দরজা ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভাঙ্গল। মাথা ঘুরিয়ে দেখি বাসার মালিক ভাড়া নিতে হাজির। কেমন জানি খটকা লাগল। হয়ত ইনট্যুশন হবে। মনে হচ্ছিল বাসা ভাড়া সামনের বছর থেকে বাড়াবে।
বছর শেষে মালিকপক্ষের একটা রেওয়াজ আছে বাসা ভাড়া পাঁচশ করে বাড়ানো। সব জায়গাতেই ব্যাপারটা লক্ষনীয়। ভাড়াটিয়াদের এই বাড়তি টাকা যোগানে হিমশিম খেতে হয়। চাকুরিজীবী পরিবারে চলে অন্য দিকে খরচ সঙ্কোচনের প্রচেষ্টা। অনেকদিন এক বাসায় থাকা, বাসার প্রতি একটা অদ্ভুত মায়া পড়ে যায়। নিজের ভাবতে থাকা বাসাটা যে নিজের না সেই বোধদয় হয়।এসব ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের বাহানাগুলো হয় হাস্যকর। জিনিসপত্রের দাম বাড়তেছে,গ্যাসের দাম বাড়তি,ব্লা ব্লা।
নিজের কথায় আসা যাক। মেডিকেলের সামনে ছোট্ট একটা বাসায় থাকি। বাসা বলাটা ফুটানি হয়ে যাচ্ছে। এক রুমের চিলেকোঠার ঘর,এটাচড টয়লেট পাশে দাড়ানোর জায়গার কিচেন আর এক চিলতে বারান্দা। ওয়েস্টার্ন কান্ট্রিতে এ ধরনের বাসাকে বলা হয় স্টুডিও।
আমাদের স্টুডিওর ভাড়া সাড়ে চার হাজার। কারেন্ট বিল নিজের। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল রোদ। মাঝে মাঝে মনে হয় টাকা দিয়ে ওভেন কিনে সেটাতেই ঢুকে পড়েছি।
এট লাস্ট আমার ইনট্যুশন সত্যি হলো। আসছে জানুয়ারি থেকে পাঁচশ যোগ করতে হবে।
যাই হোক, আমি বেকার ব্যাচেলর মানুষ। বাবাই অর্থের যোগানদার। ছাড়ি বা থাকি, কিছু একটা মেনেজ করে ফেলবো।
কিন্তু যত চিন্তা হচ্ছে নওশিনদের নিয়ে। বাসাটা তাদের ছাড়তে হচ্ছে। নওশিনের বাবা ছোটখাট একটা চাকরি করেন। বাড়তি ভাড়া ম্যানেজ সম্ভব হচ্ছে না। আবার ও সাধ্যমত নতুন কোন বাসায় উঠত হবে। ধীরে ধীরে আপন করতে হবে,সাজাতে হবে মনের মতো করে। একদম নিজের মত।
তারপর? আবার বিদায় দিতে হবে। ছায়াকে, দীর্ঘদিনের জড়িয়ে থাকা মায়াকে। কারণ সিম্পল। তারা ভাড়াটে। আর ভাড়াটিয়াদের মায়া থাকতে নেই।