somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি যেরকম হরতাল চাই !

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জোট সরকার ক্ষমতায় থাকা কালে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। যেখানে সেখানে বাইপাস নির্মাণের মাধ্যমে আন্তঃজেলা বাইরোড যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন তারই প্রমান। ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসার ক্ষেত্র এবং সেই সাথে কর্মসংস্থানও (যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগন্য) আভ্যন্তরীণ বিষয় বিবেচনা করলে আমাদের মনে রাখতে হবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, দেশের ভাবমূর্তি, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা ইত্যাদি। জোট সরকারের আমলে দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া (জঙ্গিবাদের উত্থান উল্যেখযোগ্য) দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে স্থিতিশীল থাকলেও ভাবমূর্তি ক্ষুন্য হয়েছে দুর্নীতিতে টানা পাঁচবারের চ্যম্পিয়ন হওয়ায়। “ডলারের বিপরীতে টাকার মান” শুধু এই বিষয়টা বিবেচনায় আনলে দেখা যায় মহাজোট সরকারের চেয়ে জোট সরকার অর্থনৈতিক দিক থেকে সফল, যা আমার এই লেখায় বলা আছে।

পক্ষান্তরে, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি (পদ্মা সেতু এখনও ঝুলে আছে), এমনকি মেরামতও পর্যাপ্ত পরিমাণে হচ্ছে না। অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে দেশে বিরাজ করছে চরম অস্থিতিশীল পরিবেশ। দেশের উন্নয়নের প্রশ্ন বার বার ঢাকা পড়ছে বিভিন্ন ইস্যুতে, যেমন – বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারিদের বিচার, পিলখানা ট্রাজেডি, সীমান্তে বি.ডি.আর – বি.এস.এফ অস্থিতিশীল অবস্থা, যুদ্ধাপরাদের বিচার, শাহবাগের গণজাগরণ এবং সব শেষে শাপলা চত্বরের ইসলামী জাগরণ। দেশের উন্নয়ন নয় বরং এসব ইস্যু নিয়েই ব্যস্থ মহাজোট সরকার।

এতক্ষণ ছিল প্রারম্ভিক কথা, এবার মূল প্রবন্ধে আসি।

আমি আমার কাঙ্খিত উদ্দেশ্যে যাবার পথে বাধাগ্রস্থ হলে তবেই ডিস্টার্ব ফীল করব। কিন্তু আমি যদি ঘরে বসে থাকি, আর কেউ যদি ঐ রাস্তা বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমি জানবও না রাস্তাটা বন্ধ না খোলা, ডিস্টার্বও ফীল করবনা।

সরকার যদি দেশের উন্নয়নের কাজ করত তাহলে অবশ্যই হরতালে ডিস্টার্ব ফীল করত। কারণ হরতালের উদ্দেশ্যই উন্নয়নের পথে বাধা দেয়া। তাই হরতালে সরকারের কোন সমস্যা হয়না, যত সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ জনগণকে।

যেহেতু হরতাল তার উদ্দেশ্য পুরনে ব্যর্থ এবং বিরোধি দলও হরতাল না দিয়ে থাকতে পারবে না, তাই গতবাধা নিয়মে হরতাল না দিয়ে যদি ভিন্নভাবে হরতাল দেয়া যায় তাহলে জনসাধারণের ভোগান্তি কিছুটা কমবে। ভিন্নধারার হরতালের কিছু নিয়ম –

১. তিন চাকার যানবাহন (রিক্সা, অটোরিক্সা, সি.এন.জি) চলবে। এতে যারা দিন আনে দিন খায় তাদের বিরাট একটা অংশ সস্থি পাবে। জনগণও প্রয়োজনবোধে যাতায়াত করতে পারবে।

২. চার কিংবা তার বেশি চাকার যানবাহন শক্ত হাতে দমন করা হবে অর্থাৎ ভাঙ্গা হবে। জ্বালিয়েও দিতে পারবে পিকেটাররা।

৩. সরকারি বেসরকারি সব অফিস আদালত বন্ধ থাকবে, নতুবা পিকেটাররা আক্রমন করতে পারবে।

৪. স্কুল, কলেজ, বিশ্যবিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। ছাত্র-ছাত্রী দেশের ভবিষ্যত। তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষ বিবেচনা থাকা উচিৎ।

৫. পিকেটাররা রাস্তায় মিটিং, মিছিল যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। শুধু ছাত্র-ছাত্রী এবং তিন চাকার গাড়িতে হামলা করতে পারবে না। হামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী সমাজে তাদের গুরুত্ব অনুধাবন করবে।

৬. উপরের ৫ টা নিয়ম পিকেটাররা মেনে চলার পরে যা ক্ষতি হবে (হরতালের নিয়ম বহির্ভূত কাজের কারনে) তার দায় সরকারকেই নিতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

(আরও কোন নিয়ম থাকলে বলবেন)

সম্মানিত রাজনৈতিক নেত্রীবৃন্দ, আপনাদেরকেই বলছি – আমরা এযুগের ছেলেমেয়ে। সবকিছুতে নতুনত্ব চাই। হরতালেও তার বাইরে নয়। আপনাদের আমলের অর্থাৎ প্রাচীনকালের সেই গতবাধা হরতাল আমাদের পছন্দ নয়। চাই নতুন কিছু। আপনাদের ডায়নামিক সিদ্ধান্ত দেখে আমরা যাতে বলতে পারি “হ্যা, এই সিদ্ধান্ত আমাদের জন্যই নেয়া হয়েছে”।

আসুন, যে হরতাল ছাত্র-ছাত্রী, জনগণ ও খেটে খাওয়া মানুষদের ভোগান্তিতে ফেলে দেয়, সেই হরতালকে না বলি।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×