somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বর্নমূল্য ভার‌তে নারী‌শিশুদের আয়ু খায় কেন?

০৬ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
স্বর্ণের দাম বাড়লে ভারতের বাবা মায়েরা তাদের মেয়ে শিশুদের হত্যা করা বাড়িয়ে দেন।


২০১৭-২০১৮ সা‌লের দি‌কে প্রকা‌শিত একটা স্টা‌ডি পেপার থে‌কে এটা বলা যায়। এই কোররিলেশান বেশ স্ট্রঙ। স্বর্ণের দাম ৬.৩% বাড়ার বিপরিতে মেয়ে শিশু মৃত্যুর হার বেড়ে ছিলো ৬.৪%। ১৯৮৫-৮৬ এর পরে আল্ট্রাস্নো প্রযুক্তি ছড়িয়ে পরায় এই সম্পর্কটা গিয়ে দাঁড়ালো মেয়ে শিশু এবোরশান এর সাথে। অথচ এই স্টাডির একটা সময় কাল ১৯৭২ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে ১১ বছর ভারত শাসন করেছিলেন ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী নারী প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

মেয়ে শিশু হত্যার আরো বর্বর বর্ণনা পাওয়া যায় ইসলাম পূর্ব পৌত্তলিক যুগের আরব ইতিহাসে। কিন্তু সেখানেও মেয়ে শিশু হত্যা আর মহিলাদের বিস্তর ভোগ‌ান্তির বর্ননার সাথে সাথেই রয়েছে ঐ সময়ের বিভিন্ন প্রভাবশালী নারীর ইতিহাসও। জানা যায় ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বিবি খদিজার দেশ দেশান্তরে ছড়ানো ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনার কথা, ভয়াবহ প্রভাবশালী দাপুটে রাজনৈতিক নারী হীন্দার যুদ্ধ ক্ষেত্রে পর্যন্ত দূর্ধষ আর বিভৎস অগ্রাসনের বর্ণনা, আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিলার ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক আর সামাাজিক প্রতিপত্তির সরস কথা মালা। উনাদের‌কে কেউ শিশু কালে মাটি চাপা দিলো না, আর বড় বেলাতেও দমিয়ে রাখলো না। কারন এরা ছি‌লেন প্রভাবশালী আর ধনাঢ্য প‌রিবা‌রের।
.
‌তো দেখা যাচ্ছে সব যু‌গেই মূলত অস্বচ্ছল আর দরীদ্র পরিবারের মেয়েরাই দুর্দশায় পরে। স্বর্ণের দামের সাথে মে‌য়ে‌দের এই ভোগা‌ন্তির যোগসূত্র গেঁথে আছে শুয়র প্রভাবিত সমাজ ব্যবস্থায়।
.
উপমহাদেশে মেয়েদের ‘জন্য‘ যৌতুক দেয়া হয় সাধারনত স্বর্নালঙ্কার দিয়ে। এই অনিবার্য ব্যা‌য়ের যোগা‌নে তাই মেয়ের জন্মের পর থেকেই টাকা জমানো শুরু করতে হয়। এতে বিপুল সংখ্যক পরিবারের টিকে থাকার রসদে টান পরে। এই ব্যবস্থায় সারভাইবাল প্রশ্নে এক জন মেয়ে তার শিশু কাল থেকেই নিজের পরিবারের আর্থিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে থাকে।
.
তো এই যৌতুক প্রথা আসলো কেন! জীবনের সবচেয়ে কর্মক্ষম সময়টাতে পারিবারিক দায়িত্বের বোঝায় মেয়েদের স্বশরীরে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ানোতে নিয়মিতই ছেদ পরে। সামাজিক দায়িত্বের কারনে তার একান্ত ব্যাক্তিগত যে আর্থিক সক্ষমতায় টান পরে সেটা পুষিয়ে দেয়া সমাজেরেই দায়িত্ব। তাই মেয়েদেরকে উপঢৌকন/যৌতুক দিতে হয় সমাজ থেকে। আর উপমহাদেশে এই পুরো দায়িত্ব সমাজ খুব সুন্দর করে একান্ত ভাবে মেয়েদের পরিবারের উপর দিয়ে রেখেছে। উপলক্ষ হলো বিবাহ। সেখানে বর আর মেয়ের উভয় সমাজ মেয়ের পরিবারের আয়োজনে পেট পুরে খায়, একই সাথে মেয়ের জন্যে দেয়া সমস্ত উপঢৌকন বর মশাই আর তার পরিবারের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। আর সম্পদ নিয়ন্ত্রেণে যাওয়া মানে সম্পদের উপর নির্ভরশীল মানুষগুলোও নিয়ন্ত্রণে আসা। দিন শেষে যে যৌতুক মেয়েকে আর্থিক ভা‌বে ক্ষমতাবান করার কথা সেটাই তার খুনের কারন হচ্ছে, এমনকি তার জন্মের আগেই।
.
আর আরবের ধনাঢ্য নারীরা যেমন নারীর দুর্ভোগ কমাননি, এখানেও না। বরং ধনাঢ্য শ্রেনীর মহিলারা বাপের কাছে থেকে সাথে করে নিয়ে আসা যৌতুক নিয়ে দাপট দেখাতে থাকে শ্বশুরালয়ে। এই যৌতুকি বৌ আর তার শাশুড়ীরা মিলে শুয়রের মত গোঁত গোঁত করতে করতে তীব্র সামাজিক চাপ তৈরী করে তাদের প্রতিবেশী নিম্নবিত্ত্ব পরিবারের বৌ গুলোর উপর। সামনে করোনা আর যুদ্ধ পরবর্তি যে মন্দা আসতে যাচ্ছে তাতে প্রান্তিক পর্যায়ের মহিলা আর মেয়ে শিশুদের উপর তীব্র হবে এই চাপ।
.
পুনশ্চ: আরবে ইসলামী নিয়ম এসে পুরো পাশার দানটা উল্টে দেয়। মেয়ের ঐ আর্থিক ক্ষতি পুরনের দায়িত্ব পুরোটাই পরে তার জামাইয়ের উপর। ছেলের যেহেতু আর্থিক কর্মকান্ডে প্রকৃতগত কারনে কখনোই বিরতি নিতে হয় না। এমন কি বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার খরচও ছেলের দায়িত্বে থাকে। তবুও দিনে দিনে আইন আর নিয়ম থাকে এক দিকে, আর মনুষ্য চলা শুরু করে আরেক দিকে। এই ভাবে মেয়েদের আর্থিক কর্ম কান্ডে না জড়াতে দেয়ার যে পারিবারিক হেডম আছে তার গোড়া নিয়ে আরেক দিন লিখা যায়।
.
ছ‌বি বর্ণনা (Adrian Hirschi):
‌জিম্বাবু‌য়ের কারা‌বি লে‌কে অপুষ্ট শিশু হি‌প্পোটা‌কে খে‌য়ে উশুল কর‌ছে তার স্বজাত। এটা‌কে Infanticide ব‌লে। যে শিশু দূর্বল ব‌লে টিক‌তে পার‌বেনা ম‌নে হয় তা‌দের এটা ক‌রে দ‌লের খাবা‌রের চাপ কমা‌নো হয়।
.
উৎস: ঘাটা দি‌লেই লিঙ্ক পাওয়া যা‌বে। দু‌য়েকটা ক‌মেন্ট‌ে দি‌চ্ছি।
.
#Afnan_Abdullah
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:৫১
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×