somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেমন স্বামী মোশাররফ করিম: স্ত্রীর ভাষ্য...

২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্পের শুরুটা ২০০০ সালে। জুঁই ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী। রোজ সকালে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে কোচিংয়ে যান। কোচিংয়ে বাংলা পড়াতেন লোকটা। নাম মোশাররফ করিম। ঝাঁকড়া চুল। গম্ভীর। দুজনের কথাবার্তা খুব একটা হতো না। টুকটাক। আর দশজন টিচার, ছাত্রীর মতোই দুরত্ব ছিল তাদের। মোশাররফ করিমকে ‘ভাইয়া’ বলতেন জুঁই। জুঁই ছাত্রী হিসেবে খুব ভালো। ঘটনাক্রমে জুঁই সেই কোচিং সেন্টারেই শিক্ষকতা শুরু করলেন। এবার তিনি মোশাররফ করিমের কলিগ।

ক্লাসের ফাঁকে দুজনের টুকরো টুকরো কথা হতো। সেই কথাগুলো জমতে জমতে কথার পাহাড়ে রূপ নেয়। কথায় কথায় সময় ফুরিয়ে যেত, কিন্তু কথার রেলগাড়িটা যেন থামতোই না! কি বিপদ! এতো কথা আসে কোত্থেকে! কথা না বললে মোশাররফ করিম বুকের ডান পাশটা পোড়ায়। মনটা নিশপিশ করে।



তাহলে কি জুঁইয়ের প্রতি মোশাররফ করিম দুর্বল হয়ে পড়লেন? নাহ! এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলো না। ছোটবেলা থেকেই মোশাররফ করিম প্রেম গায়ে মাখেননি। বরং হাত দশেক দুরে থেকেছেন। ছোটবেলায় ক্লাসের বন্ধুরা যেখানে প্রেম করে বেড়াতো, সেখানে তিনি বইয়ে মুখ গুঁজে থাকতেন।

সেই ছেলেটা কি আদৌ প্রেমে পড়তে পারে? প্রশ্নের উত্তরটা হ্ওয়ার কথা ছিলো ‘নাহ!’ কিন্তু প্রেম কি আর বাঁধ মানে! তার মন জুড়ে তখন জুঁই। তার নাকে জুঁই, চোখে জুঁই, আঙ্গুলের ভাঁজে ভাঁজে জুঁই! আনমনে ভাবতেন মেয়েটার কথা। খেতে ঘুমাতে, হাঁটতে। একসময় নিজেই আবিস্কার করলেন, মেয়েটিকে ভালোবাসেন। কিন্তু বলবেন কিভাবে? কথাটা বলা তো শরমের ব্যাপার! আকারে ইঙ্গিতে বোঝানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ফলাফল শুন্য। মেয়েটা ঠিক বুঝেও বুঝে উঠে না। ভারি বিপদে পড়া গেলো।

নিজে প্রোপোজ করতেও পারছেন না। কারণ তার মতে, ‘সরসরি ভালোবাসার কথা বললে ব্যাপারটা পানির মতো লাগে। একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বললে ভালো। চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু ঠিকভাবে বুঝতে পারেনি’। শেষে বুদ্ধি আঁটলেন। বন্ধুকে দিয়ে প্রোপোজ করাবেন। পরদনিই প্রোপোজ করলেন। মেয়েটি হ্যাঁ, না কিছুই বলে না। চিন্তায় পড়ে গেলেন তিনি। বারবার মনে ধাক্কা খায়, ‘যদি না বলে! মান সন্মান সব যাবে!’ শঙ্কা কেটে গেলো দিন দুয়েক পর। একটা পত্রিকার কাগজে জুঁই ‘ইয়েস’ লিখে মোশাররফকে দেন। তারপর শুরু হলো তাদের নতুন করে পথচলা।



কিন্তু জুঁই কি কখনো ভেবেছিলেন তাদের দুজনের সম্পর্ক হবে? ‘নাহ! আমি তো ভেবেছিলাম উনাকে আমাদের ফ্যামিলি মেম্বার বানাবো! আমি পরিবারে বিবাহযোগ্য পাত্রীও খোঁজাখুজি করেছিলাম। যার সঙ্গে ওর বিয়ে দিয়ে ফ্যামেলির সদস্য বাড়াবো। কিন্তু ও যে আমাকেই ভালোবাসে এটা ভাবতেই পারিনি। আর আমিই যে ওকে ভালোবেসে ফ্যামিলি মেম্বার বানাতে পারি, এটা মাথায় আসেনি।’-বললেন ‍জুঁই।

একটু সময় পেলেই দুজন ঘুরতে বেরুতেন। পছন্দের উপহার দিতেন। প্রথম উপহারটা দিয়েছিলেন মোশাররফ করিমই। আড়ং থেকে কেনা কান, গলার গহনার সেট দিয়েছিলেন। বছর চারেক চুটিয়ে দুজন প্রেম করার পর ২০০৪ সালের ৭ অক্টোবর বিয়ে করেন। গত এগারো বছর ধরে তারা হাতে হাত রেখে পথ চলছেন। এত বছরের পথ পরিক্রমায় তাদের জীবনে যুক্ত হয়েছে হাজারো অভিজ্ঞতা। স্বামীর হাসিটাই সবচেয়ে আকর্ষনীয় মনে হয় জুঁইয়ের কাছে। অনেকবার অনেক সাক্ষাতকারে বলেছেন ‘ও হাসলে অসাধারণ লাগে’। ছোটখাট মুদ্রাদোষও আছে মোশররফ করিমের। কি সেটা? জানালেন জুঁই, ‘ঘুমের সময় নাক ডাকে। অনেক সময় আধো ঘুমে নাক ডাকে। আমি আসলে বুঝি না ও সত্যি সত্যিই নাক ডাকে না অ্যাকটিং করছে!’



পর্দার বাইরের এই সফল জুটি ক্যামেরার সামনেও জুটি বেঁধে কাজ করেছেন। জুটি বেধে প্রথম নাটকের অভিজ্ঞতাটাও দারুণ। বললেন জুঁই, ‘ওর সঙ্গে আমি বেশ কমফোর্টলি কাজ করেছিলাম। কিন্তু ও আমার অ্যাকটিং নিয়ে খুব চিন্তা করে। তার কথা আমি ভালো পারবো না কেনো। তখন আমার খুব অসহায় লেগেছিলো। কিন্তু এখন ঠিক হয়ে গেছে।’

প্রথমদিন মোশাররফ করিমের কেমন লেগেছিলো?

‘প্রথম শর্টের সময় মনে হলো এটা কি ঠিক হচ্ছে। খুব অস্বস্তি লাগছিলো। সে যে আমার কোআর্টিষ্ট মেনে নিতে অনেক সময় লেগে গেছে। এখন ঠিক হয়ে গেছে।’ মোশাররফ করিমের নাটক মানেই মজায় ভরপুর। পর্দার বাইরের মোশাররফও এমন মজার মানুষ? ‘বাসায় সে খুব গম্ভীর। মাঝে মাঝে একটু আধটু ফান করে। তবে অভিনয়ে যতোটা করে ততোটা নয়।’ বললেন জুঁই।

জনপ্রিয় এ অভিনেতার আজ জন্মদিন। প্রিয়দেশ'র পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন।

সূত্র: প্রিয়দেশনিউজ

আহসান কামরুল
২২ অগাস্ট ২০১৫ খ্রি.
ঢাকা।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৬
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×