somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গা বলে নয়, মুসলিম বলে নয়, রিফিউজি বলে নয়, মানুষ নাকি মানুষের জন্য, সাগরে ভাসমান প্রাণী গুলো মানুষ কিনা? আমরা তাদের সাহায্য করতে পারি কিনা?

২০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ তো মানুষের জন্য। প্রবাদটি অনেকদিন আগে থেকেই শুনে আসছি। পত্র-পত্রিকায়, টেলিভিশনের পর্দায় মানুষ মানুষের জন্য বলে যে কত হাজারো বিজ্ঞাপনে হাজারো মানুষের প্রাণ বাঁচছে তার কোন ইয়াত্তা নেই। তাদের কেউ হয়তোবা রোগে, কেউবা বস্তুহারা আরো অনেক কারনেই এসব সাহায্যের জন্য হাত পাততে বাধ্য হতে হয়েছে অসহায় মানুষগুলোকে। এসবের মূল কারন ছিল দারিদ্রতা। মানুষের অসহায়ত্বের শেষ নেই। অনেকেই অনেক কারণে অসহায় হতে পারে। কিন্তু জন্ম যাদের আজন্ম পাপ তাদের কি দোষ। একই পৃথিবীতে আমি আপনি জন্ম গ্রহণ করেছি। সৃষ্টিকর্তা কারো জন্য কোন দেশ ফিক্সট করে দেন নাই। কোন পাসপোর্ট ভিসার ব্যবস্থা করে দেন নাই। তবে আজ মনুষ্যসৃষ্ট পাসপোর্ট ভিসার কল্যাণে রোহিঙ্গা নামের একটি অসহায় জাতি আজ বিপন্ন। আপনি যদি একটাও রোহিঙ্গার কথা নিজের সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন তবে আপনি বুঝতে পারবেন যে একটা রোহিঙ্গা দিনের পর দিন কতটা অসহায় আর নিরুপায় হয়ে সাগরে ভাসছে। যাদের চোখে আশার আলোকচ্ছটার বিন্দুমাত্র নেই। আশা করাও যেন তাদের মহাপাপ।


যখন তারা মিয়ানমার হতে বউ বাচ্চা সহ একটা নৌকাকে জীবন সম্বল করে সাগরের অথৈই জলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে তখন হয়তো তাদের একটাই আশা থাকে কয়েকটা দিন সাগরের পানিতে ভেসে থেকে অজানা কোন দেশে পাড়ি দিয়ে কোনমতে বেঁচে থাকা। কিন্তু হায় সৃষ্টিকর্তা তাদের সৃষ্টি করেছে কিন্তু থাকার জন্য একখন্ড জায়গা বরাদ্দ করে নাই। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ছেলে মেয়ের। যেখানে সে তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে একটু মাথা গোজে।
নৌকায় ভাসা রোহিঙ্গারা একটু খাবারের আশায় চেয়ে থাকে আকাশের দিকে। তাদের কারো মুখে খাবার নেই। নেই বিশুদ্ধ পানি। নৌকা ছাড়ার সময় যেটুকু খাবার ছিল তা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। অভুক্ত মা তার ছেলের দিকে চেয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে। আর তাকায় সাগরের অথৈই পানি দিকে। পরিবারের কর্তা নিরুপায় সাগরের পানিতে ভাসতে থাকে।
তারা রোহিঙ্গা, তারা কোন দেশের কোন বৈধ নাগরিক নন, সৃষ্টিকর্তা তাদের জন্য কোন দেশ নির্ধারিত করে দেন নি! যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে থাকবে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে থাকবে বা রোহিঙ্গারা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে থাকবে। তাই তারা কখনও কোন সাংবাদিক বা কোন এনজিও সংস্থার কাছ হতে ত্রাণ ও আশা করতে পারে না। করবেই বা কেন? এটা তো নেপালের ভূমিকম্প নয়! যে অন্যান্য দেশ ত্রাণ দেবার জন্য হুরোহুরি লেগে যাবে। আর মিডিয়া সেগুলো নিয়ে বড় বড় অক্ষরে নিউজ করবে। নেপালের প্রাণীগুলো মানুষ ছিল। আর সাগরে ভাসমান প্রাণীগুলো যে কি সেটা আমার জানা নেই।
আপনাকে বলছি-
খাবারের কষ্ট কখনো অনুধাবন করেছেন কি? একটা নৌকায় আপনার পরিবার পরিজন নিয়ে সাগরে ভাসছেন। ৫ কেজি চিড়ে আর ১ কেজি গুড় খাবার হিসেবে আপনার আছে। আপনার স্ত্রী আর আপনি ১ মুঠো চিড়ে খাচ্ছেন দিন একবেলা। আর সন্তানগুলো সেই চিড়েই খাচ্ছে। ৪/৫ দিনের শেষে কোন চিড়ে বা গুড় নেই নেই খাবার পানি। ১ম দিন অভুক্তটা বুঝলেও সন্তানদের কোনমতে বুঝিয়ে চালিয়ে দিলেন। কিন্তু ২য় দিন না খাওয়া, ৩য় দিন না খাওয়া। চেয়ে আছেন কোন ত্রান সংস্থার দিকে। অথবা কোন দেশ কবে আপনাকে স্বীকৃতি দেয় সেই ভাবনায়। অথচ সেই ত্রাণ সংস্থারও অবস্থা নেই কারন তারা আপনাকে মানুষ হিসেবে মনেই করছে না। মানবিক দৃষ্টি শক্তি হ্রাস পেয়েছে শুধু আপনার বেলাতেই।
সামহোয়ারইন ব্লগ বলতে যে কিছু একটা আছে সেটা আপনি জানেনই না। এটি কোন ত্রান সংস্থা বা কোন দেশের আর্থিক সাহায্যের কোন টিম নয়। আপনি এক টুকরো রুটির জন্য যাদের কাছে আশা করছিলেন তাদের বদলে সেই রুটি নিয়ে হাজির হয়েছে সেই অজানা সামহোয়ার ইন ব্লগ নামের অজানা একটি গ্রুপের কিছু সদস্য। অন্তত আজকের বিকেলটায় একটি রুটি স্ত্রী-সন্তানদের হাতে দিয়ে বলতে পারবেন এই নাও খাও।
রোহিঙ্গা বা মুসলিম নয় একজন মানুষের প্রতি একজন মানুষ হয়ে সামহোয়াইর ইন ব্লগের প্রতি এতটুকু আস্থা কি আমি আশা করে পারি না? সামু’র সাফল্য গাঁথা অনেক কথাই তো পড়েছি আগে। আমি বিশেষ করে রানা প্লাজার অনুদানের বিষয়টার কথা বলছি। ২০১৫ সালের বিশ্বে আমাদের চোখের সামনে মানুষ না খেয়ে মারা যাবে একজন মুক্তচিন্তার মানুষ হয়ে এটা ভাবতে বড় কষ্ট হচ্ছে।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×