ফেইসবুকে আজব অভিজ্ঞতা ০১ -
মেসেজ দিয়ে বলে ভাই রেকুয়েস্ট পাঠিয়েছি একসেপ্ট করেন প্লিজ। এড করার কিছুদিন পরে দেখা যায় সেই আমারে আনফ্রেন্ড করে তার ফলোয়ার বানাইয়া রাখছে।
ফেইসবুকে আজব অভিজ্ঞতা ০২ -
মেসেজ দিয়ে বলবে - আমার ফ্রেন্ড লিস্টে আপনে এতদিন ধরে ঝুলে আছেন অথচ আমার স্ট্যাটাসে/ ছবিতে কোন লাইক দেন না, কমেন্ট করেন না! উত্তরে লেখি - ভাই লাইক বা কমেন্ট করার মত স্ট্যাটাস দেন, তখন লাইক/ কমেন্ট দিমুনে। সাথে সাথে আনফ্রেন্ড এবং মাঝেমাঝে ব্লক।
ফেইসবুকে আজব অভিজ্ঞতা ০৩ -
কেউ হয়ত মেসেজ দিল, আমি হয়ত টাইম মত রিপ্লাই করতে পারলাম না। পরের মেসেজে লিখবে - আমেরিকায় থাকেন, তাই ভাব দেখান। বলেই ব্লক মারে।
এক চোর ফেইসবুক সেলিব্রেটি (!)
কিছুদিন আগে একটা ছেলে আমারে মেসেজ দিয়ে বলল আমার ফ্রেন্ড হতে চায়। আমার লেখা সে ব্লগে পড়ছে। আমার লেখা তার খুব ভালো লাগে ব্লাব্লাব্লা। সেও কানামাছি আর কর্পোরেট ভালবাসা নামক ব্লগে ছোট গল্প লিখে। সে আমারে তার কিছু গল্প পড়ার অনুরোধ করল এবং সাথে সাথে মেসেজে কয়েকটা গল্পের লিংকও দিলো। আমি তার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করলাম।
আমি তার টাইম লাইনে গিয়ে প্রথমে তার ফলোয়ার আর লাইক সংখ্যা দেখে কিছুটা টাসকি খাইলাম কারণ তার ৪ হাজারের উপরে ফলোয়ার, স্ট্যাটাস প্রতি লাইক ৩০০ এর উপরে। পরিসংখ্যান দেখে মনে হলো সেলিব্রেটি লেভেলের পাবলিক। কিন্তু টাসকির পরিমানটা আরো বেড়ে গেল যখন দেখলাম তার টাইমলাইনের অর্ধেকেরও বেশি লেখা আমার ফেইসবুক স্ট্যাটাস, আমার কবিতা আর গল্প দিয়ে ভরা। আমি তারে জিজ্ঞেস করলাম ভাই এই লেখাগুলা কার। এটা জিজ্ঞেস করার সাথেসাথে সে আমারে ব্লক দিলো। তারপর আমি আমার কিছু ক্লোজ মানুষের সহায়তায় আমার কিছু লেখা তার টাইম লাইন থেকে ডিলেট করালাম। গত রাতে আমার এক কাছের ছোট ভাই মেসেজ দিয়ে জানালো সেই ছেলেটা নাকি এখন আরও বেশি করে আমার লেখা তার নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছে।
সে শুধু আমার লেখা না আরও অনেকের লেখাও নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। সে ছেলেটা আমার লেখা তার নিজের নামে চালাচ্ছে সেটা নিয়ে টেনশন লাগছে না, টেনশন লাগছে এই ভেবে যে - কিছুদিন পরে হয়ত আমার নিজের লেখার জন্য স্বয়ং আমাকে চোর বলা হতে পারে।
চোর ফেইসবুক সেলিব্রেটির (!)লিংক -
https://www.facebook.com/nirneyo.somikoron
সবশেষে সবার জন্য মজাদার ডিজার্ট
ফেইসবুকে লাইক আর কমেন্ট ভিক্ষা দেখতে দেখতে টায়ার্ড হয়ে যখন ভাবছিলাম- ফেইসবুকতো দুনিয়াতে ভিক্ষুকদের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতাছে। ঠিক সে সময় নিচের প্যারেডিটা মাথায় আসলো! মনে হল এভাবে চললে তো দুনিয়া ভিক্ষুকদের দখলে যেতে বেশি দেরি না।
তোমার ফেসবুকে লাইকের এত অভাব কেন?
আমি বলছি না চ্যাট করতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য ফেইসবুকে অপেক্ষায় থাকুক,
শুধু আমার ফেইসবুকের স্ট্যাটাসে লাইক দেবার জন্য ।
অন্যের স্ট্যাটাসে লাইক দিতে দিতে আমি এখন ক্লান্ত ।
আমি বলছি না চ্যাট করতেই হবে, আমি চাই
কেউ আমাকে পোক দিক। আমি চ্যাটের উইন্ডো খোলে
কাউকে মনিটরের সামনে বসে থাকতে বলছি না,
আমি জানি, এই ফেইসবুকের যুগ
নারীকে মুক্তি দিয়েছে পার্কে লুকিয়ে ডেটিং করার দায় থেকে।
আমি চাই কেউ একজন আমাকে ট্যাগ করে জিজ্ঞেস করুক :
আমার লাইক লাগবে কি না, কমেন্ট লাগবে কি না,
প্রাইভেট গ্রুপের আড্ডার সঙ্গে আরও একটা
তেলে চুপচুপ রোমান্টিক মেসেজ লাগবে কি না।
গ্রুপ খোলা, পেইজ খোলা সেটা আমি নিজেই পারি ।
আমি বলছি না চ্যাট করতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন শুধু আমার ফেইসবুক স্ট্যাটাস শেয়ার দিক।
কেউ আমাকে কিছ্রু ছবি ট্যাগ করুক।
স্ট্যাটাসের ট্যাগ সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক:তোমার ফেসবুকে লাইকের এত অভাব কেন?'
_____________________________________________
প্যারেডি অফ তোমার চোখ এত লাল কেনো - নির্মলেন্দু গুণ !
(প্যারেডিটা ২০১২ সালের আগস্ট মাসে লিখা)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৫৭