somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বন্ধু ও বিকৃত বন্ধুত্ব

১৫ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"বন্ধুত্ব" শব্দটির অর্থটা আজকাল কেমন যেনো বিকৃত মনে হয়। সাধারণত দুটো কারণে আমি বন্ধুত্ব নামক সম্পর্কে জড়াই।

প্রথমত, "প্রয়োজন" বিবেচনায় একজন ভালো বন্ধুর গুরুত্ব বলা বাহুল্য বলে। একজন বন্ধুর বিপদে আরেকজন বন্ধু পাশে এসে দাঁড়াবে, সে আশা একজন মানুষ তার বন্ধুর কাছ থেকে করতেই পারে।

দ্বিতীয়ত, বন্ধুত্ব মানেই মাস্তি-হৈ-হুল্লোড়-মাতামতি আর সবাই মিলেমিশে ভালো থাকা কিংবা সবাইকে ভালো রাখার শপথ নিয়ে দারুণ এক পথচলা যায় বলে।

এখনো চোখে পড়ার মতো অনেক সুন্দর সুন্দর বন্ধুত্ব প্রতিনিয়তই সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝে সেই বন্ধুত্বের দাবিটা অনেক বেশী হয়ে পড়ে। বন্ধুর সংখ্যা বাড়াতে ভয় লাগে। কারণ, নতুন নতুন বন্ধু হবে, আর ওসব বন্ধুরা প্রতিদিন পার্সোনালি কিছু সময় নিতে চাইবে ফালতু আলাপচারিতার জন্যে। একদিনের জন্যে কথা, দেখা কিংবা চ্যাট না হলেই "আমাকে ভুলে গেলি" টাইপের ন্যাকামো শুরু করবে। প্রয়োজনীয় কথাবার্তা শেয়ার করার জন্যে নিজের সময়ের কিছুটা ভাগ বন্ধুকে দেওয়ার জন্যেও এত কষ্ট লাগে না যতটা না ফালতু আলাপচারিতায় সময় নষ্ট করতে লাগে। অপ্রয়োজনে বন্ধুত্বের দাবি নিয়ে প্রতিদিন নির্ধারিত কিছু সময় চাওয়া সত্যিই বিরক্তিকর একটা ব্যাপার। আবার এসব কথা বলতে গেলে কিংবা বুঝাতে গেলে "এত পার্ট মারস ক্যান" ধরণের কিছু কথা শুনতে হয়।

যত বেশী বন্ধুত্ব হবে, সেগুলো রক্ষা করে চলার জন্যে তত বেশী সময় হাতে রাখতে হবে। দৈনন্দিন ব্যস্ততার মাঝেও বন্ধুদেরকে প্রতিদিন রুটিন করে দিনের কিছুটা অংশ না দিলেই মানুষকে তখন স্বার্থপর(!) বনে যেতে হয়। প্রয়োজনে হাত পাতলেই কটু কথা শুনতে হয়। "মন খারাপ, একটু সময় দে" বললেই "আমার কাছে ক্যান আইসছ্‌" শুনতে হয়। তাই আমার মতো ক্ষুদে অসামাজিক(!) প্রানীরা কখনোই বন্ধুত্ব করে শান্তি পায় না। বেশীর ভাগ বন্ধুর কাছ থেকেই আনন্দ-ফূর্তি পাওয়ার বদলে "একঘেয়েমিতা" পায়। তাই কয়দিন পরপরই আমার বন্ধুত্বের ইতি ঘটে!

মাঝে মাঝে প্রেমিক-প্রেমিকা আর বন্ধুর মধ্যেও কোনো ফারাক খুঁজে পাই না। কারণ, কিছু বন্ধু আছে রাতদিন বন্ধুত্বের দাবি নিয়ে বন্ধুর সাথে সময় কাটাতে চায়। এত দীর্ঘ সময় ধরে কিসের কথাবার্তা, তা আমার বোধগম্য নয়। হুম, মাঝে মাঝে কোনো প্রোবলেমের সলিউশন খুঁজতে খুঁজতে অনেকটা সময় বন্ধুর সাথে পার করতে হয়, সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে কারণ ছাড়া এভাবে সময় কাটানোর মানে কি! এতে কোনো পজেটিভ কিছুর চেয়ে নেগেটিভ কিছু বেশী পাওয়া যায়। সময় নষ্ট হওয়ার কথা না হয় বাদ-ই দিলাম। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে দীর্ঘদিন-দীর্ঘসময় ধরে এভাবে টাইম পাস করতে থাকলে একসময় তারা পরস্পরের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন বন্ধুত্ব ভালোবাসায় রূপ নিতে বেশী সময় লাগে না। হ্যাঁ, যদি ওটা তাদের প্রথম ভালোবাসা হয়, তবে তা অভিনন্দনযোগ্য। কিন্তু যদি দুজনের কেউ একজন কিংবা দুজনই পূর্বে কোনো সম্পর্কে গিয়ে থাকে, এবং তাদের এই নতুন ভালোবাসা যদি তাদের পুরাতন সম্পর্কের অন্তরায় হয়ে পড়ে, তবে সে ভালোবাসা কিংবা সম্পর্ক অভিনন্দনের পরিবর্তে তাচ্ছিল্য বৈ আর কিছুই পাওয়ার যোগ্যতা রাখে না।
আবার যদি দুজনের মধ্যে শুধুমাত্র একজন তার বন্ধুর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বন্ধুকে প্রোপোজ করে বসে, তখন অপর বন্ধুটি অস্বস্তিতে পড়ে যায়। না পারে গিলতে, না পারে উগলাতে।

এ ধরণের "বন্ধুত্ব" নামক সম্পর্ককে আমি "বন্ধুত্ব" বলে সত্যিকারের বন্ধুত্বের অবমূল্যায়ন করতে চাইছি না, আবার নতুন কোনো শালিন সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করাও আমার পক্ষে আদৌ সম্ভবপর নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৫৪
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×