somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদি গজব

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
নিন্মোক্ত লিঙ্কের পোস্টটি পড়ে কিছু কথা বলা থেকে নিজেকে সংবরণ করতে পারলাম না!
Click This Link



নিউ ইয়র্কে আসার পর বেশ কিছু দিন একটি বিখ্যাত রিটেইলের বিপনন সেবাতে কাজ করি। বেশ ভালো অভিজ্ঞতা বলতে হবে। মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর থেকে পেরুর লিমা পর্যন্ত নানান দেশের, নানান বর্ণের মানুষের সাথে মেশার সুযোগ ঘটেছে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম, বিব্রতকর ও পীড়াদায়ক ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ধরুন মধ্য বয়সী একজন স্পানিক মহিলা বলে বসলো আমি নৃত্যে পারদর্শী কিনা। আমি ইয়াতিমের মতো তাকিয়ে না সূচক মাথা নাড়লাম। মহিলা খানিকটা অবাক হয়ে আফসোসের সুরে বললো “কেনো! তোমার আম্মু তোমাকে নাচ শিখায় নি!!! এখন তো তোমার জন্য মেয়ে জোগাড় করা বেশ কষ্টকর ব্যাপার হবে!!”

কেউ কেউ অতি বিনয়ী এবং আন্তরিক হয়ে জিজ্ঞাসা করতো “তোমার গার্ল ফ্রেন্ড কেমন আছে?” আজিব আমি কি তোমাদেরকে বলেছি যে আমার গার্ল ফ্রেন্ড আছে!
“না আমার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নাই!! আমরা এইসব করি না!!!”
কি ব্যাপার এতো সহজে মেনে নিলো! আর আমিও বাঁচলাম বিব্রতকর প্রশ্নের বান থেকে।
তবে কোথায় যেনো একটি ভুল করে ফেলেছি!!! এর পর থেকে কেউ গার্ল ফ্রেন্ডের কথা জিজ্ঞাসা করলে উত্তরে বলতাম “আমার গার্ল ফ্রেন্ড নাই তবে ফিয়ান্সে আছে!” --- পলিটিক্যালি কারেক্ট!

এবার মূল ঘটনায় আসি উপরোক্ত উদাহরণ গুলো কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও কিছু কিছু ব্যাপার বেশ বীভৎস। তখনো নিউইয়র্কে ওবামার গৃহীত উদারনীতি জায়েজ হয়নি। বিভিন্ন সময় আসেপাশে কিছু কো ওয়ার্কারদের দেখতাম উদ্ভট পোশাক পরিধান করে আছে, কথা বলার ভঙ্গীতে ভিন্নতা, হাঁটা-চলা পোলিও আক্রান্ত রোগীর মতো!! আলোচনার সময় অনেকটা অতি উদারতা ও নমনীয়তা (এন্ড্রোজেনিক সিন্ড্রম), আস্তে আস্তে সবকিছু পরিস্কার হতে লাগলো। একদিন কেলভিন ক্লেইন ব্যান্ডের শার্টের সাথে ম্যাচ করে পার্পল গলা বন্ধনী পরাতেই ঘটলো বিপত্তি। কেউ একজন পাশ থেকে বলে উঠলো “হাই পার্পল”, মনে মনে বললাম সারছে কাম। তাকে আর কথা বলার সুযোগ না নিয়ে আগ বাড়িয়ে বললাম “ইউ নো, ইটস অ্যা বার্থডে গিফট ফ্রম মাই ফিয়ান্সে, নাইস ইজন্ট ইট ? “
এমনিতে এই দেশে নতুন আমদানি হয়েছি! তার উপর আইনের শাসন, রেইসিজম, ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন, হাবিজাবি আরও কত কি! খালি বাংলাদেশ হইলে দেখতো ব্যাটা চিটাইঙ্গা পোলা কি জিনিস!!

মাঝে একদিন অনেকটা বিরক্ত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম ম্যানাজারকে জানানোর। হাঁটতে হাঁটতে ম্যানাজারের রুমের দিকে এগিয়ে যেতেই অন্য একজন বাংলাদেশী সহকর্মী পেছন থেকে ডাক দিলেন। আমার চেহারা অবস্থা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন কই যাও?? বললাম ম্যানাজের কাছে! কেনো জিজ্ঞাসা করতেই ব্যাখ্যা করলাম পুরো ঘটনা। উনি শুনে হাসতে হাসতে বললেন “ধুর মিয়া, তুমি কি বেয়াকুব নাকি?” এগুলা সবগুলোই তো এরকম!!” মানে সবাই ম্যানাজার এমন কি ম্যানাজারের বস সহ!!

আমি মাথায় হাত দিয়ে বলি কন কি ??!!
পরবর্তীতে অবশ্য এসব অদ্ভুদ অভিজ্ঞতা নানান সামাজিক আলোচনায় বিনোদনের খোরাক জুটিয়েছে।

আমেরিকার অধিকাংশ বড় শহরগুলোকে সমকামীদের অভয়াশ্রম বলা চলে! যেমন নিউ ইয়র্ক সিটির ডাউন টাউনে “গ্রিনিজ ভিলেজ” নামে পুরো নেইবরহুড সমকামীদের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতি বছর নিউ ইয়র্কে বেশ উৎসমুখর ভাবে পালিত হয় গে প্রাইড প্যারাডে! ইউরোপের অবস্থা আরও বীভৎস। অনেক ইউরোপিয়ান সমকামীদের দেখেছি বিয়ে করে নিউ ইয়র্কে এসেছে হানিমুন করতে! আর গর্বের সাথে নিজেদের বিবাহের কথা স্বীকার করছে। মাঝে মাঝে রাস্তা ঘাটে অনেক সমকামী যুগল ছবি তোলার জন্য অনুরোধ করতো!! উপায়ন্ত না পেয়ে না শোনার ভান করে উপেক্ষা করতাম!!


আমেরিকার পশ্চিম উপকূলের অন্যতম শহর সানফ্রান্সিসকো কে নিয়ে বেশ কিছু কৌতূক বাজারে প্রচলিত আছে। একেতো পাহাড়ি উঁচুনিচু রাস্তা তার উপর সমকামীদের উৎপাত। সেখানে নাকি ভুলক্রমে ওয়ালেট মাটিতে পরে গেলে কেউ আর হাঁটুগেড়ে বসে না, বরং ওয়ালেট কে পা দিয়ে লাথি মারতে মারতে রাস্তার একপাশে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়!!!

যাহোক বিনোদনের কথা বাদ দিয়ে আসল কথায় আসা যাক। পশ্চিমা বিশ্ব তথা (ইউরোপ- আমেরিকাতে) সমকামীতা অনেক আগ থেকেই মহামারী আকার ধারণ করেছে। সবকিছুকে ভোগ্যপণ্যতে পরিণত করা এবং ধর্ম থেকে বিচ্যুতির কারণেই তাদের এই দুর্দশা। অনেকটা অর্থনীতির ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উপযোগের মতো!! সব তো হলো, নতুন কি আছে বলো?!!
হালের ইন্ডিয়াতেও নাকি এইডসের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে সমকামিতার হার। তাহলে আমাদের দেশ পিছিয়ে থাকবে কেনো। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রীতো ইতি মধ্যে হালকা-পাতলা আভাস দিয়ে রেখেছেন!!

বাংলাদেশকে শেষ দেখা হয়েছে ঠিক সাড়ে তিন বছর আগে, তার উপর জীবনের সিংহভাগ কেটেছে চট্টগ্রামে। এমনিতে কালচারালি ঢাকা চট্টগ্রামের তুলনায় বছর তিনেক এগিয়ে। তাছাড়া আমার মতো ব্যাকডেইটেড কাম লেইট অ্যাডপটার মানুষদের কাছে খবরাখবর একটু দেরিতে পৌঁছায়।
তবে আমার সোনারবাংলা এতোটা এগিয়ে যাবে তা কল্পনায়ও ভাবি নি। আজকাল নাকি ঢাকার অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েরা ফ্যাশন হিসেবে সমকামীতায় জড়িয়ে পড়ছে! কি সাংঘাতিক কথা। এতো উন্নতি! এতো মানবিক উৎকর্ষ! এতো প্রগতি!
কিছুদিন আগে দেখলাম ঢাকায় নাকি লিভটুগেদার জ্যামাতিক হারে বেড়ে গেছে। শিক্ষিত এবং সামর্থ্যবানরাই এসবে বেশী জড়িয়ে পড়ছেন। অনেকটা অজ্ঞতা, অন্ধ অনুকরণ, মোহ এবং ধর্মহীনতা থেকে এসব অবক্ষয়ের উৎপত্তি।

ধরা যাক হলিউড বা বলিউডের অনেক ছবিতে বিয়ের পরিবর্তে লিভ টুগেদারকে প্রমোট করা হয়। পশ্চিমে বিয়েকে ঝামেলা হিসেবে উপস্থান করার প্রধান কারণ দ্বায়িত্বহীনতা এবং আইনী জটিলতা। অর্থাৎ তাদের অধিকাংশ সম্পর্কগুলো যেহেতু ক্ষণস্থায়ী তাই ব্যাপারগুলো বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ালে অনেক সময় সম্পদ হানির সম্ভবনা থাকে।
বেশ কিছুদিন আগে বাংলাদেশের কিছু মানবাধিকারকর্মী পরিচয়পত্রে বাবার নামের পাশে মায়ের নাম ব্যাবহার করার দাবি জানান। বেশ ভালো কথা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও বাবার চেয়ে মাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে গলদ অন্য জায়গায়। নারীবাদীরা যখন এই দাবীর যৌক্তিকতা উপস্থাপন করতে পশ্চিমা দেশগুলোর উদাহরণ দেয় সেখানেই আসল গণ্ডগোল। আমার মতে এখানে পশ্চিমা সমাজের উদাহরণ টেনে এনে আমাদের দেশের নারী সমাজ কে এক প্রকার অসম্মান করা হয়েছে। পশ্চিমে শিশুর পিতা কে এই ঝামেলাম না গিয়ে প্রথাগতভাবে মায়ের নাম ব্যাবহার করে। কারন অনেক সময় শিশুর পিতৃ পরিচয় নির্ণয় করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই তাদেরকে মাঝে মাঝে শিশুর পিতা নির্ধারণের জন্য ডিঅ্যানএ টেস্ট দিতে হয় ঠিক এভাবে “Does he really have his father’s eyes? “

আরেকটি উদাহরন দেয়া যাক আমরা হয়তো অনেকেই জানি যে বাংলাদেশে কিছু নিদিষ্ট স্থানে বা পল্লীতে পতিতাবৃত্তি বৈধ। কিন্তু আমরা এটাকি জানি যে আমেরিকারতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পতিতাবৃত্তি অবৈধ!! এবং সেই দেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাবসায়িক খাত হিসেবে পরিচিত “পর্ণ শিল্পে” সর্বাধিক অর্থলগ্নিকারী দেশ!!


আজকাল হলিউড-বলিউডের অধিকাংশ মুভিতে সমকামীতার সরব উপস্থিতি আমাদের দেশের তথাকথিত উত্তরাধুনিক শহুরে সমাজে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরছে। আমাদের দেশে অনেকেই জানেন না যে পশ্চিমে, ফ্যাশন, চলচিত্র, এবং বিনোদন পেশায় সমকামীদের তুলনামূলক উপস্থিতি অনেক বেশী। আর মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে চায় না। এমনিতেই বাংলাদেশর উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে খুব একটা বেশী নয়। পাপের সাগরে নিমজ্জিত এই সোডেমীর জন্য আল্লাহ্‌ কখন লুত (আঃ) এর বংশধরের মতো আপ সাইড ডাউন করে দেন সেটাই ভয় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:০৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×