লঞ্চের ডেকে করে
চাঁদ জ্বলা এরকম কত রাত
চলে গেলো মোহনা ছাড়িয়ে;
এরকম কতনা তোমাকে
লঞ্চের ডেকে নিয়ে
ভেঁপু বাজাতে বাজাতে
চলে গেলো রাতের স্টিমার
হাতিয়ার দিকে।
হাতিয়ার দিকে গভীর সমুদ্র
জীবনেও আছে 'সমুদ্র সফেন'
এই কথা জেনেছিলেন জীবননানন্দ দাশ
যাকে দু'দণ্ড শান্তি দিয়েছিল
বনলতা সেন।
তোমার বনলতা নাই কোনো
বনলতা ও বনপুরুষের মনের মধ্যে অসুখ
তারা কেবলি পরকীয়া করে আজকাল
ভালোবাসার ভান করে তারা
ছড়ায় শুষ্কতা; ছড়ায় অসুখ।
তারা খুব প্রেম প্রেম ভাব করে
কিন্তু পরস্পরকে করে সন্দেহ;
আর প্রেম ভেঙে গেলে পরে
খালি ছড়ায় কুৎসা তারই নামে
যার ঠোঁটে গভীর চুমু ঢেলেছে একদিন।
অথচ বনলতার কালে জীবননান্দরা
এরকম কুৎসা খুব একটা করতেন না রটনা
এই কথা বুঝেছি বাবাকে দেখে।
যাকে তিনি ভালোবেসেছিলেন
তাকে তিনি পাননি কখনো;
সেই ভালো,
না পাওয়াই,
পেলে পরে প্রেম ফিঁকে হয়ে যায়
বিছানার রংচটা চাদরের মতন;
অর্থাৎ অতিব্যবহারে,
অধিক দৈনন্দিনতায়
অনেক আটপৌরে হলে
মহার্ঘ্য প্রেম-ও ফিকে হয়ে যায়
বিছানার রংচটা চাদরের মতন।
অতএব, প্রেম করে বিয়ে করা
প্রেমিক ও প্রেমিকা সকল
আপনারা মাঝে মাঝে
দু'জনে মিলে ঘুরতে যাবেন
সাগর পাড়ে দেখবেন সূর্যাস্ত
প্রথম যৌবনের মতন
দু’জনকে দু’জন দেবেন
তুমুল অর্গাজম;
আর এতো কিছু না হলে
অন্তত ওয়াশরুমের আয়নায়
প্রণয়ীকে চমকে দিতে হঠাৎ
একসন্ধ্যায় লিখে রাখবেন
'ভালোবাসি'।
ভালোবাসা থাকলে জীবন বয়ে নেয়া যায়
ভালোবাসা থাকলে জীবন ফিকে কম লাগে
ভালোবাসা থাকলে অভাব কম বোধ হয়।
ভালোবাসা শব্দটি উচ্চারন হওয়া মাত্রই
আপনি যদি হয়ে উঠেন এক বিরহি-চিত্ত
যদি খালি আপনার মন কাঁদে তার লাগি
যে আপনাকে ছেড়ে গেছে
কোনো ইঙ্গিত না দিয়েই
তবে আপনিও নিজেকে অসুস্থ জানবেন।
যার প্রেম ভেঙে গেছে
আয়নায় সে নিজের মুখ দেখুন
নিভে আছে আপনার চোখের মণি
সাপে কাটা রোগীর মতন
নীলাভ হয়ে আছে আপনার মুখ;
এবার নিজের শুশ্রুষা করুন
পৃথিবীতে অনেক প্রেমিক ও প্রেমিকা আছে
ভগ্ন হৃদয় নিয়েও যারা আজো
রঙীন পুষ্প হবার বাসনা করেনি ত্যাগ,
জীবনের কাছে নিজের দাবীনামা করেনি প্রত্যাহার।
অতএব, সিগেরেটের পরে সিগেরেট ধরিয়ে
চাঁদের নিচে আকণ্ঠ পান করে
নিজেরই ব্যাথা
আপনি নিজেকে ভালোবাসুন
নিজের গালে একটা চুমু খেয়ে বলুন
জেগে উঠো, হে সুন্দর।
২৯ জানুয়ারি, ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৩৭