somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষক,ছাত্রসমাজ এবং হতাশা

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার স্বল্প জ্ঞান। এই জ্ঞান নিয়ে আমি এমন একটা সেন্সিটিভ পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে দু চার কথা লেখার সাহস করা ঠিক হচ্ছে কিনা জানিনা। আমি পড়াশুনাও কম করি। সে বাইরের হোক বা একাডেমিক। চারপাশে যা ঘটতে দেখি তাই দিয়ে আমি পরিবেশ বিবেচনায় নিজের মস্তিষ্কে একটি মন্তব্য দাঁড় করিয়ে নিই। সে হিসেবে আমি যদি আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে কিছু কথা প্রকাশ করতে চাই তাতে কেউ হয়ত আঘাত পাবেন, কেউ হয়ত পাবেন না। কেউ হয়ত কপাল ভাল থাকলে একমতও হতে পারেন। তাই আগে থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

আসলে আমার মত আরো অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীই বহু আগেই বুঝতে পেরেছেন যে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভয়ানক ভাবে কলাপ্স করছে। আমাদের চোখের সামনেই এই কেয়ামতের সমান ঘটনা টি ঘটে যাচ্ছে। আমি শুধুমাত্র একটা পয়েন্ট নিয়ে এখানে কথা বলতে চাই। এবং সেটি হচ্ছে আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সমাজের ভূমিকা।

ছোট বেলা থেকে শিক্ষক সমাজের প্রতি একটা বাড়তি শ্রদ্ধা গড়ে উঠে আমাদের মনে। ওনারা জাতির অভিভাবক। জাতির দুর্দিনের কান্ডারী বলেই আমাদের বিশ্বাস।
কিন্তু আজকে যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এত ভয়ংকর পরিণতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তার বিপরীতে গুটিকয়েক শিক্ষক ব্যতীত অন্যান্যদের ভূমিকা এত নীরব কেন? এমনকি ছাত্র সমাজও যদি কিছু একটা করতে চায়, তাহলে তারা তাদের ছোট বেলা থেকে জেনে আসা শিক্ষক নামক অভিভাবকদের পাশে পাচ্ছে না কেন? পেলেও তা এত কম পরিসরে কেন?

উদাহরণস্বরূপ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হবার ঘটনাকেই ধরি। একটা জাতিকে ধ্বংস করার কি ভয়ংকর ষড়যন্ত্র! তাইনা?
এর বিরুদ্ধে আমাদের ছাত্র ভাই বোন বন্ধু বান্ধবীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। তাদের কে পুলিশের মার খেতে হচ্ছে। সুষ্ঠু শিক্ষাব্যবস্থার দাবিতে আন্দোলনে নেমে যদি আমাদের ভাই বোনদের রক্তাক্ত হতে হয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে তো আমাদের শিক্ষক সমাজের ক্ষোভে ফেটে পড়া উচিৎ। কিন্তু তা হচ্ছে কই?

এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তে কতিপয় ছাত্র সংগঠন মেডিকেলে প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে যে ধর্মঘট ডেকেছিল তার সাথে আমাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকই একাত্নতা ঘোষণা করেননি। তারা ক্লাস নিয়েছেন। কেন নিয়েছেন? হোক না এরা বাম ছাত্র সংগঠন।এরা খর্বশক্তির। এরা কথা তো বলছে ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি হয়ে। যা বলছে তা তো ন্যায়ই বলছে। আজকে ইউনিভার্সিটিগুলোতে যদি ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল অথবা ছাত্রশিবিরও তাদের নিজেদের স্বার্থে ধর্মঘট ডাকত, আমরা ঠিকই দেখতে পেতাম আমাদের শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন না। গুটি কয়েক ছাড়া। কেন স্যার? আমরা কি আপনাদের কাছে এতই অবাঞ্ছিত? যে আমাদের ভাল মন্দ না হোক, এদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হলেও ছাত্র সমাজের সাথে আপনাদের একাত্নতা নেই। আপনারাই তো আমাদের মাথার মুকুট। আপনারা যদি পাশে না থাকেন, তাহলে ছাত্র সমাজ বিপথে তো অবশ্যই যাবে সাথে হতাশার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।


আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছেন। বিনা ফলাফলে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আপনাদের বৈঠক শেষ হয়েছে। আমি বলছি না যে বেতন বৃদ্ধির দাবি একদম অমূলক। আপনাদের ও অধিকার আছে আন্দোলন করার। কিন্তু ভেবে দেখেন, আজকে আপনারা যদি শুধু নামমাত্র শিক্ষক না হয়ে অভিভাবক হয়ে আমাদের ভাল মন্দে একসাথে পাশে দাঁড়াতেন, আমাদের আশ্রয় হয়ে থাকতেন, তাহলে বেতনবৃদ্ধির জন্য আপনাদের রাস্তায়ও নামতে হত না। কিংবা নামলেও আপনাদের সাথে হাজার হাজার ছাত্র রাস্তায় নেমে যেত। এমনটাই হয়েছে এর আগে। তরূন সমাজ নিয়ে আপনারা অনেকেই হতাশা ব্যঞ্জক কথাবার্তা বলে থাকেন। সত্যি কথা বলতে আমরা ছাত্র সমাজ আমাদের শিক্ষকদের নিয়েও খুব একটা আশাবাদী হতে পারছি না আজ।

একটু ভেবে দেখবেন। আজ যখন আপনাদের একজন কলিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জঙ্গী সংগঠনের দ্বারা খুন হচ্ছেন, আপনাদের ছাত্রী ক্যাম্পাসে হেঁটে যাওয়ার সময় শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন, আপনাদের ছাত্র ক্লাসে দাঁড়িয়ে সত্যি কথা বলার কারণে ওই সাবজেক্টের শিক্ষক তার পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব ফেলছেন, তখন আপনারা জেনেও না জানার ভাব করে চুপটি করে বসে আছেন।শিক্ষকদের তো এমন হবার কথা নয়।
কিন্তু যখন বেতনবৃদ্ধি ইস্যু আসল তখন ঠিকই আপনারা সরব হলেন।
আমি আপনাদের স্বার্থপর বলবোনা। তাতে আমার অন্যায় এবং পাপ দুটোই হবে। শুধু বলছি, আপনারা হয়ত কোন ঘোরের মধ্যে আছেন। এটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। নাহলে এ জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। জাতির অভিভাবক হয়ে সন্তানের এমন পরিণতি আপনারা নিশ্চয়ই দেখতে চান না। আপনারা আমাদের পাশে থাকুন,শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে চিৎকার করুন শুধু। ছাত্ররা আপনাদের জন্য রাস্তায় নেমে বুলেটের সামনে বুক পেতে দিবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:০৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×