পৃথিবীর সকল মহাপুরুষ এবং মহাজ্ঞানীরা এই জগৎকে মায়া বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। আমি আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় দেখিয়াছি আসলেই মায়া। স্বামী ও স্ত্রীর প্রেম যেমন মায়া বই কিছুই নয়, ভ্রাতা ও ভগ্নীর স্নেহ সম্পর্কেও তাই। যে কারণে স্বার্থে আঘাত লাগিব মাত্র—স্বামী-স্ত্রীর প্রেম বা ভ্রাতা-ভগ্নীর ভালােবাসা কপূরের মতাে উড়িয়া যায়। কাজেই তােমাকে পৃথিবীর সর্ববিষয়ে পুরােপুরি নির্লিপ্ত হইতে হইবে। কোনােকিছুর প্রতিই তুমি যেমন আগ্রহ বােধ করিবে না আবার অনাগ্রহও বােধ করিবে না। মানুষ মায়ার দাস। সেই দাসত্ব শৃঙ্খল তােমাকে ভাঙ্গিতে হইবে। মানুষের অসাধ্য কিছুই নাই। চেষ্টা করিলে তুমি তা পারিবে। তােমার ভেতরে সে ক্ষমতা আছে। সেই ক্ষমতা বিকাশের চেষ্টা আমি তােমায় শৈশবেই করিয়াছি। একই সঙ্গে তােমাকে আদর এবং অনাদর করা হয়েছে। মাতার প্রবল ভালােবাসা হইতেও তুমি বঞ্চিত হইয়াছ। এই সমস্তই একটি পরীক্ষার অংশ। এই পরীক্ষায় সফলকাম হইতে পারিলে প্রমাণ হইবে যে ইচ্ছা করিলে মহাপুরুষদের এই পৃথিবীতে তৈরি করা যায়। যদি একটি সাধারণ কুকুরকেও যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, সেই কুকুর শিকারি কুকুরে পরিণত হয়। এক জন ভালাে মানুষ পরিবেশের চাপে ভয়াবহ খুনিতে রূপান্তরিত হয়। যদি তাই হয় তবে কেন আমরা আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী মানব-সম্প্রদায় তৈরি করিতে পারিব না?
- ময়ূরাক্ষী
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:১৫