রফিক সাহেবের একটাই মেয়ে।স্ত্রী গত হয়েছেন অনেক আগে। মেয়ে অনার্স করছে একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে। ওর নাম রিয়া। উনি মেয়েকে অফিসে যাওয়ার সময় ভার্সিটিতে দিয়ে আসেন।
- বাবা এইটা আমার বান্ধবী
- তাই? ভালো আছো ?
- জী আংকেল।
- নাম কি তোমার?
- জী মিতু।
- আচ্ছা রিয়ার সাথে বাসায় বেড়াতে এসো। আসি আমি।
রিয়ার বান্ধবী মিতু কে কেমন যেন স্নিগ্ধ লাগলো রফিক সাহেবের কাছে। এমনটা হয় না সচরাচর কাউকে দেখে।
মেয়েটাকে নিয়ে কি ভাবছি আমি হঠাত? আমি তো এমন নই। পরনারীর প্রতি আসক্তি তো আমার কোন দিনই ছিল না।
ধুর কি সব ভাবছি ও তো একটা বাচ্চা মেয়ে আমার মেয়ের বান্ধবী।
- বাবা তুমি আয়না দেখছো?
- না এমনি একটু।
- এমনি কোথায়? আমি দেখেছি তুমি পাকা চুল উঠাচ্ছিলে।
- গোয়েন্দাগিরি করিস কেন রে?
- বুঝতে পারছি তুমি কিছু একটা ভাবছো।
- কিভাবে?
- তুমি তো আয়না দেখ না কখনো তাই।
- এই তুই যা ঘুমা।
- আচ্ছা গুড নাইট।
- গুড নাইট।
- বাবা শুনো।
- আবার কি?
- কারো প্রেমে পড়লে আমাকে বলো হেল্প করবো হি হি হি।
- উফ তুই যা এখনি।
- যাই টা টা।
রফিক সাহেব কয়েক দিন ধরে বাইরে যাচ্ছেন না।অফিসেও যাচ্ছেন না। আজও অফিসে যাবেন না ঠিক করেছেন। রিয়াকেও একয়দিন একা যেতে হচ্ছে।
রফিক সাহেব শুধু বাসায় বসে একা একা আওড়ান -
সারাদিন তোমায় ভেবে
হল না আমার কোন কাজ
- একি বাবা? তুমি আসলে যে?
- এমনি একা একা ভালো লাগছিল না।
- তাই নিতে এসেছো? ভালো হয়েছে চলো।
- আচ্ছা তোর ওই বান্ধবীটাকে দেখছি না যে?
- কে মিতু?
- ও তো চলে গেছে এখান থেকে।
রফিক সাহেব মেয়ের কথায় ধাক্কা খেয়েছেন যেটা মোটেই তার সাজেনা। কেন ধাক্কা টা খেলেন এ উত্তর কে দেবে?
- বাবা কি ভাবছো?
- কিছু না। হ্যাঁ কি যেন বলছিলি ও কোথায় গিয়েছে মিতু?
- অস্ট্রেলিয়া, ওর ভাইয়ের কাছে।
- ও আচ্ছা চল।
রফিক সাহেব আজ আবার সকাল সকাল রেডি হয়েছেন। রিয়াকে ভার্সিটিতে দিয়ে অফিসে যাবেন। মেয়েকে তাড়া দিচ্ছেন বারবার।
- একি বাবা, তুমি না ছুটি নিয়েছিলে? অফিসে যাবে কেন?
- বাসায় ভালো লাগে না একা। তুই রেডি হ।
মেয়ের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নিজেই নিজেকে বলছেন -
কিছু অনুভূতি ধরে রাখতে নেই, ব্যস্ততা দিয়ে এটাকে কবর দিতে হয়। এই মধ্য বয়সে এমন অনুভূতি ভালো না। মোটেই ভালো না।।।