খুন খারাবি করে আসার পরে এতায়াতী জঙ্গীদের প্রতিক্রিয়া কি?
এটা খুবই স্পষ্ট যে, টঙ্গীর সেই কালদিনে নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটিয়ে সাদ-পন্থী এতায়াতীদের মধ্যে কোনরুপ ভাবান্তর, অনুতাপ, দুশ্চিন্তা, অনুশোচনা এরুপ কিছুই পরিলক্ষিত হয় নাই। এর বিপরীতে তাদের মধ্যে তাদের মধ্যে একপ্রকার বিজয়োল্লাস ও চাপা আনন্দ দেখা গেছে। এর কারন, তারা ‘জেহাদের’ নিয়ত করে হত্যা করতে গিয়েছিল এবং নিজেরা ‘শহীদ’ হবার জন্য গিয়েছিল। এজন্য, এজতেমা মাঠের নিরীহ মুসুল্লি ও মাদ্রাসা ছাত্রদের মারাকে তারা সাওয়াবের কাম মনে করেছে এবং মারতে পেরে খুশি হয়েছে।
এরপরে, বিভিন্ন দিক থেকে চাপ আসার পরে তাদের মধ্যে নিজেদের অপ-কর্মের পক্ষে সাফাই গাওয়া, অপ-কর্মের বৈধতা অর্জন, লাশ নিয়ে রাজনীতী ইত্যাদি অপ-প্রয়াস দেখা গেছে। তারা ঘোষনা করতে থাকে, যে যে মারা গেছে সব নাকি সাদ-পন্থী !!
ইতিমধ্যে তারা নিজেদেরকে ‘তাবলীগের মূলধারা’ উল্লেখ করে এজতেমা মাঠ, কাকরাইল মার্কায ইত্যাদির ভাগ চায় এভাবে তারা জাতির দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে নেবার চেষ্টা করে।
তারা বিভিন্ন মিথ্যা কথা প্রচার করতে শুরু করে, যেমনঃ তাদের কিছু কথা নিম্ন্রুপঃ
১) ‘হেফাজতি’রা এজতেমার মাঠ দখল করেছে, আমরা তা উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম।
২) তাবলীগের মধ্যে কিছু বাইরের লোক ঢুকে এসব সমস্যা করছে।
৩) মাদ্রাসা ছাত্ররাই আগে আমাদের আক্রমন করেছে। আমরা আত্ম্ররক্ষা করেছি, ইত্যাদি।
৪) আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি, এখন আমাদের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেছে।
৫) দেওবন্দ কোন ফতোয়া দেয় নাই। আমাদের দেশের আলেমরা তাবলীগের স্টেজ দখল করার জন্য এসব করছে।
৬) সর্বদাই মাদ্রাসা-ওয়ালারা ও ওলামারা তাবলীগের বিরোধিতা করে আসছে। .......ইত্যাদি......
আচ্ছা, এখন আসুন,
এক, উপরের যেকোন যুক্তিতে কি এজতেমা মাঠের গেট ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে আগ্রাসন চালিয়ে হত্যাকান্ড ঘটানো বৈধ হয়ে যায়? কারা আগ্রাসন চালিয়েছিল, তা জাতির সামনে পরিষ্কার।
দুই, তাবলীগ জমাত তো চিরকাল সকল মুসুল্লিদের ও মুসলিমদেরকে নিজেদের ভাই ও সাথি মনে করেছে। আর আলেম-ওলামাদেরকে মাথার তাজ মনে করেছে।
কিন্তু আজকে কাদের ইশারায় তারা ওলামাদের ও মাদ্রাসা-ছাত্রদের ‘বাইরের লোক’, ‘হেফাজতি’, ‘দখলদার’ ইত্যাদি মনে করছে।
তিন, সেদিন, এজতেমা মাঠের ভেতরে যারা ছিল ও মার খেয়েছে, তারা ছিল সাধারন তাবলীগী সাথি, আলেম ও মাদ্রাসা ছাত্র। এরা কি তাবলীগ ও তাবলীগ জামাতের অংশ নয়? কিভাবে এদের ‘বাইরের লোক’ মনে করা হচ্ছে? যারা কালকেই ছিল আমাদের সাথি, মাথার তাজ; তারা আজকেই কিভাবে হয়ে গেল ‘বাইরের লোক’?
শুধু এখানেই ক্ষান্ত নয়, অনেক এতায়াতীর হিংস্রতা, ক্রুদ্ধতা এত বেশি যে, তারা বলছে, “আমাকে দায়িত্ত দিলে একাই ২০০ লাশ ফালাইয়া দিতাম”।
উগ্রতায় উগ্রতা বাড়ে। হিংস্রতায় হিংস্রতা বাড়ে। ঐ দিনের হিংস্রতার পরে তাদের হিংস্রতা ও ক্রুদ্ধতা আরো বেড়ে গেছে। এ ধরনের ঘটনা আরো ও আবারো ঘটাবার জন্য তারা প্রস্তুত। যেন তাদের মিশন এখনো অসমাপ্ত।
এটা স্পষ্ট যে, শুধু সাদ নয়, বরং এতায়াতী জঙ্গীদের মগজ ধোলাই হচ্ছে বৃহত্তর কোন পরিকল্পনার অংশ থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮