আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা কি জানেন?
আমি, আপনি। মানে জনসংখ্যা। আরেকটু ক্লিয়ার করে বললে, মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা। এটা হল Cause, আর effect গুলো এখন দৃশ্যমান।
Everything is connected!!
বেশি জনসংখ্যার কারনে in the first place মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হচ্ছে না। দিনের পর দিন সেটা পূরণ না হওয়াতে হতাশা বাড়ছে মানুষের ভিতর আর সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে কমেছে নৈতিকতা, বেড়েছে আত্মকেন্দ্রিকতা- অরাজকতা। অভাব যেখানে সীমাহীন, নৈতিকতা সেখানে পরাজিত সৈনিক।
এর সাথে সাথেই চলে এসেছে দুর্নীতি। নিজে একটু ভাল থাকার জন্য যে যেভাবে পারছে সেভাবেই আখের গোছাতে চাচ্ছে। নিজের ভবিষ্যৎ এর জন্য অন্যের পা চাটতে হবে, আচ্ছা চাটলাম। যার পা চাটছি সে বলছে অমুককে মারতে হবে, আমার সাথে তার শত্রুতা না থাকলেও চ্যালাকাঠ দিয়ে ক্যামেরার সামনে হলেও তারে পিটালাম। কারন ওই ভবিষ্যৎ এর নিরাপত্তা। এত এত মানুষের ভীড়ে নিজেরটা গুছিয়ে নেয়া, by hook or by crook.
আর এই দাপুটে অত্যাচারী মানুষের কারণে অপেক্ষাকৃত দুর্বল লোকেরা মানসিকভাবে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে সমাজ থেকে। কিন্তু কিসের বিনিময়ে!? Immense psychological cost এর বিনিময়ে। শারীরিকভাবে এরা বেচে থাকে বটে, কিন্তু মানসিকভাবে এতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যে কিছুতেই আর কিছু আসে কিংবা যায় না। মনোভাব হয়ে যায়, যা ইচ্ছা ঘটুক আমার কি!! এ অবস্থা আর বদলাবে না!!
আরও একটা ব্যাপার আছে এখানে। সেটা হল Pathological togetherness!! একটা নির্দিষ্ট জায়গার আশেপাশে গুটিসুটি মেরে হলেও একসাথে থাকার একটা অসুস্থ মানসিকতা আছে আমাদের। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে শাসকেরা সেই নির্দিষ্ট জায়গাকে ঘিরে একটা কুৎসিত রাজত্ব কায়েম করেছে দুর্নীতি আর অরাজকতার। আর আপনি আমিও ঘুটি হয়ে গেছি এখন। বেরুনোর রাস্তা পাচ্ছি না। ক্রমান্বয়ে সব পথ বন্ধ হয়ে দুটি রাস্তাই থাকছে আমাদের সামনে। হয় সবকিছু মেনে নিয়ে মানসিকভাবে মারা যাও, অথবা নিজেই খারাপ হয়ে আখের গোছানো শুরু কর।
মানুষ মরলেও কারও গায়ে লাগে না এখন। কারণ লোকের জীবনের দাম এখন আর কারও কাছে নেই। এত এত মানুষ চারিদিকে। মানতে না চাইলেও এটাই ব্রুটাল ট্রুথ। শান্তিপূর্ণ বসবাস ও বিচরণের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার তুলনায় জনসংখ্যা অত্যধিক বেশি হয়ে গেলে মানুষের সামগ্রিক আচরণগত বিপর্যয় ঘটে। সাইকোলজির ভাষায় যাকে বলে Behavioral sink. জনঘনত্ব বাড়ার একটা পর্যায়ে মানুষের আচরণগত বিপর্যয় এমন মারাত্মকভাবে পাকাপোক্ত হয়ে যায় যে তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিলেমিশে বাস করার সামর্থ্য স্থায়ীভাবে হারিয়ে ফেলে।
আমরা ক্রমান্বয়ে সেদিকে অগ্রসর হচ্ছি। সরকারও জানে যে একমাত্র ভোটের সময় হেড কাউন্ট ছাড়া বাকিটা সময় দেশের জনসংখ্যা তাদের জন্য বোঝা। তাই সড়ক দুর্ঘটনায় হাজার হাজার লোক মরলেও টনক নড়ে না, লঞ্চ ডুবলেও না, বিল্ডিং ধ্বসলেও না, গাড়ি চাপায় হাত হারালেও না, ধর্ষণ হলেও না, রাজনৈতিক দলের নেতারা সাধারণদের মারলেও না!!
আর আমরা বোধহয় অলরেডি মানসিকভাবে মৃত!! সকালে উঠছি, রাতে ঘুমাচ্ছি। পৃথিবী ঘুরছে। সুর্য উঠছে, অস্তও যাচ্ছে। জন্ম নিয়েছি, মারাও যাব।
মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী জন ক্যালহুন ইঁদুর নিয়ে একটা গবেষণা করেছিলেন। তার রেজাল্ট এর সাথে আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থার বিস্ময়কর মিল রয়েছে!!