আমেরিকাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হিসাব থেকে দেখা যায় জানুয়ারি ১, ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ৩১, ২০২০ পর্যন্ত উভয় প্রার্থী মোট ৪.১ বিলিয়ন ডলার নির্বাচনের জন্য খরচ করেছেন।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে:
১. বিজ্ঞাপনের খরচ:
ব্যাপক সংখ্যক ভোটারের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রার্থীদের টিভি, রেডিও এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হয়। বিজ্ঞাপনের খরচ অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
২. ভ্রমণ এবং ইভেন্ট:
ইভেন্ট, সমাবেশ এবং তহবিল সংগ্রহকারীদের হোস্ট করতে প্রার্থীদেরকে সারা আমেরিকা জুড়ে ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করতে হয়। এই ভ্রমণের জন্য পরিবহন খরচ, ভেন্যু ভাড়া এবং কর্মীদের জন্য তহবিল প্রয়োজন হয়।
৩. স্টাফ এবং পরামর্শদাতা:
প্রচারাভিযানের জন্য কর্মী, পরামর্শদাতা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করতে হয়, যেমন পোলিং এজেন্ট, মেসেজিং করার কর্মী, ভোটার হতে এবং ভোটারদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করতে কর্মী ইত্যাদি। এই সব স্টাফ এবং পরামর্শদাতাদের বেতন বাবদ অনেক টাকা খরচ করতে হয়।
৪. গ্রাউন্ড গেম:
সমর্থকদেরকে একত্রিত করে প্রার্থীর পক্ষে জোয়ার সৃষ্ট করার জন্য একটি শক্ত গ্রাউন্ড গেম তৈরি করতে হয়। এই কাজগুলি যারা করে তাদের পিছনেও একটা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়।
৫. আইনের বাধ্যবাধকতাগুলি পূরণ করা:
প্রচারাভিযানগুলিকে অবশ্যই আইন অনুসরণ করে করতে হবে। আইন ঠিক মত মানা হচ্ছে কি না তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য প্রতিনিয়ত রিপোর্টিং করতে হবে এবং জনসমক্ষে তা প্রকাশ করতে হবে। এই প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। অসংখ্য আইনজীবী, আইন বিশেষজ্ঞ, একাউন্টেন্ট প্ৰভৃতি বিশেষজ্ঞ দল এই লক্ষ্যে কাজ করে। এই সব বিশেষজ্ঞদের ফি বাবদ বিপুল পরিমাণ খরচ হয়।
৬. তহবিল সংগ্রহের জন্য খরচ:
তহবিল সংগ্রহ করতে যেয়ে অনেক তহবিল খরচ হয়। প্রার্থী নিজে তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানগুলিকে আয়োজন করে। এই সব অনুষ্ঠান আয়োজন আবার ব্যয়বহুল। অনুষ্ঠানের জন্য হল ভাড়া এবং কর্মী নিয়োগ দিতে হয়।
৭. দীর্ঘ প্রচারাভিযান চক্র:
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রচারাভিযান সাধারণত অন্যান্য দেশের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী হয়। কম পক্ষে দুই বছর আগে থেকেই প্রচারণা শুরু হয়ে যায়। তাই এত দীর্ঘ সময় ধরে প্রচারণা চালানোর জন্য খরচের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়।
৮. জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়:
আমেরিকায় বসবাস, যাতায়াত, ভেন্যু ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিশেষজ্ঞদের ফি ইত্যাদি খরচ তুলনামূলক ভাবে বেশি। যার মানে হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচারণার অবকাঠামো বজায় রাখতে এবং ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করার জন্য অনেক খরচ করতে হয়।
এইসব কারণে আমেরিকাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খরচ এত বেশি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৫৯