somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দার্জিলিং, কালিম্পং ভ্রমন। শেষ পর্ব

১৮ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্যালিম্পং যাওয়ার জন্য আপনি গাড়ি ভাড়াও করতে পারেন, আবার ওদের যে গাড়িগুলো প্রতিজন ১৫০ রুপি করে নিয়ে ক্যালিম্পং যায় সেগুলোতেও যেতে পারেন। আমরা যেহেতু শুধুই দুইজন তাই ১৫০ রুপির গাড়িতেই গেলাম, গাড়ি ভাড়া করতে গেলে ৪০০০/৫০০০ রুপি লাগতো।

শহরের যে জায়গা থেকে ক্যালিম্পং এর গাড়ি ছাড়বে সেখানে যেয়ে টিকেট কেটে গাড়ি ছাড়তে ছাড়তে ১০ টা বেজে গেলো। দার্জিলিং থেকে ক্যালিম্পং যাওয়ার রাস্তাটা অনেক সুন্দর। মানুষের ভীড় ও অনেক কমে গেলো। রাস্তার পাশে চা বাগান এবং মাঝে মাঝে পাইন গাছ রাস্তার সৌন্দর্যকে অনেক বাড়িয়েছে।

দার্জিলিং থেকে ক্যালিম্পং যাওয়ার পথে পরে তিস্তা ভিউ পয়েন্ট। ড্রাইভারের সাথে আলাপ করেছিলাম কিছু টাকা বেশি দিয়ে এ জায়গায় গাড়ি কিছু সময় থামানো সম্ভব কি না? ড্রাইভার রাজি হয় নি। শেয়ারের গাড়িতে এটা সম্ভবও না, গাড়ির বেশিরভাগ যাত্রী স্থানীয় তারা আমাদের জন্য রাস্তায় দেরি করবে কেনো।

আমরা ক্যালিম্পং পৌছালাম ১টার সময়। স্ট্যান্ডের সাথেই বেশ কয়েকটি হোটেল আছে।
ভাড়া করতে যেয়ে একটু ঝামেলায় পড়লাম। কয়েকটা হোটেল বিদেশি রাখে না। আবার একটি হোটেল আমাদের অফিসিয়াল পাসপোর্টে ভিসা নাই দেখে সাহস পেলো না। পরে অন্য একটি হোটেল যারা বিদেশী রাখে ও অফিসিয়াল পাসপোর্ট এর ব্যাপার বোঝে তাদের হোটেলে উঠলাম। হোটেল ভাড়া নিলো ৮০০ রুপি।

ফ্রেস হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা ৫০০ রুপি দিয়ে ছোট একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করলাম ডেলো পার্ক ও সায়েন্স সিটি দেখতে যাওয়ার জন্য।
ডেলো পার্ক ভালো লাগার মতই একটা স্পট। আমরা ভেতরে ঢুকতে ঢুকতেই মেঘ এসে আমাদের ভিজিয়ে দিয়ে গেলো। এখান থেকে প্যারাগ্লাইডিং করা যায়।

বেশ কিছু সময় এখানে থাকার পর বের হয়ে মাইক্রোবাসের কাছে যাওয়ার পর দেখি মাইক্রোবাসে তিনজনের দিল্লির এক পরিবার বসে আছে। আমাদের সায়েন্স সিটিতে নামিয়ে দিয়ে ওদেরকে ক্যালিম্পং শহরে রেখে ড্রাইভার আমাদেরকে আবার নিতে আসবে। আমার তেমন একটা আপত্তি ছিলো না কিন্তু আমার বন্ধু সুমনের কঠিন আপত্তির কারনে ড্রাইভার ওদের নিতে পারে নি।

সায়েন্স সিটিটাও বেশ ভালো একটা জায়গা বিশেষ করে অল্প বয়সী বাচ্চা থাকলে এছাড়া আর্টস, কমার্সে পড়াশুনা করাদের মুগ্ধ করবে। এখানে টিকেট কেটে থ্রিডি মুভি দেখার সুযোগ আছে। ডেলো পার্ক, সায়েন্স সিটি সেন্টার পাশাপাশি দুইটা স্পট। আামাদের দেখা শেষ হলে শহরে যখন ফিরে আসলাম তখন সন্ধ্যা হয়েছে প্রায়।

ফিরে এসে আমরা হেটে হেটে শহর দেখছিলাম, ছোট শহর অল্প সময়ের ভেতরই ঘুরাঘুরি শেষ হলো। আটটা নয়টার ভেতরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে হোটেলে ফিরলাম। পাহাড়ি শহরে বেশি রাত করে লোকজন বাইরে থাকে না।

পরদিন সকালে গাড়ি ভাড়া করলাম ৫০০ রুপিতেই। এবারের স্পট তিনটি ১। আর্মি গলফ কোর্স ২।দূরপিন মনেস্ট্রি ৩। পাইন ভিউ ক্যাকটাস গার্ডেন।

প্রথমেই গেলাম আর্মি গলফ কোর্সে, গলফ মাঠে ঢোকার অনুমতি নাই তবে রাস্তার পাশে ওদের একটা রেস্তোরাঁ আছে, যেখানে সুন্দর কিছু সময় কাটানো সম্ভব। দূরপিন মনেস্ট্রি বৌদ্ধদের একটা মন্দির, যার উপর থেকে চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেক সুন্দর লাগবে।

সব শেষে গেলাম পাইন ভিউ ক্যাকটাস গার্ডেনে। এখানে ক্যাকটাসের খুব ভালো কালেকশন আছে।
চার পাঁচটা শেডে অসংখ্য ক্যাকটাস, যে কারোরই ভালো লাগবে।

আমরা ১১ টার দিকে হোটেলে ফিরে ব্যাগ গুছিয়ে ফেললাম। এবার গন্তব্য শিলিগুড়ির দিকে। স্ট্যান্ড এ ১৫০ রুপি দিয়ে শিলিগুড়ির টাটা সুমো জিপের টিকেট কাটলাম। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, দার্জিলিং থেকে ক্যালিম্পং, ক্যালিম্পং থেকে শিলিগুড়ি সব ১৫০ রুপি করে ভাড়া।

গাড়ি ছাড়লে এবার অন্য রাস্তা দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হলো। পাহাড় থেকে নেমে তিস্তা নদীর পার ঘেঁষে গাড়ি যাওয়া শুরু করলো। এখানেও রাস্তার সৌন্দর্য অনেক, নিজেরা গাড়ি ভাড়া করলে কোথাও কোথাও গাড়ি থামিয়ে কিছু সময় কাটিয়ে যাওয়া যেতো।

২টা ৩০ এ আমরা শিলিগুড়ি পৌছলাম। পরদিন ২টা ৩০ এর দিকে আমাদের ফেরার গাড়ি। বিকেলে বের হলাম কেনাকাটার জন্য। শিলিগুড়িতে কেনাকাটার জন্য আছে হংকং মার্কেট, বিগবাজার, জুতা কিনতে চাইলে শ্রীলেদার। আমরা হংকং মার্কেটের কাছে হোটেলে উঠছিলাম।

পরদিন গাড়িতে উঠার আগে কাউন্টারে যোগাযোগ করলাম। আগেই কথা বলে রেখেছিলাম কেউ টিকেট ক্যান্সেল করলে আমাদের সামনে দেওয়ার জন্য। ম্যানেজার কথা রাখছেন, শেষের সিট থেকে মাঝে দুই সিট পেলাম।

গাড়ি ৫ টার দিকে চ্যাংড়াবান্দা পৌছলো। গাড়ির লোক এ পারের ইমিগ্রেশন এর জন্য ১০০ রুপি করে নিয়ে সব কাজ করে দিলো। আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করলাম।


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০২০ দুপুর ২:৩৬
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×