somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি ব্লগ: হিচকক, অন্তহীন, কখনো আসেনি আর......

০২ রা নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নানা ধরণের ছবি দেখা হয়। কিছু ছবি ভাল জেনে দেখি, কিছু এমনিতেই দেখা হয়। অসংখ্য ছবি জমা হয়ে আছে, সময়ের অভাবে দেখা হচ্ছে না। অসংখ্য ছবি এখনো কেনার আছে, কেনা হয় না। আজকাল হলিউডের বাইরের ছবির দিকে ঝোঁক বাড়ছে। সব সময় পাওয়া যায় না, কোনটা ভাল তাও সব সময় জানা থাকে না। জানতে পারলে ভাল হতো। সেদিক থেকে ব্লগ একটা ভাল মাধ্যম।
সময় হাতে থাকে কম, তারপরেও ফাঁকে ফাঁকে ছবি দেখা হয়েই যায়। সেরকম কিছু ভাল লাগার ছবি-

হিচকক আর হিচকক: গুনে দেখলাম আমার কাছে হিচককের ১৮ টা ছবি আছে, আরও দেখা ছিল ৪টা। কিছু ছবি তো পাওয়াই যেতো না। এবার পেয়ে গেলাম, একসাথে ৪৮টা। কিনে ফেললাম পেয়েই। মনে করেছিলাম টানা সবগুলো দেখে ফেলবো। এর মধ্যে অন্য কোনো ছবি আর দেখবো না।
হিচককের ছবির বিশেষত্ব হল, ছবির চরিত্ররা সাধারণ মানুষ, এরাই বড় ধরণের বিপদের মধ্যে পড়ে যায়। বেশিরভাগ চরিত্র এরকমই। দি রং ম্যান এই ধারার ছবি।

হেনরি ফন্ডা একজন মিউজিসিয়ান। সৎ এবং সাধারণ মানুষ। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বীমার পলিসির বিপরীতে অর্থ ঋণ নিতে গেয়ে বড়লো সংকটে। অফিসের সবাই সনাক্ত করলো একজন ডাকাত হিসেবে, যে একবার এই বীমা অফিস থেকে অর্থ ডাকাতি করে নিয়েছিল। শুরু হয়ে গেল মহাঝামেলা।
ডায়াল এম ফর মার্ডার তার বহু বিখ্যাত একটা ছবি। অনেক আগে এইতবার নামে একটা হিন্দি ছবি দেখেছিলাম। ডিম্পল আর রাজ বাব্বর। ছবিটা দেখে ভেবেছিলাম বাহ! এরকম ভাল ছবি হিন্দিতেও হয়। তারপর দেখলাম দি পারফেক্ট মার্ডার।

মাইকেল ডগলাসের। সেটি আর এইতবার প্রায় এক রকম। এবার ডায়াল এম ফর মার্ডার দেখে বুজলাম এইতবার হচ্ছে এটির হিন্দি সংস্করন। পারফেক্ট মার্ডার খানিকটা অন্যরকম। টাকার লোভে বউকে খুন করার মতলব আটে টনি ওয়েনডিচ। অসাধারণ এক পরিকল্পনা তৈরি করে। এইটা নিয়াই ছবি।
লাইফবোট একটু ভিন্ন ধারার ছবি। জন স্টেইনবেকের গল্প নিয়ে ছবি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকার সময়ের ছবি।

জার্মানিদের গোলায় ডুবে যাওয়া জাহাজের কয়েকজন আশ্রয় নেয় লাইফবোটে। ঘটনাক্রমে এদের একজন জার্মান, শত্রুপক্ষ। পুরো ছবিটা লাইফবোটে। ঘটনা আগাতে থাকে, ছবিটির প্রতি ভাললাগাও বাড়তে থাকে। চমৎকার একটা ছবি।
তবে নতুন দেখা ছবির মধ্যে সবচেয়ে ভাল লেগেছে আই কনফেস ছবিটি। মন্টোগোমারি কিফট একজন তরুণ প্রিস্ট। যুদ্ধ থেকে ফিরে প্রিস্ট হয়েছেন। চার্চের কেয়ারটেকার একজন দরিদ্র্য মানুষ। বউয়ের কষ্ট দেখে টাকা চুরি করতে যায় এক আইনজীবীর বাসায়। ধরা পড়লে খুন করে পালিসে আসে। কিন্তু শান্তি পায় না, কনফেস করে ফাদারের কাছে।

ফাদারেরও একটা অতীত আছে। ভালবাসার বিয়ে হয়ে যায়, সেই মেয়েকে আবার ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করেছিল খুন হওয়া আইনজীবীটি। পুলিশ এই ঘটনা জানতে পারায় সন্দেহ পড়ে ফাদারের উপর। ধরেও নিয়ে যায়। অথচ ফাদার জানে কে আসল খুনী। কিন্তু তার কাছে কনফেস করায় নৈতিক কারণে বলতে পারে না কাউকে। এরকমই এক ঘটনা নিয়ে ছবি। টানটান উত্তেজনার এক ছবি। হিচককের ছবিগুলোই এরকম। প্রথমেই জানা যায় কে খুনী। কিন্তু সে কি ধরা পড়বে? তার বেশিরভাগ ছবি সাধারণত এই প্রশ্ন নিয়েই।
আইনজীবীর কাজ মক্কেলকে বাঁচানো। নিজের অজান্তে কখনো উল্টোটাও ঘটতে পারে। দি প্যারাডাইন কেস সেইরকম একটি ছবি। অ্যানা পারাডাইনকে ধরা হয়েছে তার অন্ধ ও বয়স্ক ধনী স্বামীকে হত্যার দায়ে।

আইনজীবী গ্রেগরি পেকের দায়িত্ব তার পে মামলা লড়া। গ্রেগরি পেক প্রমান করতে চায় অ্যানা খুন করেনি, বরং তার সন্দেহ বাসায় কাজ করা ল্যাটো। ল্যাটো ঘৃণা করে অ্যানাকে, অ্যানাও তাই। কিন্তু অ্যানা চায় না ল্যাটোকে খুনের জন্য সন্দেহ করা হোক। তারপরের ঘটনা চমৎকৃত হওয়ার মতো।
আমার এখন হিচককেক ৩১ নম্বর ছবি দেখা চলছে। দেখছি ফরেন করসপনডেন্ট।


অন্তহীন: এটি কোলকাতার বাংলা ছবি। পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী। এটি তার দ্বিতীয় ছবি। প্রথম ছবি অনুরণন দেখেছিলাম। মুগ্ধ হয়েছি বলা যায়। বিশেষ করে ক্যামেরার কাজ, লোকেশন ও অভিনয় দেখে। থিমও অনেক আধুনিক। তাঁর দ্বিতীয় ছবি অন্তহীন।

রাহুল বোস, অপর্না সেন, শর্মিলা ঠাকুর ও রাধিকা। বৃন্দা আর অভিকের গল্প। রঞ্জন আর পারমিতারও গল্প এটি। বৃন্দা টেলিভিশন সাংবাদিক, অভিক পুলিশ কর্মকর্তা। সম্পর্ক পেশাগত। বৃন্দার অফিসে কাজ করে অপর্না, অপর্নার ছাড়াছাড়ি হওয়া স্বামী রঞ্জনের ছোট ভাই অভিক। সম্পর্ক গড়ে ওঠে দুজনের মধ্যে। অথচ দুজনের মধ্যে সম্পর্ক আছে অনেক আগে থেকেই।

ইন্টানেনেট চ্যাটের মাধ্যমে তৈরি সেই সম্পর্ক। সম্পর্ক, পেশা, জীবন-যাপন, সম্পর্কের পরিণতি, ভালবাসা, অপেক্ষা-এসব নিয়েই অন্তহীন। আধুনিক একটি ছবি, দেখতে ভাল লাগে। কোলকাতার বাণিজ্যিক ছবি খুব একটা দেখা হয় না। তবে ধারণার চেয়েও তারা যে অনেক এগিয়েছে সেটি বুঝা গেল ছবিটি দেখে। তবে ছবিটার মূল সম্পদ এর গান। অসাধারণ সুন্দর প্রায় প্রতিটি গান। আমি তো মহামুগ্ধ। চলচ্চিত্রের গান নিয়ে আমার ধারণাই পাল্টে গেছে।

অন্তহীনের গানগুলো পাবেন এখানে......

কখনো আসেনি: ছবিটা দেখে ভাবতে কষ্ট হয় এটি ১৯৬১ সালের ছবি। বাংলাদেশে এরকম ছবি হয়েছে, তাও ১৯৬১ সালে। পরিচালক জহির রায়হান। এই লোকটি যে কি মানের পরিচালক ছিলেন তা বুঝা যায় এই একটি ছবি দেখেই।

কখনো আসেনি জহির রায়হানের প্রথম ছবি। অভিনয়ে খান আতা ও সুমিতা। জহির রায়হান যে সময়ের তুলনায় অনেক এগিয়ে ছিলেন তা এই ছবিতেই প্রমানিত।
প্রয়োজনীয় তথ্য হচ্ছে এর ডিভিডি বাজারে পাওয়া যায়। জি সিরিজ বের করেছে, ভাল প্রিন্ট। আর ছবিটা নিয়ে খুব বেশি কিছু না বলে একটা লিঙ্ক দেই, নজরুলের এই লেখাটা পড়লেই যথেষ্ট।

রেভোল্যুশনারি রোড: এই ছবিটা কেন আমি দেরী করে দেখলাম তার কোনো ব্যাখ্যা নাই। গত বছরের ছবি। কেট উইনস্রেট ও লিওনার্দো ডি ক্যাপরিও। আমার দেখা সেরা ছবির একটা।

দাম্পত্য সম্পর্ক নিয়ে এতো ভাল ছবি খুবই কম আছে। রিডার ও এই ছবিটি ২০০৮ সালের। নিঃসন্দেহে ২০০৮ সাল ছিল কেটের। ছবিটা দেখে তীব্র মন খারাপও হলো।
৩৫টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×