বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীঃ রাতুল কি পারবে?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সেন্টেরাস গ্রহ। পৃথিবী ছেড়ে মানুষের এই গ্রহে আসার দুইশ বছর হয়ে গেছে।পৃথিবীটা বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে গিয়েছিলো।সেন্টেরাসে আসার সুযোগ পেয়েছিলো প্রতিটি কম্যুনিটির সকল শিশু এবং দশজন করে সদস্য। যোগ্যতা স্কেলে সেরা দশজনকে এই সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। এই দশজনের মধ্যেই ছিলো রাতুলের বাবা ও মা। তবু তারা আসতে পারেনি এখানে। ভুল হলো। আসতে দেয়া হয় নি।
তাদের আসতে দেয় নি যে লোকটা তার নাম ক্রিপটন।এই লোকটা যোগ্যতা স্কেলে দশজনের বাইরে ছিলো। এগারোতম।একদিন গভীর রাতে হঠাত রাতুলদের ঘরে ঢুকে ওর বাবা মা দুইজনকে খুন করে ক্রিপটন। পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে সব দেখে রাতুল। নিজ কম্যুনিটির কাউকে খুন করা তখনকার পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ ছিল।কিন্তু শিশু হওয়ায় রাতুলের সাক্ষী আদালতে গ্রহনযোগ্য হয় নি। বরং যোগ্যতার স্কেলে দশজনের মধ্যে ঢুকে সেন্টেরাসে আসে ক্রিপটন। রাতুলও আসে অন্যান্য শিশুদের সাথে।
সেন্টেরাসে মানব সভ্যতা অনেক দূর এগিয়েছে। রোগ শোককে জয় করেছে মানুষ।রাতুল যখন যুবক।জীবনের একটাই লক্ষ্য তার। ক্রিপটনকে হত্যা করা। তবে ক্রিপটন সেন্টেরাসের মন্ত্রীপরিষদের প্রিয়পাত্র হওয়ায় এতদিন সে সুযোগ পায় নি। অবশেষে সুযোগ এসেছে।
ক্রিপটন বয়ষ্কজনিত কারনে অসুস্থ। যে হাসপাতালে তাকে রাখা হয়েছে তার ওয়ার্ড বয় রাতুল।ক্রিপটনের রুমে তার যাতায়াত আছে। কিন্তু চাইলেই নিজের ইচ্ছা পূরন করতে পারে না সে। বাধা হয়ে আছে সেন্ট্রাল কম্পিউটার। ক্রিপটনের রুমে ঢোকার পর ওর প্রতিটা কার্মকান্ড বিশ্লেষন করতে থাকে এই কম্পিউটার। সন্দেহজনক কিছু দেখলে সেকেন্ডের শতভাগ কম সময়ে লেজার সবীম দিয়ে রাতুলের মাথা এপার ওপার করে দেবে!
সেন্ট্রাল কম্পিউটারের গঠন নিয়ে পড়াশোনা করেছে রাতুল। কিন্তু শত খুঁজেও এর কোনো দুর্বলতা পায় নি।উদাস হয়ে একদিন বাবার ল্যাপটপটা বের করলো রাতুল। এটা পৃথিবী থেকে নিয়ে আসা তার বাবার একমাত্র স্মৃতি। হঠাত কিছু পুরোনো নোট ঘাঁটাঘাটি করতে করতে উত্তেজনায় কেঁপে উঠলো সে।একটা প্যারাডক্স পেয়েছে। এই প্রাচীন প্যারাডক্স কি সাহায্য করতে পারবে ওকে? এযুগের সর্বাধুনিক ওএস এর সুপার কম্পিউটারের বিরুদ্ধে?
ব্যর্থ হলে মৃত্যু নিশ্চিত। তবু এই ঝুঁকিটা তাকে নিতেই হবে।বাবা মার মৃত্যুর প্রতিশোধ না নিতে পারলে বেঁচে থেকে কি লাভ?
ক্রিপটনের রুম। সে ঘুমিয়ে আছে। প্রতিদিনের মতো তার শরীরের সাথে সংযুক্ত সুপার কম্পিউটারের স্কিনে ডাটা গুলো চেক করলো রাতুল। শুরু করলো প্রশ্ন করা-সুপার কম্পিউটার পালস কত? মৃদু একটা যান্ত্রিক কন্ঠ পালস জানালো। -সুপার কম্পিউটার রক্তে হিমোগ্লোবিন পরিমান কত? যান্ত্রিক কন্ঠ জানালো।
এবার রাতুল লম্বা একটা দম নিলো। ধীর লয়ে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বলতে শুরু করলো- সুপার কম্পিউটার,পৃথিবীতে একটা বন্ধ ঘরে একটা চেয়ার রাখা আছে।যেটা কখনোই সরানো যায় না। চেয়ারটাকে একটা ধাক্কা দেয়া হলো। যে ধাক্কাটা কখনোই আটকানো যায় না। কি ঘটবে?
যান্ত্রিক কন্ঠ নিশ্চুপ।রাতুল দেখলো স্ক্রিনে কিছু এলোমেলো নম্বর উঠছে।এক মিনিট এভাবে নম্বরগুলো উঠতেই থাকলো। তারপর একটা লাল বাতি জ্বলে স্ক্রিন অফ হয়ে গেলো। এর অর্থ রাতুল জানে। প্রাচীন পৃথিবীর প্যারাডক্স কাজ করেছে। সুপার কম্পিউটার ক্রাশ করেছে। সেলফ রিকভারি মুডে গিয়েছে কম্পিউটার। পুরোপুরি ঠিক হতে ঠিক ঠিক পাঁচ মিনিট নেবে।বাবা মার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাঁচ মিনিট অনেক বড় সময়। ধীরে ধীরে ক্রিপটনের দিকে এগিয়ে গেলো রাতুল।
১৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক
আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।
“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য
ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার
(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭
ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।
এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
একাত্তরের এই দিনে
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন