somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট মুখে কিছু কথা

০২ রা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট মাথায় বেশি কিছু ধরেনা । তাও কিছু বলার চেষ্টা করি ।
সেদিন রাতে যখন টিভি চ্যানেল গুলোতে অভিজিৎ হত্যার নিউজ দেখাচ্ছিল ,তখন দেশের প্রায় সব মানুষ যারা নিউজ টা দেখছিল তারা নিজেদের মধ্যে একটা সহানুভূতি অনুভব করেছিল লোকটার জন্যে । কারণ , তারা তখন অভিজিৎ কে মানুষ হিসেবে দেখেছিল । সেইসব মানুষের মধ্যে দাঁড়িওয়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া বৃদ্ধ ছিল , মন্দিরের পুরোহিত ছিল , স্টার জলসা দেখা বাড়ির মহিলামানুষ গুলো ছিল , স্কুল কলেজ গুলোতে পড়া ছাত্র ছাত্রী ছিল সবাই ছিল । তারা তখন শুধু ভাবছিল কেন এভাবে লোকটাকে খুন করতে হবে তার স্ত্রীর সামনে । স্ত্রী যে রেহাই পেয়েছে তাও নয় । তার হাতের আঙ্গুল কাটা পড়েছে খুনীদের চাপাতিতে । কত মানুষ অভিজিৎ আর তার স্ত্রীর জন্যে টিভির সামনে মুখ ভার করে বসে থেকেছে তার হিসেব রাখা ভার । শুধু একদল মানুষ তাদের মৃত্যুতে মুখ ভার করেনি । বরং তারা উল্লাস করেছে । পরবর্তীতে তারাই মানুষ কে বুঝিয়েছে যে অভিজিৎ ভাল না , ও নাস্তিক , ও কুরান মানে না আল্লাহ মানে না অমুক তমুক অমুক তমুক । আস্তে আস্তে মানুষ দুদিনের মধ্যেই এসব লোকের কথায় প্রভাবিত হয়েছে । এইসব লোকেদের আমি ধর্মান্ধ হিসেবে জানি । আমি বিশ্বাস করি যে ধর্মান্ধ আর ধার্মিক দুটি দু মেরুর জিনিস । ধার্মিক জগতের সব সৃষ্টির প্রতি সহানুভূতিশীল থাকে । কিন্তু ধর্মান্ধ , সে ধর্মের ছায়ায় সব মানুষ কে নিয়ে আসার জন্যে ক্যাওস পর্যন্ত তৈরি করে । সে ভাবে জগতে অধার্মিক দের কোন জায়গা নেই । জায়গা শুধু তাদের মত ধর্মান্ধদের । তাদের ওই লাদেন তরিকার মাথায় ঢুকে না যে সবাই ধর্ম নিয়ে এক চিন্তা করে না । সবার চিন্তা ধারা লাদেন কিংবা আইমান আল জাওয়াহিরির মত নয় অথবা জামাত শিবিরের মত নয় ।

এবার আসি মুক্তমনা দের কথায় । মুক্তমনাদের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেই বলছি , তাদের ট্র্যাক ঠিক নেই । তারা বারবার লাইন থেকে বিচ্যুত হয়ে নিজের কথা ভাবতে যায় । তাদের কেউ কেউ ভাবে আমি যেটা বলি আমি যেটা মানি সেটাই সবাই মেনে নিতে বাধ্য । কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলে সে মূর্খ । উদাহরণ স্বরূপ ওই অভিজিৎ রায়ের হত্যার কথাই ধরি । অভিজিৎ রায় কে হত্যা করার পর যতগুলা মানুষ মনে ব্যথা পেয়েছিল , তাদের মধ্যে শুধু মুক্তমনারাই ছিল না উপরে যেটা বললাম । অনেক ধর্ম বিশ্বাসী মানুষও ছিল । মুক্ত মনারা চাইলেই এই সহজ সরল মানুষ দের সমর্থন আদায় করতে পারত স্বভাবিক ভাবেই । তারা সেটা করেনি । তারা কি করল ??? তারা সেইসব মানুষদের গালি দেয়া শুরু করল যারা তাদের পায়ের নিচের মাটি গড়ে দিতে পারত । এই দেশে মৌলবাদ দূর করার জন্য যে জনগণের সহায়তা লাগবে সেই জনগণের মনেই যদি আপনি আঘাত দেন তাহলে তারা কেন আপনার পাশে দাঁড়াবে । আপনি ধর্মবিশ্বাসী মানুষ গুলোকে বুঝাতে পারেন যে আমরা আর আপনারা একই ভাবে চিন্তা করিনা । আমরা ঈশ্বর মানিনা কিন্তু মানুষ মানি , আপনাদের মানি । মুক্তমনা ভাইয়েরা সেটা না করে সমগ্র ধর্মবিশ্বাসী গোষ্টী কে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে গাল দেন । তাদের ধর্মপ্রচারক কে গাল দেন । তাদের বলেন বাস্টার্ড তাদের ধর্মীয় নেতাকে নিয়ে করেন অশ্লীল মন্তব্য । কখনো কখনো সেটা হয়ে যায় বিশেষ কোন একটি ধর্মের প্রতি মুক্তমনাদের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ । মুক্তমনারাই কি শুধু দেশ থেকে জঙ্গিবাদ মৌলবাদ দূর করতে চান ? তারা কি একা পারবেন ? এইদেশের যে মানুষ গুলো নিয়মিত জঙ্গিবাদের নৃশংসতার অরাজকতার ভিক্টিম হচ্ছে তারা কি চান না ? তাদের জন্য কেন ভাবেন না ? শুধু নিজের কথা ভাবলে কোনদিনও এই দেশে আপনারা স্বাধীন ভাবে সুষ্ঠু ভাবে মুক্তচিন্তা চর্চা করতে পারবেন না । মুক্ত যুদ্ধ শুধু মুক্তমানারা করেনি । সৈয়দ বংশের ছেলে , পুরোহিতের মেয়েও করেছিল । সুতরাং এই দেশের মানুষের কথা একটু ভাবুন । আপনারা যারা মুক্তচিন্তা চর্চা করেন , তারা সবকিছু পরিষ্কার দেখতে পান । শুধু সেটা একটু সাধারণ মানুষের চোখের সামনে তুলে ধরার প্রক্রিয়াটা ঠিক করে করুন । গালিগালাজ করে কিংবা উত্তেজিত করে নয় , তাদের ভালোবাসুন তাদের কে বুঝতে সময় দিন যে তারা কি অবস্থায় আছে । দেখবেন একদিন এই সাধারণ ধর্মবিশ্বাসীরাই সমস্বরে বলবে –

মুক্তমনারা আমাদের ভাই , আর একটাও অভিজিৎ মরবে না , আর একটাও রাজীব মরবে না , মরবে না কোন হুমায়ূন আজাদ ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×