somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

*কুনোব্যাঙ*
একমাত্র বিরোধী পক্ষ!!

ব্রিজ অব স্পাইজ: ঘৃণাবাদ যখন রাষ্ট্রের পুঁজি

০১ লা জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"রাষ্ট্র জাতীয়তাবাদের জিগির তোলে, কোনও একটা দেশকে, তার মানুষজনকে শত্রু বানায়। নাগরিক হিসেবে আমরা যখন এই রাগ-ঘৃণা-অবিশ্বাসের বশীভূত হই, তখন আমাদের স্বতন্ত্র ব্যক্তি-সত্তা হারিয়ে যায়, আমরা একটা সমষ্টির অন্তর্গত হয়ে পড়ি, নিজস্ব বিবেচনা ভুলে ওই সমষ্টির মানসিকতায় দীক্ষিত হই, ভীত, সন্ত্রস্ত, সন্দিগ্ধ, শেষ পর্যন্ত প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠি।"
দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামের অংশ এটি। সিনেমাটি ভারতবর্ষের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপুর্ণ বার্তা বহন করে।



সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে জেমস ডোরনাভান একজন আইজজীবী। রুশ নাগরিক রুডলফ এবেল গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আমেরিকায় গ্রেফতার হলে ডোরনাভান তার পক্ষের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বিপত্তি বাঁধে সেখানেই। রাষ্ট্রের অসহযোগিতা হুমকি ইত্যাদির থেকে বিস্ময় আসে যখন দেখা যায় ডোরনাভান সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন। একদিকে সরকারি লোকজন তাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন আরেকদিকে কাছের মানুষগুলোও দেখছে তাঁকে বাঁকা চোখে। এভাবেই ধীরে ধীরে সমস্যার গভীরে প্রবেশ করে এগিয়ে যেতে থাকে সিনেমাটি।

উগ্র জাতীয়তাবাদ, আন্তঃরাষ্ট্রীয় ঘৃণা আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্যতম পুঁজি । পরিচালক স্পিলবার্গ সম্ভবত সিনেমাটির মাধ্যমে নিজের শৈশবের স্মৃতিগুলো ফিরিয়ে আনেন। স্কুলে নিজ দেশের জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি কিভাবে একত্বই নির্দিষ্ট রাষ্টকে চিহ্নিত শত্রু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, শত্রুরাষ্ট্রের সকল নাগরিকের বিরুদ্ধে কীভাবে ঘৃণা উসকে দেয়া হয় সেসব। দেখানো হয় রাষ্ট্র কিভাবে দেশের নাগরিকদের চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় বা করে।

এখন রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের কর্তব্য কি? সামষ্ঠিক চিন্তার অংশ হওয়া নাকি ব্যক্তিসত্ত্বাকে ভিন্ন আঙ্গিকে বিশ্লেষণ করা? সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে সামষ্ঠিক সমাজের অংশ আমরা। সমষ্ঠির চিন্তাকে লালন করাই কি আমাদের কর্তব্য নয়? আবার সামষ্ঠিক চিন্তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রই বা কতটুকু সৎ? একত্বই রাষ্ট্রের সকল নাগরিককে বা সকলকিছুকে ঘৃণার যে প্রবণতা রাষ্ট্র প্রতিষ্টিত করতে চায় সেইটির যৌক্তিকতা কতটুকু?

আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্যতম ত্রুটি হলো রাষ্ট্রুযন্ত্র সার্বিক ক্ষমতা তার নিজেরে কাছে কুক্ষিগত রাখতে চায়। নিয়ন্ত্রণ করতে চায় নাগরিকের চিন্তা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সাধারণ কাজকর্ম পর্যন্ত। জর্জ অরওয়েলের উপন্যানের সেই কাল্পনিক ওশেনিয়া রাষ্ট্রের রাষ্ট্র কাঠামোই যেন আধুনিক রাষ্ট্রগুলোতে প্রকট!

আমাদের নাগরিকদের করনীয় কি? রাষ্ট্র যেভাবে চায় সমষ্ঠিগতভাবে সেদিকে ধাবিত হওয়া নাকি সেখান থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীন চিন্তার জগতে প্রবেশ করা? প্লেটোর বর্ণিত কল্যাণ রাষ্ট্রেও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সামষ্ঠিক চিন্তা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি বলা রয়েছে। আবার রাষ্ট্র যদি দুর্বৃত্ত বা অসৎ হয় সেক্ষেত্রে?

সিনেমাটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার কিছু নেই কারণ বক্তব্যটি খুবই সহজ। কিন্তু সমস্যাটির শেকড় অনেক গভীরে। সিনেমাটি দেখুন। হয়তো রাষ্ট্র পরিচালিত সামষ্ঠিক চিন্তা ভালো, কিন্তু কিছু সময়ের জন্য সব ছেড়ে একান্ত নিজেকে খোঁজার একান্ত নিজের চিন্তার জগতে প্রবেশ করাতেও দোষের কিছু থাকার কথা নয়।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০২০ রাত ২:০১
১৪টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×