somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে বাস্তবায়ন হচ্ছে তিস্তা মহাপ্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী দাদাগিরিকে থোরাই কেয়ার ।।

১৫ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


‘তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে’ এ খবরে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা পাড়ের মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। সরকার একমাস আগে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে চীন সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে সহজ শর্তে অর্থের জোগান দিতে বলেছে। এ খবর প্রচার হওয়ার পর তিস্তা পাড়ের মানুষ দারুণ খুশি। নিলফামারীর ডালিয়া পয়েন্ট থেকে শুরু করে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে যেন লেগে গেছে ঈদের খুশি। চীনের তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভাগ্যের চাকা বদলে যাবে। অর্থনৈতিকভাবে চরের মানুষ স্বাবলম্বী হবেন।

জানা গেছে, তিস্তা প্রকল্পে সহজশর্তে অর্থের জোগান সংক্রান্ত চিঠি দেয়ার পর দুই দেশের কুটনৈতিক পর্যায়ে সফলভাবে আলোচনা চলছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার যেমন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী; তেমনি চীন সরকারও অর্থ দিতে প্রস্তুত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিস্তা প্রজেক্টের কাজ শুরু হচ্ছে এই খবর নদীপাড়ের মানুষ ‘ঈদের চাঁদ’ দেখার মতো করেই প্রচার করছে। হাট-বাজার, ট্রেন-বাস এবং যেখানে যাকে পাচ্ছেন তিস্তা প্রজেক্ট হচ্ছে এ খবর দিচ্ছেন। কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে জানতে চাচ্ছেন ভারতের দাদাগিরিকে থোরাই কেয়ার করায় উল্টরাঞ্চলের মানুষের শেখ হাসিনা ইতিহাস হয়ে থাকবেন। তিস্তা প্রকল্পে চীনের কাছে অর্থ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের চিঠি দেয়ার খবরে মানুষ খুবই খুশি। তাদের ধারণা ছিল ভারতের মোদির বাধার মুখে বর্তমান সরকার চীনের অর্থায়নে তিস্তা প্রজেক্টের কাজ করতে পারবে না। কিন্তু সরকারের ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’ নীতিকে কঠোর হওয়ায় এ প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে। এটা উত্তরাঞ্চলের দুই কোটি মানুষের ভাগ্যের চাকা পাল্টে দেবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যপীড়িত উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে স্থায়ী সমৃদ্ধশালী করতে তিস্তা নদীকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে- ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। প্রকল্প পরিকল্পনা ও নদী পর্যবেক্ষণ কাজ দুই বছর ধরে করেছে চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না পাওয়ার ও চায়না রিভার ইয়েলো। তিস্তা প্রকল্পটি হবে আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও যুগোপযোগী। উত্তরাঞ্চলের ‘পাগলা নদী’ খ্যাত তিস্তা ড্রেজিং করে কোটি কোটি মানুষের দুঃখ ঘুচানো হবে। এ প্রকল্পে ১০৮ কিলোমিটার নদী খনন, নদীর দু’পাড়ে ১৭৩ কিলোমিটার তীর রক্ষা, চর খনন, নদীর দুই ধারে স্যাটেলাইট শহর নির্মাণ, বালু সরিয়ে কৃষিজমি উদ্ধার ও ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করা হবে। শুধু তাই নয়, এ প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে প্রতি বছরে ২০ হাজার কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে। চীনের প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলার মানুষের ভাগ্যের চাকা।

তিস্তা প্রকল্প হচ্ছে এ খবর বাংলাদেশের মিডিয়ায় কম করে প্রচার করায় ভারতের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন গ্রামের মানুষ। তাদের অভিযোগ ভারত অখুশি হবে, সেই ভয়ে দেশের অনেক মিডিয়া চীনের কাছে তিস্তা প্রকল্পের অনুমতি দিয়ে চিঠি দেয়ার খবর প্রচার করছে না। ভারত যুগের পর যুগ ধরে তিস্তা চুক্তির মুলা ঝুলিয়ে রেখেছে। চীনের তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভারত থেকে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত পানি আর প্রয়োজন পড়বে না। তিস্তা নদীর গভীরতা প্রায় ১০ মিটার বৃদ্ধি পাবে। বন্যায় উসলে ভাসাবে না গ্রাম-গঞ্জ জনপদ। আবার শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে যাবে না। সারা বছর নৌচলাচলের মতো পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। নৌবন্দর এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দুই পাড়ে থানা, কোস্টগাড, সেনাবাহিনীর জন্য ক্যাস্প স্থাপন করা হবে।

জানা গেছে, তিস্তা প্রকল্পে পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান সিটির আদলে তিস্তার দুইপারে পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহর, নদী খনন ও শাসন, ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা, আধুনিক কৃষি সেচ ব্যবস্থা, মাছ চাষ প্রকল্প পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে ৭ থেকে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তিস্তা নদীরপাড়ের জেলাগুলো নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধায় চায়নার তিনটি প্রতিনিধি দল কাজ করছেন। তারা এসব কাজের পরামর্শ দিয়েছেন। মূলত এ প্রকল্পের আওতায় তিস্তা নদীর দুইপাড়ে ২২০ কিলোমিটার গাইডবাঁধ নির্মাণ করা হবে। বাঁধের দুইপাশে থাকবে সমুদ্র সৈকতের মতো মেরিন ড্রাইভ। যাতে পর্যটকরা লংড্রাইভে যেতে পারেন। এছাড়া এ রাস্তা দিয়ে পণ্য পরিবহন করা হবে। নদী পাড়ের দুইধারে গড়ে তোলা হবে- হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট ও পর্যটন নগরী। টাউন নামের আধুনিক পরিকল্পিত শহর, নগর ও বন্দর গড়ে তোলা হবে। তিস্তাপাড় হয়ে উঠবে- পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান সিটির মতো সুন্দর নগরী।

উত্তরাঞ্চলে ডালিয়ায় তিস্তা সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হলে ভারত এই প্রকল্পের ৬৫ কিলোমিটার উজানে কালীগঞ্জের গজলডোবায় সেচ প্রকল্প তৈরি করে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারত তিস্তা নদীর পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে তিস্তা পাড়ে প্রতিবছর বন্যা ও খরা দেখা দেয়। নদীভাঙনে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর গৃহহারা হন। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি দীর্ঘদিন থেকে ভারত ঝুলিয়ে রেখেছে। ফলে তিস্তা পাড়ের লাখ লাখ মানুষকে বাঁচাতে বর্তমান সরকার নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার আর্থিক সমৃদ্ধি স্থায়ী রূপ নেবে। মানুষ কাজ পাবেন। পাল্টে যাবে এসব জেলার মানুষের জনজীবন। তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখের দিন শেষ হয়ে যাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেই।

নিন্দুকেরা এখনো বলছেন দেশিও ভারতীয় এজন্টরা এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়িত না হয়।

তিস্তা নিয়ে আমার আগে লেখা।









কপিপেস্ট এখান থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:৫৯
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×