somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে একটি সম্ভাব্য স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির সম্ভাবনা

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০২০ সালে সম্পাদিত আব্রাহাম চুক্তি অনুসরণ করে ২০২৪ সালে ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে একটি সম্ভাব্য স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির সম্ভাবনা কতটুকু এবং চ্যালেঞ্জগুলি কী কী?

২০২৪ সালে ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির সম্ভাবনা কতটুকু তার ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। কারণ একদিকে যেমন চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার দৃঢ় সম্ভাবনা আছে, আরেক দিকে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জও আছে।


সম্ভাবনা:

১. আঞ্চলিক ঘটনাপ্রবাহ:
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক প্রভাব বৃদ্ধির কারণে সৌদি আরব এবং ইসরায়েল উভয় রাষ্ট্রে উদ্বেগ অনেক বেড়ে গেছে। উভয় দেশের একই ধরণের উদ্বেগ দেশ দুইটিকে আরো পরস্পরের কাছে নিয়ে এসেছে। এতে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তির সম্ভাব্য ভিত্তি তৈরি করেছে।

২. অর্থনৈতিক সুবিধা:
উভয় দেশ মনে করে যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে দুই দেশের পর্যটন, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এতে উভয় দেশে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।


৩. আমেরিকার প্রভাব:
আমেরিকার প্রশাসন দুই দেশের সম্পর্ককে স্বাভাবিকীকরণের জন্য সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অব্যাহত ভাবে আমেরিকার আগ্রহ উভয় পক্ষকে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে উৎসাহিত করতে পারে।

৪. আব্রাহাম অ্যাকর্ডস এবং এর প্রভাব:
ইসরায়েল এবং বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্র, যথা সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো, সুদান এর মধ্যে সফলভাবে স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি স্বাক্ষরের পর ঐ অঞ্চলের দেশগুলি ইসরাইলের সাথে ঐতিহাসিক উত্তেজনা কাটিয়ে উঠতে এখন অনেক বেশি ইচ্ছুক।


চ্যালেঞ্জ:

১. ফিলিস্তিন ইস্যু:
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত অবসানের কোন অগ্রগতি না হওয়া সৌদি আরবের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিন সমস্যা ঐ অঞ্চলের জন্য একটা বড় ইস্যু। সৌদি আরব এমন কোন কিছু করতে পারবে না যা ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। এই ধরণের কিছু করলে সৌদি আরব অভ্যন্তরীণ ভাবে এবং বৃহত্তর আরব বিশ্বের অভ্যন্তরীণ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হবে।

২. দুই দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি:
সৌদি আরব এবং ইস্রায়েল উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ কোন কোন রাজনৈতিক দল এবং শক্তি স্বাভাবিককরণের বিরোধী। অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলির পূর্ণ সমর্থন পেতে হলে সতর্ক কৌশল এবং ছাড়ের প্রয়োজন হবে।

৩. ধর্মীয় সংবেদনশীলতা:
উভয় রাষ্ট্রের কিছু ধর্মীয় গ্রূপ সৌদি-ইসরাইল সম্পর্ক স্বাভাবিককরণকে বিতর্কিত বলে মনে করে। এই গ্রূপগুলির সম্মতি আদায় করা বেশ কঠিন এবং চ্যালেন্জিং কাজ।

৪. ইরানের প্রতিক্রিয়া:
সৌদি ইসরাইল সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে গেলে ইরানের উদ্বেগ বেড়ে যাবে। ইরান আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। এতে আঞ্চলিক উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে। ইরান বর্তমানে ছয়টি দেশে ১২টি সশস্ত্র সংগঠন পরিচালনা করছে, যেমন--বাহরাইনে আল-আশতার ব্রিগেড, ইরাকে কাতাইব হেজবুল্লাহ, বদর অর্গানিজশন, আছাইব আহলে আল হক, লেবাননে হেজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনে হামাস, প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ, সিরিয়াতে ফাতেমিয়ান ব্রিগেড, জায়নাবিয়্যুন ব্রিগেড, কুয়াত আল রিধা, বাকির ব্রিগেড এবং ইয়েমেনে হুতি আন্দোলন। এই সংগঠনগুলি এই অঞ্চলকে অনেক বেশি অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।


সামগ্রিক ভাবে:

যদিও ২০২৪ সালে সৌদি এবং ইসরাইলের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তির সম্ভাবনা অনেক অনিশ্চিত, তারপরেও উভয় পক্ষের জন্য সম্ভাব্য সুবিধা এবং চলমান ঘটনা প্রবাহ থেকে ধারণা করা যায় যে চুক্তির একটি সম্ভাবনা আছে। যাইহোক, বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যু এবং উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধিতার বিষয়গুলি কাটিয়ে উঠতে পারলে একটি চুক্তি হতে পারে।

এখানে উল্লেখ্য যে বিষয়টির ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং এটি একটি জটিল সমস্যা। বিষয়টি সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা পাওয়ার জন্য এই লেখা। যারা বিষয়টি আরও সূক্ষ্ম ভাবে বুঝতে চান তারা আরও গবেষণা এবং বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করে দেখতে পারেন।

তথ্য যাচাই, গবেষণা এবং বিশ্লেষণের জন্য এআই এর সাহায্য নেয়া হয়েছে।
সূত্র: The Jerusalem Post, Saudi Gazette, Al-Arabiya ইত্যাদি।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৩৭
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×