somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পঞ্চগড় ও দিনাজপুরে আ’লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ২০ : দরপত্র দাখিল নিয়ে বিরোধ

০৯ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে ফারুক হোসেন (২২) নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছে। এদিকে দিনাজপুরে কারাগারে ব্যারাক নির্মাণের দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে আ’লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। নিহতের বাড়ি শহরের মিঠাপুকুর এলাকায়। তার বাবা আকবর আলী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গাড়িচালক।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি অংশ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবু তোয়াবুর রহমানের বাড়ি ভাংচুর করেছে। তারা ঢাকা-তেঁতুলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে। শহরে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, গতকাল ছিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১০টি খাস পুকুর ইজারার দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। যুবলীগ কর্মী দীপু, মোস্তফা, ছাত্রলীগ কর্মী সোহেল, ফিরোজ, আনোয়ার, জুয়েল, ফরহাদ গ্রুপ দুপুরে দরপত্র দাখিল করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃস্থানীয় একটি অংশ এবং যুবলীগ কর্মী গুড় বাবু, রিংকু, আমিনুর, স্বাধীন, ছাত্রলীগ কর্মী হৃদয়, লাবু, লিটন তাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও চিত্কার চেঁচামেচি হয়। বাধা উপেক্ষা করে তারা দুপুরে ইউএনও অফিসে দরপত্র দাখিল করতে যায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা আবু তোয়াবুর রহমান, কৃষকলীগ নেতা আমিরুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা জুলফিকার, রাজ্জাক, মকলেছ, ছাত্রলীগ নেতা রকি আবারও তাদের মৌখিক বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে আবার তারা ইউএনও অফিসে দরপত্র দাখিল করে।
আওয়ামী লীগ নেতা আবু তোয়াবুর রহমান, কৃষকলীগ নেতা আমিরুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা জুলফিকার, রাজ্জাক, মকলেছ, ছাত্রলীগ নেতা রকির উপস্থিতিতে যুবলীগ কর্মী গুড় বাবু, রিংকু, আমিনুর, স্বাধীন, ছাত্রলীগ কর্মী হৃদয়, লাবু, লিটনের সঙ্গে যুবলীগ কর্মী দীপু, মোস্তফা, ছাত্রলীগ কর্মী সোহেল, ফিরোজ, আনোয়ার, জুয়েল, ফরহাদের কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ বাধে। এতে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন ও যুবলীগ কর্মী আমিনুর গুরুতর আহত হয়। তাদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাদের ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে ফারুকের মৃত্যু হয়।
ফারুকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ একটি অংশ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবু তোয়াবুর রহমানের বাড়ি ভাংচুর করে। পরে তারা তেঁতুলিয়া-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজাহারুল হক প্রধানও পঞ্চগড় আসার পথে অবরোধে পড়েন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল।
নিহত ফারুকের ভাই ফরিদ হোসেন জানান, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবু তোয়াবুর রহমানের নির্দেশেই আমার ভাইকে মারা হয়েছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীয় একটি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা আবু তোয়াবুর রহমান, যুবলীগ নেতা জুলফিকার ও সেলিম দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডারসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছে। এরা পঞ্চগড়ের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান বলেন, বিষয়টি আমি এখনও পুরোপুরি শুনিনি।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুর জেলা কারাগারে বিল্ডিং নির্মাণের প্রায় ১৪ কোটি টাকার দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র ক্ষমতাসীন আ’লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। ২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিনাজপুর গণপূর্ত বিভাগে জেলা কারাগারে কয়েদি ব্যারাক নির্মাণে প্রায় ১৪ কোটি টাকার দরপত্র জমা দেয়ার গতকাল ছিল শেষদিন। সকাল থেকে আওয়ামী লীগের কাঞ্চন পক্ষ সাধারণ ঠিকাদারদের দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের আশফাক পক্ষ দরপত্র জমা দিতে এলে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চাপাতি, হকিস্টিক, দা, কুড়াল নিয়ে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়। উপশহর এলাকার জামান ও বালুবাড়ি এলাকার আনন্দকে গুরুতর অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নজিবর রহমান জানান, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও সাধারণ ঠিকাদাররা শান্তিপূর্ণভাবে দরপত্র জমা দিয়েছেন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×