somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সরল হিসাবনিকাশঃ জনসংখ্যার ঘনত্ব ও জাতীয় সমস্যাবলীর উৎস

১৮ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এহসান কবির নামক একজনের একটি লেখা শেয়ার করবো। এরপর আমার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবো।
---------------------------------------------
গ্রুপে একটা পোস্ট এসেছিলো জনসংখ্যা কমে যাবার বিষয়ে ।সেখানে অনেকে বলেছেন জনসংখ্যা কোন সমস্যা না।জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করলেই তো হয়। তো আজকে সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
পৃথিবীতে যেই দেশে জনসংখ্যা বৃদ্বির হার যত কম সেই দেশ তত উন্নত।আর এইসব উন্নত দেশগুলোর দূর্নীতিও পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে কম।১৯৫৫ সালের পর থেকে গত ৬৫ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, এই ৬৫ বছরে উন্নত দেশগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র সোয়া গুণ থেকে দেড় গুণ।
অথচ এই ৬৫ বছরে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ গুণ। আর এই ৬৫ বছরে আফ্রিকার গরীব দেশগুলোর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে সাড়ে ৬ থেকে ৭ গুণ।
এই পরিসংখ্যন থেকে বোঝা যায় কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য কম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উদাহরণ স্বরূপ জাপানের কথাই ধরা যাক।জাপান বর্তমানে পৃথিবীর তৃতীয় ধনী দেশ। ১৯৫৫ সালে জাপানের জনসংখ্যা ছিলো ৮ কোটি ৯০ লাখ।৬৫ বছর পর ২০২০ সালে জাপানের জনসংখ্যা দাড়িয়েছে ১২ কোটি ৬৪ লক্ষ।৬৫ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১.৪২ গুণ।সবাই কম সন্তান নিয়েছে।ফলে পিতামাতা তাদের আয়ের সবটাই কম সন্তানের পেছনে খরচ করেছে।তাদেরকে ভালোমতো উচ্চশিক্ষা দিতে পেরেছে।ফলে এইসব উচ্চশিক্ষিত জনগণের উপর ভর করে জাপান science,technology তে ব্যাপক উন্নতি করে পৃথিবীর সেরা ধনীদেশগুলোর কাতারে দাড়িয়েছে।
তারা যদি আমাদের দেশের মতো ৬৫ বছরে জনসংখ্যা ৪ গুণ বৃদ্ধি করতো তাহলে আজ তাদের জনসংখ্যা দাড়াতো ৩৬ কোটি।জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশী থাকলে এবং পরিবারে সদস্যসংখ্যা বেশী থাকলে অধিক সন্তানের পেছনে মাথাপিছু কম করে খরচ করতে হতো।ফলে তারা কখনোই তাদের জনসংখ্যাকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে পারতো না। এর ফলে তারা আজ নিম্ন আয়ের দেশের কাতারে থাকতো।
অপরদিকে আফ্রিকার গরীব দেশ গুলো এই ৬৫ বছরে জনসংখ্যা ৬ থেকে ৭ গুণ বাড়িয়েছে।যেসব দেশে গত ৬৫ বছরে জনসংখ্যা ৬-৭ গুণ বেড়েছে তারা আজ পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশ।
পরিংখ্যন কথা বলে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গ ত ৬৫ বছরের জনসংখ্যা কত গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে তা তুলে ধরা হলো।


---------------------------------------------
আজ অনেক বছর যাবত আমি এই বিষয়ে ভেবে আসছি, লিখে আসছি, বলে আসছি। যথারীতি আমাদের দেশের সব মানুষের মত আমার আশেপাশের মানুষও #overpopulation এর ব্যাপারগুলো উড়িয়ে দেয়, বিশ্বাস করে না, আমল করতে চায় না, উদাসীন/নির্বিকার থাকে, এবং নিয়তি/প্রকৃতি/স্রষ্টার উপর ছেড়ে দিতে চায়।

সহজ ভাষায় সংক্ষেপে লিখছি- এমনকি আমার অতিশিক্ষিত ও খুব ঘনিষ্ঠ প্রিয় বন্ধু/মানুষরাও বিশ্বাস করে ও মনে করে- পশ্চিমা/অমুসলিম বিশ্বরা সবসময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে আছে- কিভাবে প্রাচ্য/মুসলিম দেশগুলোর জনসংখ্যা কমানো যায়!! এর চেয়ে ডিসগাস্টিং, হাস্যকর ও অযৌক্তিক ধারণা যে আর হতে পারে না, সেটা আমি ওদেরকে বুঝাতে পারি না, বুঝাতেও যাই না, আমার নিজের আখের নিজেকেই গুটাতে হচ্ছে। নিজেদের ভালো নিজেরাই না বুঝলে, আমার একার কি করার আছে?

বাংলাদেশের মত কম আয়তনের, অধিক জনসংখ্যার দেশের সব সমস্যার মূলে একটাই- জনসংখ্যার অধিক ঘনত্ব! প্রাকৃতিক দূর্যোগ, উপনিবেশ, দাতাদেশগুলোর কূট-নীতি, এই তিনটা বহিরাগত/নিয়ন্ত্রণহীন কারণগুলোকে প্রায়সময় হাইলাইট করে থাকে আমাদের আশেপাশের মানুষেরা। কিন্তু আমাদের সব সমস্যার সাথে এই তিনটা দূরবর্তী কোন সম্পর্ক নাই। বাংলাদেশের সমান বা কম আয়তনের দেশ, বাংলাদেশের মতই আগে অন্য দেশের কলোনি ছিল, বাংলাদেশের মতই ডিজাস্টার-প্রোন, কিন্তু শুধুমাত্র নিয়ন্ত্রিত জনসংখ্যা, আন্তরিক ইচ্ছা ও দীর্ঘমেয়াদী ভালো পরিকল্পনার কারণে সব সমস্যা সামাল দিয়ে এগিয়ে গিয়েছেঃ এরকম উদাহরণ অনেক আছে বিশ্বে।

মুক্তিযুদ্ধকে যেমন ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক ইস্যু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলা হয়েছে এই দেশে, ঠিক তেমনি ওভারপপুলেশন/পপুলেশন কন্ট্রোলকেও ইসলামের সাথে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার একটা চিরায়ত প্রবণতা আছে এই দেশের মানুষের মধ্যে। যেটার সত্যতা তারা কেউই হয়তো নিজেদের জীবদ্দশায় দেখে/বুঝে যেতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:১৫
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×