somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাদুকন্যা (ভুমিকা)

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(নতুন আরেকটা আইডিয়া মাথায় এসেছে, মানে অনেক আগেই এসেছিল। কিন্তু এখন লিখে ফেললাম। সিরিজ আকারে প্রকাশিত হবে প্রতি বৃহস্পতিবার। বিকেলে দিকে। কমেন্ট করে উৎসাহিত করবেন:D:D:D)


জাদুকন্যা
জেনারঃ ড্রামা, রোমান্স, সাই-ফাই, একশন, post-apocalyptic।


ভুমিকা


চাদের আলোয় তার বিশালদেহী শরীর চকচক করছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসে আছে সে। তার কয়েক হাত দুরে একটা খাদ আর সেই খাদের নিচে সমুদ্রের বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে ।সে তার পাশে শুয়ে থাকা দুটি শিশুর দিকে তাকাল। তারা গ্যাস মাস্ক পড়ে থাকলেও এটা বুঝতে কষ্ট হয় না যে তারা ঘুমিয়ে আছে। তাদের দিকে তাকিয়ে বিশালদেহী বড়সড় এক দীর্ঘশ্বাস ফেলল। এত কিছু হয়ে গেল তারপরেও তারা কত সুন্দর করে ঘুমাচ্ছে, দুনিয়ার আর কোনো দুশ্চিন্তা যেন তাদের উপর ভর করছে না। সে বাচ্চা দুটোর চেহারা দেখতে চাইল, কিন্তু এখন সে সময় না। তার আশে পাশে আরো সঙ্গীসাথী আছে। তারা সব তার দিকে তাকিয়ে আছে, তার কথার অপেক্ষায় আছে সবাই।
“এখন আমরা কি করব,” একটা মেয়েলী কন্ঠ বলে উঠল।
মেয়েটার কথার সাথে সাথে আশেপাশে নিরবতে ভেঙ্গে গেল। সবাই নিজের মত করে ফিসফিস করে কথা বলতে লাগল। বিশালদেহী লোকটা কিছুক্ষন তাদের গলা খাকারি দিল। সে সবার দিকে তাকাল। সবাই গোল হয়ে বসে আছে, তাদের চোখে মুখে হতাশার ছায়া দেখা যাচ্ছে। তাদের এত পরিশ্রম এত আত্মত্যাগ সব মাঠে মারা গেছে। তারা এখন কি করবে সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। এখন তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সে জানে এই সিদ্ধান্ত আগামী পৃথিবীর ভবিষৎ গড়তে সাহায্য করবে, হয় ভালো অর্থে না হয় খারাপ।
“আমরা যা ধংস করেছি এখন আমরা তা গড়ে উঠাতে সাহায্য করব।”
বিশালদেহীর এই কথা শুনে সবাই অবাক হল। তাদের অবাক হওয়ার চোখ দেখে সে স্মিত হাসি দিল, বলে উঠল, “জানি কথাটা তিক্ত শোনালেও আমাদের তা করা উচিত, ওরা আমাদের দিয়ে করালেও তাদের পাপের সাথে আমরাও পাপী।”
“কিন্তু, আমরাতো বাধ্য হয়েছি,” ফ্যাসে ফ্যাসে গলায় একজন বলে উঠল।
“জানি, কিন্তু আমরা যা করেছি তা কিন্তু তারা ধারনাই করতে পারেনি। সহজ কথা আমাদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারনে এখন... এই অবস্থা,” বিশাল দেহী শব্দটা উচ্চারন করতে চাইল না। সবাই তা বুঝতে পারল।
“তা, আমরা কি উত্তরসূরীদের কি জানাব বর্তমানের কথা, তুমি কি জানাবে এই দুই শিশুকে?” মেয়েলী গলারজন বলে উঠল।
“না,” বিশালদেহী দৃড়গলায় বলল, “এখন না, যখন সময় হবে তখন জানানো হবে, আর তোমাকেই দ্বায়িত্ব দেয়া হল।”
“কিভাবে?”
“সময় হলে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।”
বিশালদেহীর কথা কেউ ঠিক মত বুঝতে না পারলেও কেউ কিছু বলল না। তারা সবাই এই বিশালদেহীকে অনেক সম্মান এর সাথে সাথে ভয়ও করে। তাদের মধ্যে নিস্তব্ধতা বিরাজ করতে লাগল। পাহাড়ের নিচে সমুদ্রে বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই।
“তাহলে আমাদের কি করা উচিত সেটা আমি সবাইকে বলে দিচ্ছি,” বিশালদেহী সবার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমি সবাইকে বলে দিব, সবাই একে এক আসবে, আমি তখন যার যে কাজ সেটা বলে দিব।”
“আমাদের কি বিশ্বাস করা হচ্ছে না?” ফ্যাসে ফ্যাসে গলার জন বলে উঠল।
“এখানে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কিছু আসে যায় না, তোমাদের কেউ যদি আমার বিপক্ষে থাক তাহলে চলে যাও, আমি কিছু বলব না।”
“আমি রাজী, এতদিন আপনার কথা আমরা মেনে চলেছি এখনো চলব,” এবার বিশালদেহীর উল্টোপাশে বসা এখজন বলে উঠল। সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ ছাপিয়ে তার সুন্দর মিষ্টি গলার আওয়াজ শোনা গেল, সে বলতে লাগল, “আমাদের কারনেই আজ পৃথিবীর এই অবস্থা, আমাদের জন্যই আজ পৃথিবী আজ ধ্বংসের পথে। সব কিছু বিপন্নের পথে। দোষ আমাদের সবারই, কিন্তু আমাদের ক্ষমতা আছে সেটাকে ঠিক করার।”
এই কথা শোনার পর বিশালদেহী মুচকি হাসল। সে কিছু বলল না। সে সবার দিকে তাকাল, একটু আগে যাদের মধ্যে একটু হলেও দ্বিধা ভাব ছিল তা উধাও হয়ে গেছে। বিশালদেহী সবার দিকে আরেকবার ভাল করে তাকাল, তারপর বলে উঠল, “সবাই একে একে আস, যার যার দ্বায়িত্ব তাকে বুঝিয়ে দেয়া হবে, কেউ কারো কাছে নিজের দ্বায়িত্বের কথা বলতে পারবে না।”
সবাই বিশালদেহীর কথা মেনে চলল। একে একে সবাই বিশালদেহীর কাছে আসতে লাগল। সবাইকে দ্বায়িত্ব বুঝিয়ে দেবার পর সবাই যে যার মত চলে গেল, একজন বাদে।
“বাচ্চা দুটোকে কি করবে?” মেয়েলী কন্ঠের জন বলে উঠল।
“আমি তাদের বড় করব, বর্তমান সময়ের অনেক জ্ঞান তাদের জানা উচিত।”
“সেটা কি তাদের জন্য মারাত্মক ফল বয়ে আনবে না।”
“হয়তো বা হয়তো বা না, সেটা সময় বলে দিবে,” তারপর বিশালদেহী মেয়েলী কন্ঠের জনকে বলল, “অপেক্ষা কর সবই জানতে পারবে।”
“আচ্ছা কথা কি সত্যি যে তুমি ভবিষৎ দেখতে পার।”
“ভবিষৎ দেখতে পারলে আজকের দিন হয়তো দেখা হত না।”
“আসলেই তুমি অনেক রহস্যময়।”
বিশালদেহী মুচকি হেসে উঠল, চাদের আলোয় তার হাসি দেখে একটা বাচ্চার হাসির মত মনে হল। মেয়েলী কন্ঠের জন কিছু বলল না। সে সমুদ্রে ঝাপ দিল। সমুদের বিশাল ঢেউ তার জন্য কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারল না। মনে হচ্ছে সে সমুদ্রের পানিরই একটা অংশ। সে সমুদ্রের পানির ভিতর দিয়ে অজানা পথের দিকে চলতে লাগল। তার সামনে অনেক কাজ, অনেক কাজ।
বিশালদে চারিদিকে একবার তাকাল। সমুদ্রে ঢেউয়ের শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। সে বাচ্চা দুটোর দিকে তাকাল। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে। তাদের দিকে তাকাতেই সে দেখল ছেলেটার চুল কালো এবং সেটা অনেক সুন্দর।, চাদের আলোর কারনে সেই চুলের সৌন্দর্য অনেক বেড়ে গেছে। সে ছেলেটার চুলে হাত বুলাতে লাগল, তারপর সে মেয়েটার দিকে তাকাল মনে হল খালি ছেলেকেই আদর করলে তো হবে না মেয়েটাকেও আদর করা লাগবে। সে মেয়েটার বাদামী কোকড়া চুলের দিকে হাত বাড়িয়ে আদর করতে লাগল, দুজনের দিকে তাকাতেই চিন্তা করতে লাগল তার নিজের দ্বায়িত্বের কথা। অনেক বড় দ্বায়িত্ব এখন তার এবং সেটা সুষ্ঠু ভাবে সম্পুর্ন করতে হবে।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×