somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্র মাতা

১১ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অবশেষে সুযোগ দিয়েছে ওরা আমাকে। ধন্য ওদের। ধন্য ব্লগ-বিধাতা। ইচ্ছে করছে রবীন্দ্র-ভাষায় ওদের বলি,

আমার জীবনপাত্র উচ্ছলিয়া মাধুরী করেছ দান
তুমি জান নাই, তুমি জান নাই,
তুমি জান নাই তার মূল্যের পরিমাণ।
:((

যারে জান নাই, যারে জান নাই, যারে জান নাই
তার গোপন ব্যথার নীরব রাত্রি হোক আজি অবসান।
;)

লেখনীতে অনীহা। আমার ভাষাজ্ঞানের অসমৃদ্ধতা ও অদক্ষতা, আবার বোধগুলোকে ভাষায় রূপান্তরের পর ভাষার নিজস্ব বিকাশযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ ও প্রশ্ন। আদিম কথা।

কি লেখা যায়? হুমম......উপযুক্ত দিনক্ষণ। “বিশ্ব-মাতৃদিবস”। কঙ্কালটা এখনও ঘোরাঘুরি করছে। হোক না একদিন বা দু’দিন, কি আসে যায়? পশ্চিমের শুভ্র ককেশিয়ানদের মাতৃভক্তির পুনর্জাগরণ। পুঁজিবাদী উৎপাদনশীলতার বুকে জীবন ঠুকে দিতে দিতে কিছু ক্লান্তি। পুনর্মিলনীর খায়েশ। আশ্রমে কি জননী? লং-ড্রাইভ। জন্মদাত্রী। উপহার। দোকানের শেলফ থেকে খুঁজে বের করা ঠিক কার্ডটা। মোম। আহার। কোলাহল। চুমু। আত্মতৃপ্তি এবং মোক্ষপ্রাপ্তি, দুটোই। কি সাংঘাতিক দক্ষতা ওদের !

পূর্বের এক কৃষ্ণকায় ককেশিয়ানের কিন্তু ব্লগেই পালিত দিবস। কি সাংঘাতিক অদক্ষতা আমার!

পড়ছিলাম সিলভিয়া প্লাথের “মেডুসা”। না, ঠিক মাতৃ-দিবস উপলক্ষে এটাকে টেনে নিয়ে আসা উচিত হবে না, যখন পুরো কবিতা জুড়ে শুধুই জন্মদাত্রীর সাথে এক অন্ধকারাচ্ছন্ন বিচ্ছিন্নতার ব্যঞ্জনা।

তাহলে এই মুহূর্তে মনে পড়ছে এলেন গিন্সবার্গের সেই Kaddish এর কথা। Kaddish আরামায়িক শব্দ, মানে হচ্ছে পবিত্র। ইহুদী ধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান প্রার্থনা হচ্ছে এই Kaddish। এই প্রার্থনা ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন শোকানুষ্ঠানে, বিশেষভাবে মৃতের শেষকৃত্য পালনে।

মা’র সাথে কি সম্পর্ক?

বলছি। গিন্সবার্গের মা; নাওমি যখন ১৯৫৬ সালে মারা যান, ইহুদী রাব্বাই বা ধর্মযাজকরা তার মায়ের মৃতদেহের উপর এই ধর্মীয় Kaddish পড়তে অস্বীকৃতি জানায়। কারন হয়তোবা গিন্সবার্গের নিজস্ব মুক্ত-চিন্তা এবং তার খ্রিষ্টীয় ও অবিশ্বাসী সহবন্ধুদের উপস্থিতি। ক্রোধে-দুঃখে আত্মহারা গিন্সবার্গ নিজেই লিখে ফেলেন তার নিজস্ব Kaddish, শুধুমাত্র তার মা’র জন্য।

নিজের পৈত্রিক ইহুদী ধর্মের ঐ Kaddish’এ যেখানে মৃত্যু নিয়ে কোনো ধারণার অবতারণা ছিল না, গিন্সবার্গ তার Kaddish কবিতার পংক্তিতে-পংক্তিতে ভরে তোলেন মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন আর চিন্তা। নিজস্ব গিন্সবার্গিয়ান ভঙ্গিতে লেখা তার এই কবিতা। চিরাচরিত কবিতা রচনার কাঠামো বা আদলকে পাত্তা দিতেন না তিনি। পড়তে হয়েছে অনেক সমালোচনার মুখে। কিন্তু তার কাছে এটাই ছিল খোলামেলা, পরমানন্দদায়ক, সহজাত কবি প্রতিভার স্ফুরণ।

যাই হোক। দীর্ঘ এই গিন্সবার্গীয় Kaddish। আর অলস এই আমি। তারপর রয়েছে আমার ভাষাজ্ঞানের অসমৃদ্ধতা ও অদক্ষতা। আবার কবিতার অনুবাদ? অট্টহাসি। তাই শুধু কিছু পংক্তির ভাবানুবাদ।

----------------------
পবিত্র




বিস্ময়কর এখন তোমার কথা ভেবে, তোমার প্রস্থান আঁটসাট অন্তর্বাস আর চোখগুলো ছাড়াই, যখন আমি হাঁটছি সূর্যালোকিত গ্রীণউইচ গ্রামটির ফুটপাত দিয়ে।

ম্যানহ্যাটানের শহরতলী, নির্মল শীতের দুপুর, আর আমি জেগে ছিলাম সারা রাত, কথা বলছিলাম, কথা বলছিলাম, উচ্চস্বরে খ্যাডিস পড়ছিলাম, শুনছিলাম রে-চার্লসের ব্লুজ
গ্রামোফোনটার দিকে তারস্বরে চিৎকার করে।

ছন্দোময় ছন্দোময় – আর তোমার স্মৃতি আমার মাথার ভেতরে তিন বৎসর পরেও –
আর চিৎকার করে পড়ছি এডোনিস’এর শেষ বিজয়োন্মত্ত পংক্তিগুলো – কাঁদছি, উপলদ্ধি করে কিভাবে আমরা কষ্ট পাই......




আমি তো আগে থেকে জানতেই পারি নাই তুমি কি অনুভব করেছিলে – কোন সেই হাঁ করা বীভৎস কদর্য মুখটা ধেয়ে এসেছিল – তোমার দিকে – তুমি তৈরী ছিলে তো?

কোথায় যাওয়ার জন্য? ঐ অন্ধকারে – ঐ – ঐ ঈশ্বরের কাছে? একটা দীপ্তিমান ঔজ্জ্বল্য? শূণ্যতার ভেতরে বিরাজমান এক প্রভু? কল্পনার সেই কৃষ্ণকায় মেঘের ভেতরের চোখটার মতন? তাহলে এডোনাই শেষ পর্যন্ত, তোমার সাথে?

আমার চিন্তারও বাইরে! অনুমান করতেও অক্ষম! নিছক কবরের ঐ হলদেটে মাথার খুলিটাই তো শুধু নয়, অথবা বাক্সভর্তি ঐ কীটের ধূলো, আর একটা বিবর্ণ ফিতে – মরণ – জ্যোতিশ্চক্রের মাথা – বিশ্বাস করা যায়?




Strange now to think of you, gone without corsets & eyes, while I walk on the sunny pavement of Greenwich Village.

downtown Manhattan, clear winter noon, and I've been up all night, talking, talking, reading the Kaddish aloud, listening to Ray Charles blues shout blind on the phonograph

the rhythm the rhythm--and your memory in my head three years after-- And read Adonais' last triumphant stanzas aloud--wept, realizing how we suffer...




I didn't foresee what you felt--what more hideous gape of bad mouth came first--to you--and were you prepared?

To go where? In that Dark--that--in that God? a radiance? A Lord in the Void? Like an eye in the black cloud in a dream? Adonoi at last, with you?

Beyond my remembrance! Incapable to guess! Not merely the yellow skull in the grave, or a box of worm dust, and a stained ribbon--Deaths- head with Halo? can you believe it?



পুরো কবিতাটা পড়তে চাইলে...........

[আমার প্রথম পাতার প্রথম লেখা উৎসর্গ করছি ইমন জুবায়েরকে]
[লেখাটা প্রথম পাতায় যায়নি, তবুও ইমন ভাইকেই !]
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৩
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×