somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফারাক্কা থেকে টিপাইমুখ বাঁধ

২৮ শে মে, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশ প্রেম কোন জাতির বেশি আর কোন জাতির কম এই দাবী আমি আগে বিশ্বাস করতাম না । মা তার কোন সন্তানকে বেশি স্নেহ করে আর অন্যটাকে কম আদর করে এ কথা যেমন বিশ্বাস করার অযোগ্য তেমনি কোন জাতির দেশ প্রেম বেশি আর কোন জাতির দেশ প্রেম কম এ কথা আগে আমি কখনো মেনে নিতে পারি নি । কিন্তু বয়স ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির পাশাপাশি যখন দুনিয়া দেখার সৌভাগ্য আমার হলো , পৃথিবীর বহু জাতির মানুষের সাথে যখন ওঠা বসা করার সুযোগ পেলাম তখন থেকে বুঝতে পারলাম দেশ প্রেমও আপেক্ষিক । দেশ প্রেম যে আপেক্ষিক তা বুঝার জন্য সুদূর অতিতে যাওয়ার দরকার নেই । বর্তমান বিশ্বেই অনেক জাতি আছে যারা নিজের ব্যক্তিগত সম্পদের চেয়ে দেশের সম্পদকে বেশি প্রধান্য দেয় । ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থ তাদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ । আবার এই বিশ্বের বুকে এমন জাতিও বিদ্যমান যারা শুধু ব্যক্তি স্বার্থ নিয়েই ব্যস্ত , তাদের কাছে জাতীয় স্বার্থের বিষয়টি সুস্পষ্ট নয় । এটা এখনো তাদের কাছে সংগায়িত হয় নি ।
উদাহরণ হিসেবে দঃ এশিয়ার দুটো দেশ ও জাতির কথা আমি এখানে উল্লেখ করেই শেষ করবো । ভারত নামক দেশটির প্রতি আমাদের দেশের কিছু মানুষের প্রচন্ড আকর্ষন রয়েছে আবার অনেকের রয়েছে বিকর্ষন । মাঝামাঝি কিছু আছে কিনা সন্দেহ আছে । আমার কাছে চরম আকর্ষন আবার চরম বিকর্ষন দুটোই অগ্রহনযোগ্য । সে ব্যাখ্যা দিতে গেলে লেখা দীর্ঘায়িত হবে । এখানে যে কথাটি বলা আমার উদ্দেশ্য তা হলো ভারত যে শুধু আয়তনে একটি বিশাল দেশ তাই নয় বরং ভারত বর্তমানে বিশ্বের একটি উদীয়মান অথনৈতিক ও সামরিক শক্তি । দিন দিনই ভারত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । কিভাবে ? কিসের জোরে ? জন সংখ্যা ও দারিদ্রের ভাড়ে নুহ্যমান দেশ ও জাতিটি কোন শক্তির বলে অপ্রতিরোধ্য ভাবে এগিয়ে চলেছে ? আমি বলবো সেই শক্তিটি হলো দেশটির নেতা নেত্রীদের প্রচন্ড দেশ প্রেম এবং আত্মপর্যাদা ও আত্মসম্মান বোধ । এই তিনটি বিষয় বাংলাদেশে অস্বাভাবিকভাবে অনুপস্থিত । বাংলাদেশের নেতা নেত্রীদের মধ্যে দেশ প্রেম আছে কি না তা লেখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না । কারন আমার এই দাবীর স্বপক্ষে প্রতি দিনের পত্র-পত্রিকায় অসংখ্য উপাদান মিলবে । শুধু নিরপেক্ষভাবে চক্ষু মেলিয়া দেখার চেষ্টা করলেই ধরা পড়বে ।
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী এবং কিছু এমপি ভারতের স্বার্থের পক্ষে যেভাবে কথা বলেন তাতে সন্দেহ জাগে এরা কি বাংলাদেশের নাগরিক না কি ভারতের নাগরিক । আওয়ামীলীগের ভারত প্রীতি এবং ভারত তোষণের ফল হিসেবে আমরা আজ ফারাক্কার করাল গ্রাসে পরিণত হয়েছি । দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পর আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় । তাদের ভারত তোষণের পরিণতিতে আমরা টিপাই মুখ বাধেঁর মরণ ফাঁদে আটকা পড়তে যাচ্ছি । ট্রানজিট , চট্টগ্রাম বন্দর , টাস্কফোর্স , পানি বন্টন , টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বাণিজ্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রিদ্বয় যে সব মন্তব্য করেছেন , মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা তা শুনে বা পড়ে আশ্বস্ত হতে পারি নি যে বর্তমান সরকার ভারতের স্বার্থের চেয়ে বাংলাদেশর স্বার্থকে বড় করে দেখতে পারবে । আমরা আওয়ামীলীগ সরকারের কর্ণধারদের মধ্যে দেশ প্রেম, আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদবোধ আছে কি না তা নিয়ে সন্দিগ্ধ । আওয়ামীলীগ নেতা- নেত্রীরা মানুষকে বুঝাবার চেষ্টা করছেন ভারত একটি শক্তিশালী দেশ তাদের সাথে ঝগড়া করে তো পারা যাবে না ! কাজেই তাদের দয়ার উপরই আমাদেরকে নির্ভর করতে হবে । বিশ্বের বহু ছোট দেশ অনেক শক্তিশালী বড় দেশের প্রতিবেশী কিন্তু কেউ কারো দয়ায নয় বরং বৈধ অধিকার ও আত্মসম্মান নিয়ে বসবাস করছে । কিন্তু আমাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে অধিকার আদায়ের চেষ্টা নয় বরং দয়া ও করুনা পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত । কাজেই যে দেশের রাজনৈতিক নেতা ও সরকারের এমন নতজানু মানসিকতা সেদেশের যে কোন উন্নতি অগ্রগতি হবে না , সে দেশ যে একদিন ফারাক্কা এবং টিপাইমুখ বাধেঁর করাল গ্রাসে অস্তিত্বের সংকটে পড়বে তাতে কোন সন্দেহ নেই ।
বিএনপি এ ব্যপারে সোচ্চার হয়েছে , ভারতের স্বার্থের পক্ষে সরকারের কূটকৌশলগুলো অনেকটাই তারা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে । যেমন গত কাল প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন , টিপাইমুখ বাঁধ বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সংসদীয় কমিটি গঠন করা হবে । আজ মিডিয়ায় দেখলাম বিএনপি বলেছে সংসদীয় কমিটি নয় বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে । বিএনপির এই বক্তব্যে এটা মনে হয়েছে যে তারা সরকারের কূটকৌশলগুলো ধরতে পারছে । সংসদীয় কমিটি মানে কি ? মনে হচ্ছে , কিছু অশিক্ষিত ভারতীয় দালালদের ফোরাম । যারা টিপাইমুখ বাঁধকে বৈধতা প্রদান করবে । কাজেই এক্ষেত্রে বিএনপি যে দাবী জানিয়েছে তা যৌক্তিক এবং তা আমাদের মনে আশার আলো জাগিয়েছে ।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×