অধিকাংশ বাংলাদেশী আমেরিকানরা ঐতিহ্যগতভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক। তবে রিপাবলিকান পার্টিরও কিছু সমর্থক আছে।
অধিকাংশ বাংলাদেশী আমেরিকান দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকাতে বসবাস করলেও তারা ধর্মীয় এবং সামাজিক রক্ষণশীলতার কারণে আমেরিকার মূল স্রোত ধারার সাথে তেমন একটা মিশে না। ফলে আমেরিকান সমাজের মূল সমস্যা এবং আলোচিত বিষয়গুলি তাদেরকে প্রভাবিত করে না অথবা তারা এই বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দেয়া না। যেমন নির্বাচনের সময় অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন, পররাষ্ট্র নীতি ইত্যাদি নিয়ে অধিকাংশ আমেরিকান ভোটার বিবেচনা করলেও বাংলাদেশী আমেরিকানরা তেমন গুরুত্ব দেয় না। তাছাড়াও কিছু সামাজিক বিষয় যেমন, গর্ভপাত, সমকামিতা, মাদক সমস্যা, গান কন্ট্রোল ইত্যাদি বিষয়গুলি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হয়। কিন্তু অধিকাংশ বাংলাদেশী মার্কিন এই সামাজিক বিষয়গুলিকেও অগ্রাধিকার দেয় না। বরং এর পরিবর্তে আমেরিকার বৈদেশিক নীতি, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং মুসলিম দেশগুলিতে আমেরিকা কি ভূমিকা পালন করছে তার উপর নজর দেয়। তাছাড়া বেশিরভাগ বাংলাদেশি আমেরিকানরা মূলধারার আমেরিকান রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে না ফলে প্রার্থীর ক্যারিশমা, যোগ্যতা বা দক্ষতা দ্বারাও তারা প্রভাবিত হয় না।
এইবার নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশী আমেরিকানরা তাদের পছন্দের একটা বিষয় নিয়ে বেশ সক্রিয় হয় উঠেছে। সেটা হচ্ছে ইসরাইল হামাস সংঘর্ষ। সম্প্রতি ইসরায়েলের সাথে গাজা সংঘাতের কারণে বাংলাদেশি আমেরিকানরা নিজেদেরকে একটি কঠিন অবস্থানে খুঁজে পেয়েছে। আমেরিকার মুসলিম ভোটারের সংখ্যা এক শতাংশের কম হলেও তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা বাইডেনকে তার মধ্যপ্রাচ্য নীতির কারণে সমর্থন করবেন না এবং ভোট দিবে না। তারা বাইডেনকে যুদ্ধ অপরাধী, গণহত্যাকারী, নারী ও শিশু হত্যাকারী হিসাবে ঘোষণা করেছে। তবে তারা এটাও বিশ্বাস করেন না যে ট্রাম্প মুসলিম স্বার্থের কথা চিন্তা করেন। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশি আমেরিকানদের একটি অন্ধ বৃত্তে আটকে ফেলেছে। আসন্ন নির্বাচনে তারা কাকে ভোট দেবে তা নিশ্চিত নয়।
অন্ধ বৃত্তে আটকা পড়ার কারণে তারা ভোট না দিলে তা ফলাফলের উপর প্রভাব ফেলতে পারবে না। কারণ আমেরিকান মুসলিমদের ভোট এক শতাংশেরও কম।
যাইহোক এই ধরণের রক্ষণশীল নীতি এই সম্প্রদায়কে আমেরিকার সমাজ ব্যবস্থায় আরও প্রান্তিক করবে এবং মূলধারার আমেরিকান রাজনীতি থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৩৫