somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কয়েকটি কারণ খুজতে গেলে যেগুলো পাওয়া যাবে ...

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরু রাস্তা ও রাস্তায় ডিভাইডার না থাকা: দেশের অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে আন্তঃজেলা মহাসড়কগুলোতে যেখানে যানবাহন খুব দ্রুতবেগে চলাচল করে। এসব সড়কে দ্বিমুখি (মুখোমুখি) যানবাহন চলাচল করলেও সড়কগুলো প্রশস্ত নয় এবং কোন ডিভাইডার নেই। যার ফলে যানবাহনগুলো যখন পাশাপাশি চলে আসে তখন তাদের মধ্যে নিরাপদ দুরত্ব না থাকায় মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। আর নিরাপদ দূরত রাখতে হলে রাস্তা ছেড়ে যানবাহন নিচে নেমে আসে। ফলে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ে যায়।

পুরনো ও ত্রুটিপূর্ন যানবাহন: ২৫ বছরের পুরোনো যানবাহনগুলো ঢাকা শহর থেকে সরিয়ে নেয়ার একটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল বছরখানেক আগে। কিন্তু তার বাস্তবায়ন আমরা দেখিনি। কিন্তু ঢাকার বাইরে অসংখ্য পুরাতন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলছে যেগুলো দুর্ঘটনা ঘটানো অন্যতম কারণ।

উন্নতমানের ও টেকসহ সড়ক নির্মান: আমাদের দেশের রাস্তাঘাটগুলোর বেলায় দেখা যায় যে, জোড়াতালি দিয়ে ওগুলো তৈরি করা হয়। তৈরির ছয়মাসের মধ্যেই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এমন অনেক রাস্তার নজির আছে এ দেশে। যেকোন ধরনের সড়ক নির্মানে আমাদের যত্নবান হতে হবে। সেটি যেন যুগোপযোগী, টেকসই ও সকলের ব্যবহার উপযোগী হয় তার জন্য যথযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ন কখনই যেন গ্রহণযোগ্য না হয়।

অদক্ষ চালক: অধিকাংশ দুর্ঘটনার জন্য অদক্ষ চালক দায়ী। এসব চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না। আবার এটাও সত্য যে, বিপুল সংখ্যক চালকদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করার মত অবকাঠামো সরকারের এখনও নেই। সেটি সরকারেরই ব্যর্থতা। স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে এসেও একটি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা মেনে নেয়া অসম্ভব।

ড্রাইভিং পেশার উৎকর্ষহীনতা: আমাদের দেশে ড্রাইভিং কে এখনও নিম্নমানের পেশা হিসেবে দেখা হয়। বাস ও ট্রাক ড্রাইভারেরা দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৬-১৮ ঘন্টাই পরিশ্রম করেন। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এভাবে পথঘাটে থাকতে থাকতে তাদের মধ্যে অস্থিরতার তৈরি হয়। তারা শারীরীক ও মানষিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। যার ফলে তারা তাদের পেশায় মনোনিবেশ করতে পারেন না। এটিও দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

সনাতনী ট্রাফিক সিগনাল ব্যবস্থা: বাংলাদেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা এখনও সনাতন পদ্ধতিতেই পড়ে আছে। ট্রাফিক সিগনালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রয়োজন। গতি পরিমাপক, ওজন পরিমাপক, জিপিএস প্রযুক্তি ইত্যাদির অন্তর্ভুক্তি এখন সময়ের দাবী হয়ে দাড়িয়েছে।

সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতার অভাব: সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে পাঠ্যবইতে সড়ক নিরাপত্তা ও আইন সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বিকল্প যানবাহনের(রেল, লঞ্চ ইত্যাদি) সুবিধা পর্যাপ্ত না থাকা: আমাদের দেশে অনেক জেলা ও উপজেলাই এখনও রেল যোগাযোগের বাইরে রয়েছে। সড়কপথের বিকল্প হিসেবে রেলপথ ও জলপথের প্রচলন ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। কারন একটি নির্দিষ্ট পথে যখন যাত্রীসংখ্যা বেশি হবে তখন স্বভাবতই বিড়ম্বনা বাড়বে। রেল যোগাযোগ সবার কাছে পৌছে দিতে পারলে সড়কপথের উপর থেকে চাপ কমবে।

যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের অভাব: বিদ্যমান ট্রাফিক আইন সংশোধন ও তার যথাযথ প্রয়োগ একান্ত প্রয়োজন। রাস্তাঘাটে যেসকল অবৈধ চালক, ফিটনেসহীন গাড়ি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আটক করেন তার অধিকাংশই অর্থের বিনিময়ে বৈধ হয়ে যায় বা মামলা কাগজ কলমেই থাকে।

আমার মনে হয়, উপরোক্ত ব্যবস্থাগুলো স্বল্পমেয়াদে ও দীর্ঘমেয়াদে বিভক্ত করে এখনই কাজ শূরু করা গেলে সড়ক নিরাপত্তায় একটি ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে। আর এজন্য সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা আর এত অকালমৃত্যু দেখতে চাই না। আমরা চাই নিরাপদ সড়ক, ঝুকিমুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×