~বাসায় থাকুন, তবুও বাসায় থাকুন~
সামনে কী কী হবে আমি আপনাদের একটু ধারনা দিয়ে রাখি, মানসিক প্রস্তুতি রাখতে আপনাদের সহজ হয় যদিঃ
১) এই দেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অধিকাংশ দেশের তুলনায় অনেক বেশি হবে। একটু কল্পনা করুন বস্তি, ঘিঞ্জি এলাকাগুলোর কথা, একটু অসবাধানতাই যথেষ্ট। কাজেই বাসায় থাকুন।
২) আক্রান্ত হলেই মারা পরবেন না, তবে ভুগবেন, পাশাপাশি আপনি যদি ভাইরাস নিয়ে কোন লক্ষণ ছাড়াই খুশীতে ঠ্যালায় ঘুরতে বের হন তখন নিজের অজান্তেই আরও ১০০ টা মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে দিবেন যাদের মধ্যে সবার এই রোগ থেকে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নাও থাকতে পারে। তাদের মৃত্যুর জন্যে দায়ী হতে চাইলে এখনই বের হয়ে পরুন!! আর না চাইলে বাসায় থাকুন।
৩) কমবয়সীদের এই রোগ কাবু করতে পারেনা এই কথা আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। যতই লাফ দিক এদেশের বেশীরভাগ মানুষ মুলত রোগা ও দুর্বল কাজেই সবার জন্য বিপদ আসন্ন। কাজেই বাসায় থাকুন।
৪) নারীদের তুলনায় পুরুষরা অধিক আক্রান্ত হবেন। ধূমপান, মদ্যপান, নেশা জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার এখনও পুরুষদের মাঝে নারীদের তুলনায় অনেক বেশি কাজেই তাদের দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে কম। তাছাড়া এমনিও মেয়েদের বলা হয় "কই মাছের প্রান" কাজেই পুরুষরা অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করুন। বাসায় থাকুন।
৫) বাসায় চুপচাপ যদি এখনও বসে থাকতে না পারেন ধরে রাখেন আপনি আক্রান্ত হবেনই। কাজেই ভয় না পেয়ে আক্রান্ত হওয়া প্রতিরোধ করার পাশাপাশি আক্রান্ত হলে কী করবেন সে ব্যাপারে মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকুন। তবুও বাসায় থাকুন।
৬) আগুন তো মাত্র লাগা শুরু হয়েছে, ছড়িয়ে পরছে এখনও ধীরে তবে এর গতি বাড়বে এবং নগরে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পাবে না। আমি অপেক্ষা করছি "দেবালয়" আক্রান্ত হলে অবস্থা কি দাড়ায় দেখার জন্য। আপনারাও দেখবেন তবে বাসায় বসে।
ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ চায়না থেকে যখন ৩৪১ জন বাঙালিকে নিয়ে আসা হল, সবাই ইটালি থেকে আসা মানুষদের নিয়ে কথা বলছে, কিন্তু ঐ চায়না উহান আগতদের কথা আপনারা কি ভুলে গেলেন?
তাদের কোন লক্ষণ ছিল না বলে আশকোনা ক্যাম্পে কিছুদিন রেখে থেকে যার যার বাসায় কিছুদিন পর চলে গেল, এখন আপনারাই বলুন এটার কি কোনই সম্ভাবনা নেই যে তাদের মধ্যে কেউ ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করেছে? বাহক হলেই যে শুরু থেকে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাবে তাও কিন্তু না, কাজেই হতে পারে!
সে যাই হোক, পুরো ফেব্রুয়ারি মাস গেল, আমরা হেসে খেলে কাটিয়ে দিলাম, মার্চ এ ইতালি থেকে মানুষ আসা শুরু করল, রোগী আসা শুরু করল, আমরা এখনও একপ্রকার হেসে খেলে কাটিয়ে দিচ্ছি।
গুজবে কান না দিয়ে "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা" এর ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন, যেকোনো প্রকার সাহায্যের জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করুন, সাধ্যমত চেষ্টা করব।
তবুও বাসায় থাকুন, থাকার চেষ্টা করুন।
-ডাঃ নাজিয়া হক অনি
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১:২২