somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাপিত জীবন - ৩ : সেল ফোন এবং বদলে যাওয়া মন (উত্সর্গ প্রত্যুত্পন্নমতিত্ব)

০৬ ই মে, ২০০৭ বিকাল ৫:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখন মাত্র বুয়েটে ঢুকছি।
মন সবসময় উড়ুউড়ু। গায়ে ভার্সিটির রোমান্টিক বাতাস। উড়ু উড়ু করতে করতেই ধুম করে একটা প্রেম করে ফেললাম।
প্রেম তো করলাম! কিন্তু, এ তো নতুন যন্ত্রনা!
সারাক্ষণ প্রেমিকার সাথে কথা বলতে মন চায়। রাতে তিতুমির হলের কার্ডফোন থেকে ফোন করি (অবশ্যই রাত ১১ টার আগে)। দশ মিনিট ধরে দু'দশটা ছোট, বড়, মাঝারি সাইজের ইন্টারভ্যু পার হয়ে দু'মিনিটের জন্য রাজকন্যাকে পাই। মন ভরে না।

ওর মন তো আরো ভরে না। আমাকে প্রতিদিন বলে একটা মোবাইল কেনো।
বউ বলে কথা!
অনুরোধে মন গলে যায়। টিউশনি শুরু করি। টাকা জমাতে হবে। খুব দ্রুত।

২০০০ সালের জুন মাস। এক বিকেলে টিউশনী শেষে রাস্তায় নামলাম। হলে ফিরব।
আকাশ কাল করে মেঘ জমেছে। জুন মাসে এরকম একটু আধটা জমতেই পারে। অবাক হবার কিছু নেই। পাত্তা দেয়ারও কিছু নেই। আমি হাঁটতে লাগলাম বাস স্ট্যান্ডের দিকে।

হুট করে গরম একটা হাওয়া খেলে গেল। কী আশ্চর্য! তারপরই ঠাণ্ডা হাওয়া। বলা নেই, কওয়া নেই শো শো শব্দ চারদিকে। বিকেলের আকাশ, অথচ নিমিষে অন্ধকার! ঝুম বৃষ্টি!

'ঝড়ের দিনে মামার বাড়ি আম কুড়াতে সুখ টাইপ' ঝড় নয় - যা শুরু হলো তা রীতিমত তাণ্ডব। শাট শাট করে দোকানের শাটার পড়ে গেল। একটা গাছের ডাল ভেঙে আমার ঠিক পায়ের কাছে পড়ল। হিসাবে একটু এদিক ওদিক হলেই এ লেখা আর আজ লিখতে হত না।

সেদিন হলে পৌঁছলাম রাত ১০ টায়। ভিজে চুপচুপ। সেই অবস্থাতেই কার্ড ফোনের লাইনে দাঁড়ালাম। রসিয়ে রসিয়ে বৃষ্টিতে ভেজার গল্প বলতে লাগলাম।
ওর কি রাগ শুনে!
ওকে কেন ভেজার সময় সাথে নিলাম না। সবটুকু মজা আমি কেন একাই করলাম!

দিনগুলো সত্যিই হয়ত মজার ছিল!

২০০৭ সালের মে মাস।
কয়েকদিন আগের কথা। সন্ধ্যাবেলা।
খামারবাড়ি থেকে রিকশা করে মিরপুর যচ্ছি। ঝুম বৃষ্টি নামল। একইরকম!

রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম, পর্দা আছে কি না?
রিকশাওয়ালা নির্বিকারভাবে না বলল।
আমি হুটটা টেনে দিলাম। দুই পকেটে দুটো মোবাইল। বাঁচাতে হবে ওদেরকে। যে করেই হোক, বৃষ্টির পানি লাগতে দেয়া যাবে না।
অনেক চেষ্টা করেও একটা মোবাইল সেদিন বাঁচাতে পারিনি। সেই রাতে আমার দুচোখের পাতা এক হয়নি। দু:খটা এখনও আছে।

যন্ত্রজীবনে বৃষ্টিভেজা'র মত ফালতু জিনিসের কোনো স্থান নেই।

প্রত্যুত্পন্নমতির সম্পূরক পোস্ট
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০০৭ রাত ১১:২৮
২১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×