পড়ার জন্য গাছ লাগানো হয় না। লাল পেয়ারা শুভর দাদির অনেক পছন্দের। তাই শুভর দাদা এটা লাগিয়েছে। বাবার হাতে লাগানো তাই এটা কাঁটা হয় নি।
সাজু কি আগের মতোই জ্বালায় জিজ্ঞাস করলো শুভ।
আগের চাইতে বাড়ছে। সবসময় আমাগো পিছনে লাইগ্যা থাহে। ওর জ¦ালায় শান্তিতে কিছু করতেও পারি না। বলল আলামিন।
ভাল ডলা দিতে হবে, না হলে শোধ হবে না।
শিহাব বলল, সেটা নিয়ে পরে ভাবা যাবে।


ঘরের টুকটাক কাজ করছিলেন শিহাবের মা সুরাইয়া বেগম। তাদের কথা শুনে এগিয়ে এলেন তিনি।
আসসালামু ওয়া লাইকুম। চাচি কেমন আছেন।
ওয়ালাইকুম সালাম। আল্লা ভাল রাখছে। তুমি কেমন আছো?
জ্বি চাচি। আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।
তোমার আব্বা আম্মা কেমন আছে?
জ্বি, ভাল আছে।
আল্লা সবাইরে ভাল রাখুক। যাও ভাল কইরা হাত মুখ ধুইয়া বিশ্রাম নেও। কত দুর থেইক্যা আসছো।
বড় চাচি শুভকে একটু বেশিই আদর করে। বড় চাচির জন্য শুভকে বাড়ি পাঠানো হয়। বন্ধ হলেই শুভর বাবাকে বলে শুভকে রেখে যাওয়ার জন্য। বড় চাচিকে এ পরিবারের সম্মান করে। খুব ছোট্টবেলায় এ বাড়ির বউ হয়ে এসেছিলেন তিনি। বড় চাচার বয়স ১৬ বা ১৭ বড়জোর ১৮ তখন শুভর দাদা খুববেশি অসুস্থ হন। সবাই মনে করেছিল তিনি মারা যাবে। তাই তড়িঘড়ি করে বড় চাচার বিয়ে দেয়। অবশ্য তার পরেও বেশ কয়েক বছর তিনি বেঁচে ছিলেন। এ ঘরে আসার পর থেকে পুরো সংসার একাই সামলেছেন।
শুভ ফ্রেস হয়ে আধ শোয়া হয়ে আছে। চোখ বন্ধ। চুলের পানি কপালে পড়ছে। ভ্রু জোড়া কুচকে আছে।
শুভ ঘুমিয়ে গেছিস? বলল শিহাব।
না ঘুমাই নি।
শাওন বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
শুভ সেন্ডেল পড়ে বেরুলো।


শুভর বাড়ির সামনে সান বাধানো পুকুর। পাতা, শেওলা, নষ্ট হয়ে যাওয়া খেলনা পুকুরের এক কোনে আশ্রয় নিয়েছে। বাকি জায়গার পানি টলটলে। বাড়ির পুরুষরা এখানেই গোছল করে। সিঁড়ি থেকে পুকুরে লাফ দেয় ছোট্ট ছেলেরা। দল বেধে লাফিয়ে পুকুরে নামে সবাই। হৈ-হুল্লা করে। বিভিন্ন খেলায় মেতে ওঠে। ডুবিয়ে চোখ লাল করে বাড়ি ফেরে। বাড়িতে বকা খাওয়া থেকে বাঁচতে নানা ফন্দি আঁটে।
শাওন পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যাঙ তুলছে পানিতে। চাড়াঁ, টাইলস বা ইট ভাঙ্গা পানিতে তেছড়া ঢিল ছুড়তে হয়। চাঁড়া লাফাতে লাফাতে যায়। কারোটা দুইবার, কারোটা তিনবার, চারবার, পাঁচবারও হয় কারোওটা। এর উপরে তোলা মুশকিল। শক্তি এবং ঢিল ছোড়ার কৌশল অনুপাতে চাঁড়া লাফ দেয়। ব্যাঙের মতো লাফিয়ে যায় দেখে এটাকে ওরা ব্যাঙ তোলা বলে।
শিহাব, শুভ পুকুরের সিঁড়িতে বসেছে। শেষ চাড়াটা ছুঁড়ে শুভর সাথে বসল শাওন।
ক্যামন আছো?
ভাল, তুমি?
ভালই। আগে তুমি এখান থেইক্কা ফাল দিতে পারতা না, মনে আছে।
হু মনে আছে। এখন তোমার থেকেও বেশি যেতে পারব।
কক্ষনও না।
আগের বার যখন এসেছিলাম তখন গিয়েছিলাম যে মনে নেই।
আমার মনে আছে ঠিকই তোমার মনে নাই। এই বার আমার থেইক্কা বেশি দূরে যাইতে পারলে তোমার কথাই ঠিক।
কথা শেষ না হতেই লাফ দিলো শুভ। শুভর দেখা দেখি শাওনও লাফ দিল। শিহাব মুচকি হাসছে ওদের কা- কারখানা দেখে।
ভেজা গায়ে শুভ উঠতে উঠতে বলল, দেখছো তোমার চেয়ে বেশি দূরে গেছি।
আগের চাইতে বেশি গেছ। তয় আমার চাইতে বেশি যাইতে পার নাই। শিহাব তুমিই কও কে বেশি গেছে?
শুভ তুমি দূরে গেছো, কিন্তু শাওন তোমার থেকেও বেশি দূরে গেছে।
ও, গলার স্বর কিছুটা নামিয়ে বলল শুভ।
শিহাব শুভর ঘাড়ে হাত দিয়ে বলল, শাওন গ্রামে থাকে। তাই বেশি দূরে গিয়েছে। চলো ঘরে যাই কাপড় বদলাতে হবে।

চলবে...

প্রথম পর্বের লিঙ্ক: https://bit.ly/2V9mcvW
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৩২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×