কোন সম্পদশালী ব্যক্তি ছিল, তার ছেলের কিছু ভবঘুরে এবং ভুন্ডেল বন্ধু ছিল। তার পিতা তাকে বুঝায় যে, এরা তোমার প্রকৃত বন্ধু নয়, এরা শুধু লোভের বশবর্তী হয়ে তোমার কাছে আসে, নতুবা তাদের একজনও এমন নেই যে, তোমার প্রতি বিশ্বস্ত কিন্তু সেই ছেলে পিতাকে উত্তর দেয় যে, মনে হয় যেন আপনি জীবনে কোন সত্যিকার বন্ধু পান নি, তাই সবার সম্পর্কে একই ধারণা পোষণ করেন। আমার বন্ধুরা এমন নয়, তারা পরম বিশ্বস্ত, আমার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতেও তারা প্রস্তুত। পিতা তাকে বুঝান যে, সত্যিকার বন্ধু পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার। পিতা বলেন, সারা জীবনে আমি একজন মাত্র সত্যিকার বন্ধু পেয়েছি। কিন্তু সেই ছেলে তার হঠকারিতায় ছিল অনড়। কিছু দিন পর সে পিতার কাছে খরচের কিছু টাকা চায়, পিতা বলে যে, আমি তোমার খরচ চালাতে পারব না, তোমার বন্ধুদের কাছে চাও, আমার কাছে এখন কিছুই নেই। সত্যিকার অর্থে পিতা ছেলের বন্ধুদের পরীক্ষা নেয়ার কোন সুযোগ সন্ধান করছিলেন। পিতা যখন না করে দেন আর তার সব বন্ধুরা এটি অবগত হয় যে, ঘর থেকে তাকে না করে দেয়া হয়েছে তখন বন্ধুরা তার কাছে আসা যাওয়া বন্ধ করে দেয়, মেলা-মেশা ছেড়ে দেয়। অবশেষে নিরুপায় হয়ে এই ছেলে নিজেই বন্ধুদের সাথে স্বাক্ষাতের জন্য তাদের ঘরে যায়। কিন্তু যেই বন্ধুর দরজায়ই কড়া নাড়তো সে ভিতর থেকে সংবাদ পাঠাতো যে, ঘরে নেই, কোথাও বাহিরে গিয়েছে বা সে অসুস্থ এখন দেখা করা সম্ভব নয়। এভাবে সে সারা দিন ঘুরে বেড়ায় কিন্তু কোন বন্ধু তার সাথে দেখা করার জন্য বাহিরে আসে নি, অবশেষে সন্ধ্যা বেলা বাসায় ফিরে আসে। পিতা তখন জিজ্ঞেস করেন যে, বন্ধুরা কি উত্তর দিয়েছে। সে বলে যে, সবাই হারাম খোর, অকৃতজ্ঞ, কেউ কোন বাহানা করেছে, কেউ কোন অযুহাত। পিতা বলেন আমি কি তোমাকে পূর্বেই এটি বলিনি যে, এরা বিশ্বস্ত নয়। ভাল হয়েছে, তোমরাও একটা অভিজ্ঞতা হলো, এসো এখন আমার বন্ধুর সাথে তোমার সাক্ষাৎ করাই। এরপর তারা পাশেই এক জায়গায় যায় যেখানে তার এক বন্ধু বসবাস করতো। সেই বন্ধু কোন জায়গায় সিপাহী হিসেবে কাজ করত। পিতা-পুত্র উভয়ে তার ঘরে পৌঁছে দরজার কড়া নাড়ে। ভিতর থেকে আওয়াজ আসে যে আমি আসছি। অনেক দেরী হয়ে যায় কিন্তু দরজা খোলার জন্য কেউ আসেনি। তখন ছেলের হৃদয়ে বিভিনড়ব চিন্তাধারার উদয় হতে থাকে, সে তার পিতাকে বলে যে, আব্বু! মনে হয় আপনার বন্ধুও আমার বন্ধুদের মতই। তিনি বলেন যে, কিছুক্ষণ অপেক্ষা কর। এরপর আরও কিছুটা সময় কেটে যায়। এরপর দরজা খুলে সেই বন্ধু যখন বাহিরে আসে তখন তার গলায় একটি তরবারী ঝুলছিল, এক হাতে ছিল একটি থলি আর অন্য হাতে ছিল স্ত্রীর বাহু। দরজা খুলতেই সে বলে যে, আমায় ক্ষমা করবেন, আপনার কষ্ট হয়েছে, আমি তাড়াতাড়ি আসতে পারি নি, দ্রুত আসতে না পারার কারণ হলো, আপনি যখন কড়া নেড়েছেন আমি বুঝতে পেরেছি যে, নিশ্চয় কোন ব্যাপার বা বিশেষ কোন কারণ আছে যে কারণে আপনি নিজেই এসেছেন নতুবা আপনি কোন চাকরকেও পাঠাতে পারতেন। আমি যখন দরজা খুলতে চাইলাম তখন হঠাৎ করে আমার মনে পড়লো যে, হয়তো কোন সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমার কাছে এই তিনটি জিনিসই ছিল, একটি তরবারী আর একটি থলি যাতে আমার এক বছরের খরচ রয়েছে, কয়েকশত রুপিয়া আছে, আর আমার স্ত্রী এজন্য এসেছে যে, আপনার ঘরে হয়তো কোন সমস্যা হয়েছে তাই সে খিদমতের জন্য এসেছে। আর দেরী হওয়ার কারণ হলো আমার এই থলিটি মাটির নিচে পুঁতে রাখা ছিল যা বের করতে সময় লেগেছে। এরপর ভাবলাম যে, হয়তো এমন কোন সমস্যার উদয় হয়েছে যেখানে কোন সাহসী ব্যক্তি কাজে আসতে পারে তাই তরবারী সাথে নিয়ে এসেছি যে, জীবনের যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমার জীবন যেন উৎসর্গ করতে পারি। এরপর আমি ভাবলাম যে, যদিও আপনি সম্পদশালী কিন্তু হয়তো এমন কোন সমস্যা দেখা দিয়েছে যার ফলে আপনার সকল সম্পদ হারিয়ে গেছে আর আমি হয়তো রুপিয়ার মাধ্যমে আপনার সাহায্য করতে পারি, এ কারণেই এই থলি সাথে এনেছি। এরপর ভাবলাম যে রোগ ব্যাধি মানুষের নিত্য সাথী, হতে পারে আপনার ঘরে বা আপনার স্ত্রীর কোন সমস্যা হতে পারে, তাই আমার স্ত্রীকেও সাথে নিয়ে এসেছি যেন সে সেবা করতে পারে।
সেই সম্পদশালী ব্যক্তি বলে যে, হে আমার বন্ধু! আমার এখন কোন সাহায্যের প্রয়োজন নেই আর আমি এমন কোন সমস্যারও সম্মুখীন নই বরং আমি কেবল আমার ছেলেকে শেখাতে নিয়ে এসেছি।