রাজনীতি নিয়ে মাথা ব্যথা করার ব্যাপারে আগ্রহ আমার সব সময়ই কম। বিশেষত আমার দেশের রাজনীতির হাল থেকে চরমভাবে হতাশ হতে হয়। ছোট বেলা থেকেই আব্বু পত্রিকা পড়তে দিতেন, আমার খুব ভালোভাবেই মনে আছে, আমার ভেতর একটা অনুভূতি কাজ করতো... দেশের রাজনীতিটা স্বার্থের পেছনেই ঘূর্ণয়মান। সত্যি কিনা জানিনা। ছোট্ট এ মনে তা-ই বুঝেছিলাম, আজও সে ধারণা পরিবর্তনের কোন লক্ষণ দেখছিনা। খুব অবাক হয়েই লক্ষ করি, দেশ আর দশের জন্য কল্যাণকর কোন কাজে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়াতে উদারতার পরিচয় দিতে পারিনা। কিংবা মাঝে মাঝে রাজনীতির এ ঐতিহ্য যদি দৈবাত ভঙ্গ-ও হয়, তার পেছনে স্বার্থ নামক একটি ভাইরাস কাজ করে কেন জানিনা। এ দুর্বলতা কিন্তু পলিটিক্সের সাথে জড়িত সবারই।
এই ধরুন, ভারত-বাংলাদেশ নিয়ে ইদানিং যে সমস্যাটা আমাদের চলে যাচ্ছে। আমি খুব আশ্চর্য হই, ভারত তার স্বার্থের ব্যাপারে বরাবরই সচেতন এবং এক কড়ি-ও ছাড় দিতে সে নারাজ। বলতে গেলে তার অবস্থানে একদম অনঢ়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আসবেন। ভালো কথা। তাঁকে শুভেচ্ছা, স্বাগতম জানাই। কিন্তু তাঁর আগমনে আমার দেশের অবস্থান কী ?
কূটনৈতিক দিক দিয়ে আমাদের দুর্বল অবস্থান তো সবারই জানা। কিন্তু তাই বলে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে বন্ধুত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করিনা এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে সবারই এটার বিরোধিতা করা পবিত্র দায়িত্ব।
বলছিলাম যে কথা, মনমোহন সিং বাংলাদেশে আসবেন, এমন সম্ভাবনা পেয়েই কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক মাঠ এখন সচেতন। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ যে চুক্তির কথা ভাবছে, ভারত কিন্তু ঠিকই অনুধাবন করতে পেরেছে। হয়তো এখানে বাংলাদেশের স্বার্থ-ই প্রাধান্য পাবে বলে মনে হয়েছে তাদের, সে জন্য প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সহ সবার কণ্ঠে এখন ভারতের উত্তরাঞ্চলের মানুষ বাঁচার দোহাই। আশংকা হচ্ছে মনমোহন সিংকে তারা আবার বাধ্য করে ফেলে তিস্তার এক বিন্দু পানিও যাতে বাংলাদেশ না পায় !
এবার আসি বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে। শিব শংকর এলেন, হাসিমুখে আতিথেয়তা গ্রহণ করলেন। সব ঠিকঠাক করলেন। কিন্তু বাংলাদেশ কী করলো ? বাংলাদেশ তাঁর ন্যায্য প্রাপ্যের ব্যাপারে কি এখনও জেগে আছে? আমি তো ভরসা পাইনা।
প্রিয় পাঠক! লেখার শুরুতে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে অগোছালো দু'কলমের উদ্দেশ্য নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন, রাজনীতির দিক দিয়ে আমরা কতই না পিছিয়ে! কূটনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা কত-ই না দুর্বল? কিন্তু.... হাল ছেড়ে দিলে কি চলবে ?
এখন আমার মনে হচ্ছে একটি বৃহত রাজনৈতিক ঐক্যের আজ বড়ই প্রয়োজন। দেখুন, প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ ধু ধু বালুচর..... মরুভূমি হবার পথে আমার দেশের বিশাল একটি অংশ। তিস্তার পানি নিয়েও ভারতের গড়িমসি দেখে মনে হচ্ছে এ ক্ষেত্রেও আমাদের বঞ্চিত হতে হবে নিদারুণভাবে। কিন্তু এভাবে তো আর ছেড়ে দেওয়া যায়না।
দেশপ্রেমিকদের এখন জাগার সময়। আর বলে রাখি... প্রতিবেশী দেশ ভারত কিংবা রাজনীতিকে হেয় করা আমার উদ্দেশ্য নই। একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের বাস্তব অবস্থা-ই তুলে ধরতে চেষ্টা করছি। আমাদের দুর্বলতা আমরাই বলবো, আর সে দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠার দায়িত্ব-ও কিন্তু আমাদের! দেশের জাতীয় স্বার্থে আসুন সবাই নিজ নিজ অবস্থানে সচেতন হই........
দোয়া করছি আল্লাহ যেন আমাদের রাজনীতিকে দেশ আর দশের জন্য নিবেদিত হওয়ার সুযোগ করে দেন। প্রিয় ব্লগার, আপনার সুচিন্তিত মতামতটি অবশ্যই জানিয়ে যাবেন.....আজকের প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয়........

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




