আমি এখনো নিশ্চিত না, বাংলাদেশে সবখানে সামু ব্লগ ওয়েব সাইট খোলা যায় কিনা; কয়েক বছর আগে থেকে কি না কি বুজরুকির কারণে খোলা যেতো না। পর্নসাইটগুলি বন্ধের সময় নাকি বন্ধ করে দিয়েছিল কয়েকটা আইএসপিতে। আজকের পরে আবারও বন্ধ করে দিতে পারে। ইউটিউব, ফেসবুক, আলজাজিরাও ব্লক করে দিতে পারে। এত চাঞ্চল্যকর আর দেখার মত একটা ভিডিও, যার ভিউ কিনা এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০ হাজারের মত; ২০ কোটি বাংলাদেশীর মধ্যে অন্তত ১০ কোটি ভিউ তো হওয়ার কথা! ৩০ হাজার ভিউর সাথে সাথেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরকারি বিবৃতিই প্রমাণ করে- "ডাল মেয় কুচ কালা হ্যায়"; যাহা রটে তা কিছুটার চেয়েও বেশি বটেইই!!
ফেসবুকে সবার মোটামুটি একই রকম মন্তব্য; পুরো ডকুমেন্টারি দেখে সবাই থ্রিলার মুভির মত শিহরিত হচ্ছেন। অথচ আমি বুঝলাম না, কেন সবাই আশ্চর্য হচ্ছে। কেন জানি মনে হচ্ছে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ "গান্ধীজি কা তিন বান্দর"; চোখ-কান-মুখ থেকেও ব্যবহার করে না।
প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের টপ-টু-বটম সবাই এইরকম জীবনযাপনই করতে চায়; কিন্তু সবার সাধ্যে কুলোয় না। আগার বা গোড়ারটা না খেলেও, বাঙ্গালী ঠিকই তলানীরটা খাওয়ার জন্য সারাজীবনভর তোষামোদ করে যায়, মোসাহেবী করে যায়, চুপ মেরে থাকে।
দুর্নীতি বা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান- সবই লোকদেখানো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সবই যতটা না প্রাসঙ্গিক ও মৌলিক, তার চেয়েও বেশি "আইওয়াশ" ও এজেন্ডাভিত্তিক।
যেকোন ডিলে পার্সেন্টেজ নেওয়া, নিজের কাছের মানুষকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, একটা ফেভার নেওয়ার বদলে অন্য ফেভার করা, নিজের পাওয়ারফুল ও আইন-অস্পৃশ্য আত্মীয়/পরিচিতদের নিয়ে বাহাদুরি করা, তাদের আনন্দ-উৎসবে শামিল হয়ে গর্বিত করা, ফরেনট্রিপ-দামীসিগার-সেকেন্ডহোম-ইলেকশন-রাজকীয়বিয়ে ---- সবই তো ১৮ কোটি বাঙালীর লালিত স্বপ্ন!
মিথ্যে হোক, রাজনৈতিক বিরোধিতাপ্রসূত হোক, লবিইস্ট নিয়োগ করে বানানো হোক, আমাদের চারপাশে, আজন্ম ঘটে যাওয়া, এই থ্রিলার ডকুমেন্টারির কাহিনীর মত ছোট-বড় ঘটনাগুলি, এটাই প্রমাণ করে, মানুষ হিসেবে আমরা বাংলাদেশীরা কতটা মেরুদণ্ডহীন আর নিকৃষ্ট হতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:০৯