somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউক্রেন যুদ্ধ

১৩ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এইজন্যই আমি বলি , গনতন্ত্র কখনোই কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে না , বরং এটা বৈশ্বিক শান্তির বিষয় । আর গনতন্ত্রের হত্যাকারী প্রত্যেক স্বৈরশাসকই পৃথিবীর জন্য ভয়ংকর । এটা আবারো প্রমাণিত হলো ।



ইউক্রেন যুদ্ধ দেখিয়ে দিলো , সকল স্বৈরশাসক প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে গোপনে তারা রাশিয়াকে সমর্থন করে । মধ্যপ্রাচ্যের রাজারাও একেবারে চুপ , সবচাইতে সাংঘাতিক ব্যাপার হলো - তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রাশিয়াকে পুরো দোষ না দিয়ে উল্টো আমেরিকা ইউরোপের সমালোচনা করছে । আমি ধারণা করি ভবিষ্যতে এরদোয়ান একজন স্বৈরশাসক হবেন । পুতিন সকল স্বৈরশাসকদের এটাই বলছে যে , আমেরিকা ইউরোপের পক্ষে গেলে তোমাদের সিংহাসন থাকবে না ।



বর্তমান পৃথিবীতে ছোটো মাঝারি এবং বড়ো সাইজের স্বৈরশাসক আছেন , যারা মানুষের টুঁটি চেপে ধরে থাকে । বাংলাদেশের এক বুদ্ধিজীবী গাফফার চৌধুরী , যে ব্যাক্তি লন্ডনে বসে লন্ডনের খারাপ সমালোচনা করেও শান্তিতে শুয়ে আছে । এই শয়তানের নিকট আমার প্রশ্ন , তুমি লন্ডনের সমালোচনা না করে রাশিয়া ও চীন গিয়ে , চীন ও রাশিয়ার সামান্য খারাপ সমালোচনা করে দেখো , তোমার কি হাল হয় । আর এটাই আমেরিকা ইউরোপের সৌন্দর্য , যেখানে মত প্রকাশের এবং সকল কাজে সকল জীব পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে থাকে । আমি লোকটাকে লানত করছি , সে যেনো ব্যার্থ হয় , ইহকালে এবং পরকালে ।



প্রিয় গনতান্ত্রিক বিশ্ব , আপনাদের একত্র হতে হবে , দুর্বল গনতান্ত্রিক দেশে সর্বোচ্চ চাপ দিয়ে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে । দুর্বল গনতন্ত্রের তালিকায় ভারতও আছে , গনতান্ত্রিক বিশ্বকে বলবো ভারতকে কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না । ভারতে শক্তিশালী গনতন্ত্র না থাকলে বিশ্বব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে । তাই গনতান্ত্রিক পৃথিবীকে বলবো এখন থেকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে গনতন্ত্রের জন্য কাজ করুন এবং স্বৈরশাসকদের উপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করুন ও বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন , যাতে তারা পূর্ণ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হয় ।



মধ্যপ্রাচ্যকে গনতন্ত্রের সাহায্যকারী হিসেবে কাছে টেনে নিন এবং ফিলিস্তিনে পরিপূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন । ইউরোপীয় ইউনিয়ন তো ফিলিস্তিনের পক্ষে বিবৃতি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করতে চান , যা মোটেই কাম্য নয় । ইউক্রেন যুদ্ধে তো আপনারা শুধু বিবৃতি দিয়ে ক্ষান্ত হচ্ছেন না , অস্ত্র ও বুদ্ধি এবং বিপক্ষকে চরম অবরোধ দিচ্ছেন । তিক্ত হলেও সত্য কথা হলো - আমেরিকা এবং ইউরোপ সম্পূর্ণ সততার সাথে চলেন না এবং অনেস্টি ইজ দি বেস্ট পলিসি কথাটা মোটেই মেনে চলেন না , যদি চলতেন , তাহলে আফগানিস্তানের জনগনকে শয়তান তালেবানের হাতে ছেড়ে চলে আসতেন না ।



এখন ইউক্রেন নিয়ে বলি - সত্যিই ইউক্রেনীয়রা বীরের জাতি , চমৎকার জাতি এবং মহান জাতি । সারা বিশ্ব তাদের প্রতিরোধ দেখে অবাক । নিকট অতীতে ( ২০০ বছরের মধ্যে ) এমন মনোবল কারো মধ্যে দেখা যায়নি , এটা মহান আল্লাহর এক বিশেষ দয়া এবং মহান আল্লাহর এক মর্যাদাবান বন্ধুর বিশেষ দোয়া । আল্লাহ অবশ্যই তাঁর বন্ধুর দোয়া কবুল করেন । আমি বিশ্বাস করি ইউক্রেনীয়দের মৃত্যু ঈমানের সাথে হচ্ছে , কারণ তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জন্য লড়ছে । তাছাড়া হাদিসে আছে ( মেশকাত ৭৫, ৭৬ নম্বর হাদিস এবং হাদিস দুটোই বুখারী মুসলিমের হাদিস ) মানুষের শেষ আমল ভালো হলে , তার মৃত্যু ঈমানের সাথে হবে এবং সে জান্নাতে যাবে ।



কিছুদিন পূর্বে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইসরায়েলের পক্ষে অন্যায়ভাবে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন । আমি মুসলমানদেরকে উল্টো প্রশ্ন করবো , আপনারা ইসলামকে সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী এবং জোরজবরদস্তি করে সহ্যের চাইতে লক্ষ কোটি গুণ বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার ধর্ম হিসেবে প্রমাণ করেছেন । তাহলে ইসলাম এবং মুসলমানকে আমেরিকা ইউরোপ ভালবাসবে কেনো বা পছন্দ করবে কেনো , বরং ঘৃণা করাটাই স্বাভাবিক । আপনারা নিরীহ মানুষকে বোমা মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন , মানুষের উপর ধর্মকে চাপিয়ে দিচ্ছেন , অথচ কোরানে আছে - "ধর্মে জোরজবরদস্তি নেই" ( আল কোরান , ২ : ২৫৬ ) । তাহলে আমাদেরকে ভালবাসবে কে ? তাছাড়া আপনারা বলেন কোরান বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ , অথচ এই বিশ্বায়নের যুগে গত ২০০ বছর ধরে সেই সনদ আপনারা তৈরি করতে পারেন নাই । তাহলে মুসলমানদেরকে ভালবাসবে কিভাবে , বরং ঘৃণা জিদ হিংসা করাই স্বাভাবিক ।



আলহামদুলিল্লাহ , মহান আল্লাহর দয়ায় আমি , কোরান সুন্নাহর আলোকে বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ দেখিয়েছি , যা আমার লেখাগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ । তাছাড়া ইউরোপ আমেরিকা ইসলাম ও মুসলমানকে ঘৃণা করার কারণ হলো ইসলাম ফোবিয়া , আর এই ইসলাম ফোবিয়া তৈরি করেছে মৌলবাদী ও জঙ্গিবাদীরা । ইসরায়েল সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে ।



ইউক্রেনীয়দের বলবো কিয়েভের পতন হলেও আপনারা কিছু এলাকা দখলে নিয়ে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যান , আসলে আপনারা হারেননি , রাশিয়ার মতো পরাশক্তির সাথে যে প্রতিরোধ দেখিয়েছেন , তা মানবজাতির জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ । এই যুদ্ধে আপনারা রাশিয়াকে হারিয়ে দিয়েছেন , কারণ রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে । তারা একা হয়ে গেছে । ন্যাটো এবং ইউরোপকে বলবো আপনারা অস্ত্র এবং বুদ্ধি দিয়ে সহযোগিতা চালিয়ে যান , তবে সাবধানে পা ফেলবেন , সামান্য ভুল হলেই চরম বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে । মহান আল্লাহ আপনাদের সহায় হউন । কারণ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়াতেই হবে ইনশাআল্লাহ ।



ন্যাটো এবং ইউরোপকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং মহান সৃষ্টিকর্তা আপনাদের কল্যাণ করুন , বিশেষ করে বাইডেনকে । আপনারা অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে ইউক্রেন যুদ্ধ সামাল দিচ্ছেন । খুব সাবধানে চলুন , কারণ সামান্য ভুল হলেই বড়ো বিপদ ঘটে যেতে পারে । তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়তো ঘটবে, তবে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে , বিশ্বযুদ্ধকে যতো দূরে রাখা যায় , ততই আমাদের কল্যাণ । তাছাড়া বর্তমান যুদ্ধ নিয়ে এবং রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে সকল স্বৈরাচাররা ব্যাপক প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে , এটা নিয়েও গনতান্ত্রিক বিশ্বকে গভীরভাবে ভাবতে হবে এবং সমুচিত জবাব দিতে হবে ।



আমার পরিবারের একটি কাহিনি বলে শেষ করবো । বাংলাদেশে কিছুদিন ধরে সরকারি ভোট হয় না , কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় ( যদিও এবারের ইউপি নির্বাচনকে খুনোখুনির নির্বাচন বলা যায় ) । আমার পরিবারের সবাই ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে , আমি কখনোই পরিবারের কাউকে নির্দিষ্ট করে কোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে বলি না এবং পরিবারের কেউ কাউকে জোর করে না এবং মত চাপিয়ে দেয় না , তবে আলোচনা করি কাকে ভোট দেওয়া যায় । পরে দেখা যায় একজনের ভোটের সাথে অন্যজনের ভোট মিলছে না । এমনকি আমার স্ত্রীর সাথেও আমার ভোট মিলে না । আর এটাই হলো পূর্ণ গনতন্ত্র এবং পূর্ণ মানবাধিকার ।



ইউক্রেন একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র , সে কার সাথে জোট করবে এবং কার সাথে জোট করবে না , সেটা একান্তই তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার এবং তার পূর্ণ অধিকার , সেখানে অন্য কারো নাক গলানো দূরে থাক মত দেওয়াও অপরাধ , আর যুদ্ধ , সেটাতো প্রশ্নই আসে না । তবে রাশিয়ায় পূর্ণ গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলে , ন্যাটোর সামরিক উপস্থিতি কমানোর জন্য রাশিয়া অনুরোধ করতে পারে , আলোচনা করতে পারে এবং কুটনীতি করতে পারে । কিন্তু স্বৈরশাসক থাকলে ন্যাটো তো সামরিক স্থাপনা করবেই ।



( জাহাঙ্গীর আলম ) ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×