somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্পীড

১১ ই জুন, ২০১০ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চার চাকায় ঘূর্ণি – গতি আর উন্মাদনা একসাথে মিলেমিশে অনুভূতি – শরীরে এড্রেনালিনের প্রবাহ - স্পেডোমিটারের সাথে পাল্লা দিয়ে হার্টবিট! Yes, I am a car fanatic. স্টিয়ারিং হুউলের পিছনে বসলেই ‘Car Demon’ যেন কানের কাছে হুইস্পার করে – Spread you wings!!


এক্কেবারে ডায়পার কালের কথা, আমি একসাথে ল্যাক্টোজ ইন্টলারেণ্ট আর মোশন সিক ছিলাম। তখন বাবার Toyota Land Cruiser-টাকে ওয়াক করে ভাসিয়ে দেবার জায়গা ছাড়া আর কিচ্ছু মনে হতনা। কারন আমার মহান মা জননী ভাবতেন আরো বেশী করে দুধ খাওয়ালে আমি ধীরে ধীরে টলারেন্ট হয়ে যাবো। তাই আমাকে নিয়ে দূরে কোথাও যেতে হলে সবার মোটামুটি রেইন কোট পরা ছাড়া উপায় ছিলনা।



হাইস্কুলে পড়ার সময় বাসায় একটা Nissan Pathfinder আসল। এই SUVটা আমার খুবই মনে ধরল। ঠিক করলাম ড্রাইভিং শিখে ফাটায় ফেলব। কিন্তু আমার ছোট ভাই-ও যে একই জিনিস ভেবে রেখেছে সেইটা বুঝলাম পরদিন। বিকেলে স্কুল থেকে এসে মহা সাজুগুজু করে মাকে বললাম আমার মনের কথা। মার কাছে যখন শুনলাম আমার ঘরের শত্রু বিভীষণ গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেছে এবং আগামী কয়েক মাস এই একই কাজ করবে, আমি গগনবিদারী এক চিৎকার দিলাম। মা অনেক বোঝানোর চেষ্টা করল, বলল যে কাল থেকে দুই ভাই-বোন একসাথে শিখবি, ইত্যাদি। কিন্তু আমার ত্যাঁদড় ভাইকে আমি মনে হয় একটু বেশী ভালো করেই চিনতাম। আমি শিওর ছিলাম ড্রাইভিং শেখার আগে এবং পরে ও সাথে থাকলে অন্য কেউ আর স্টিয়ারিং-এ হাত দিতে পারবেনা। সেই চির শত্রুর কারনে আমি আজো ম্যানুয়াল (স্টিক-শিফট) ড্রাইভ করতে পারিনা।



বাবার গাড়ি নিয়ে বহুত হয়েছে, এবার আমার Hotty-দের কথায় আসা যাক। University ২য় সেমিস্টারেও দারুন রেসাল্ট করার কারনে আমি পেলাম আমার নিজের প্রথম গাড়ি। উফ দিনটার কথা এখনও মনে আছে - মে মাসের ১ তারিখে ডেলিভারি আনতে যাবার কথা আমার ব্র্যান্ড-ন্যু Mazda 3 GS (২০০৭)। আগের রাতে একফোঁটা ঘুমাইনি - ঘুমাতে পারিনি। বিকেলে শো-রুমে গিয়ে কোনমতে পেপার্সে সাইন করে উড়ে গেলাম গাড়িটা দেখতে। Oh boy!!! প্রথম দর্শনে প্রেম। পুছকি একটা 4-door Sedan, কেবল ফ্রন্ট হুইল ড্রাইভ, 4 সিলিন্ডার, 122 horsepower এর 1.8 liter ইঞ্জিন - এমন আহামরি কিছুইনা। এর আগে 6 সিলিন্ডারের নিচে কোন সিডানও চালাইনি। কিন্তু আমি পুরা কাত হয়ে গেলাম। গাড়িতে মাইলেজ ছিল ১২ কিমি - গ্যাস স্টেশনে গিয়ে গাড়িতে গ্যাস ভরতে যতটুকু যেতে হয়েছে শুধু ততটুকু। গতবছর নভেম্বর মাসে একটা হাইওয়ে এক্সেডেন্টে আমাকে একটুও আচড় না লাগতে দিয়ে নিজে শহীদ হয়ে যায় আমার baby car। মনে হয়েছিল আমার Best Friend মারা গেছে। কত এডভেঞ্চার, কত স্মৃতি একসাথে - কার হেইভেনে যেন ভালো থাকে আমার লক্ষী মাযদাটা।



মাযদাটার দুঃখ ভুলবার আগেই নতুন একটা গাড়ি কেনা বাঞ্ছনীয় হয়ে দাড়ায়। মন খারাপ করে কার শপিং করছি - কিচ্ছু ভালো লাগেনা। গাড়ি দেখলেই বাড়ি মেরে বসতে ইচ্ছে হয়। ভেবেছিলাম আর সিডেন কিনবনা - এইবার SUV না হলেই নয়। একবার জানে বেচে গেছি এক্সেডেন্ট থেকে, এইবার দরকার একটা ইয়া-ভিশুম টাইপ গাড়ি। এদিকে ভালো SUV কেনার মত টাকাও নাই - ফকিরা স্টুডেন্ট মানুষ। ঠিক করলাম Ford Escape কিনব। শো-রুমে মন খারাপ করে পার্ক করছিলাম, চোখ পড়লো রাস্তার ওপারে। সঙ্গে সঙ্গে টাশকী, গাড়ি ঘুরিয়ে দিলাম ছুট ওইপাশে - এ আমি কি দেখলাম! এইটা গাড়ি না হয়ে পোলা হইলে আমি এক্ষুনি বিয়ে করে ফেলি - এই রকম অবস্থা তখন আমার। 168horsepower@6000RM, 2.4 liter ইঞ্জিন, 20 inch এলয় হুইল, ঝাকানাকা মুনরুফ, বিশাল স্পয়লার, অটো রোড সেন্সর, ক্রুজ কন্টোল, 710 watts ৯-স্পিকার সাউন্ড সিস্টেম বিল্ট-ইন সাব-উফার সহ, আর হিটেড ফ্রন্ট সিটস। আমি আবার প্রেমে ছাগল হয়ে গেলাম Mitsubishi Lancer GT (২০০৯)-এর। আমার মত বাঁদর মেয়েও এখন আর খুব একটা স্পিডিং করেনা এই কিটিটাকে পেয়ে (স্পিডিং করা এমনিতেও খুবি ক্ষ্যাত কাজ)। এই লেখা পর্যন্ত এটাই আমার জানের জান - আমার নতুন বেস্ট ফ্রেইন্ড - আমার ব্ল্যাক ক্যট।





[ইগনিশনে কী তারপর প্লে – এটা আপাতত আমার ব্ল্যাক ক্যাট সং অফ দ্যা মান্থ।]
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৪২
১২৬টি মন্তব্য ১১৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×