somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"আন্তর্জাতিক নারী দিবস" → নারীর প্রতি শ্রদ্ধ্যার্ঘ

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"আমার চোখে অবাক বিস্ময়"

৮ই মার্চ। ক্যালেন্ডারের পাতায় সাদামাটা আর পাঁচটা দিনের মতোই। কিন্তু তাৎপর্য বিবেচনায় এই দিনটি স্বকীয়তায় ভাস্বর। "আন্তর্জাতিক নারী দিবস"।
১৯৭৫ সালে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয়। নারীর সম্মান, মর্যাদা, সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা, কর্মক্ষেত্রে তাদের সহাবস্থান, আমাদের জীবনে চলার পথের সার্বক্ষণিক সঙ্গী এই সবগুলো বিষয়ই নারী দিবসের প্রতিপাদ্য।

তবে আজ আমি নারী দিবস নয় বরং শুধু নারী নামক আমার এই অবাক বিস্ময় নিয়ে লিখবো।

কবিতাঃ নারী
------------------- হৃদয় [আমার নাম কিন্তু B-) ]

তোমার জন্য দিনরাত্রি আর
রাত জেগে দেখি স্বপ্ন।
তোমার জন্য ঘাস ফুল আর
মুঠো ভরে আনি আলো।
তুমি বহতা নদী
আমি পিপাসার্ত
ঘুরেফিরি পেতে তোমার সান্নিধ্য।
সৃজন করি বিধাতা তোমায়
চেয়ে রয় ঘোর লাগা দৃষ্টি
নারী তুমি এক অবাক সৃষ্টি।

নারী তুমি বহমান নদী। তোমার প্রতিটি বাঁকে আমি খুঁজে পাই নতুন জীবন দর্শন। তুমিই কখনো মা, কখনো মেয়ে, কখনো বোন কিংবা জীবন সঙ্গীনী। এটা যতটা না বড় বিস্ময় তার থেকেও বিস্ময়কর যখন ভাবি একা তুমি কিভাবে পারো এতগুলো চরিত্র অবলীলায় চিত্রায়ন করতে।

কখনো মা হয়ে স্নেহের পরশ বুলিয়ে দাও। ভালোবেসে সযত্নে লুকিয়ে রাখো আমার যত ভুল। আমার সব অযাচিত অভিপ্রায় পূর্ণতা পায় তোমার কাছে। আর কেনই বা পাবে না। আমি যে তোমার নাড়ি ছেঁড়া ধন। তোমার রক্ত মাংস নিয়েই তো আমার বেড়ে ওঠা। তোমার আঁচল তলে খুঁজে পাই এক পরম সুখানুভূতি। মা তুমি যেন গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদে হঠাৎ বৃষ্টি। ভালোবাসি তোমায় মা। কিন্তু কখনো বলা হয় নি এ ভালোবাসার তীব্রতা কতো।

কখনো বা প্রিয় আদরের বোন হয়ে খুনসুঁটিতে ভরিয়ে রাখো আমায়। তোমার সব চাওয়া পূরণ করতে ওষ্ঠাগত আমার প্রাণ। তবু নিস্বার্থ ঐ চাহুনি আর কোমল হাতের স্পর্শের সাথে ওই আদর মাখা সুরে ভাইয়া ডাকের কাছে হার মানে সব কষ্টেরা। তোমার দশ্যিপনায় বুকের মাঝে অনুভব করি এক অদম্য প্রেম।

আবার তুমি আসো। আসো অন্য রূপে। তোমার জন্য হৃদয় মাঝে লালন করি পিতৃস্নেহ। তুমি যখন হও মেয়ে আমার, তোমার ওই মায়াময় মুখ আর আধো আধো বাবা ডাক, আমি জয় করবো বিশ্বভুবন। তোমার প্রতি পদক্ষেপে আমি বিছিয়ে দেই আমার হৃদয়। আমি ভালোবাসি তোমায়।

সুতীব্র তুমি আর তোমার উপস্থিতি। প্রতিটি মুহূর্তকে তুমি করে নাও তোমার। আমার চারপাশ আমার সত্ত্বা তুমিময়। জীবনের গতিময়তায় তুমি ছন্দসম। তোমার কাব্যিক ঐ স্পর্শ আমায় দান করে কবিত্ব। প্রেমময় তোমার তাড়নায় অনুভব করি বেঁচে থাকাটা। কখনো বা হয়ে রাজকন্যা কখনো বা রসুই ঘরের দক্ষ কারিগর। তুমি সামলে দিয়েছো জীবন। মানেহীন আমায় করেছো মহান। তুমি চিনিয়েছো সেই পথ যার গন্তব্য সাফল্য। তোমার হাত ধরেই আমার বিশ্বজয়। তুমি অর্ধাঙ্গিনী আমার। আমার মনের ঘরের পুরোটা জুড়ে তোমার অস্তিত্ব। অন্ধকারময় আমার মাঝে তুমি একরাশ আলোকছটা। নির্দ্বিধায় আমি স্বীকার করে নেই আমার মাঝে আমার আমিটা যতটুকু তুমি ঠিক ততটুকু। বেশি বৈকি কম নয়।

কিন্তু এ সমাজ কলুষতা, ধর্মান্ধতা আর অত্যাচারীর চাদরে মোড়া এক বিভীষিকার নাম। এর লোভাতুর চোখে তুমি ক্ষতবিক্ষত হও। ওদের পাষাণপ্রাণ কেঁপে ওঠে না। কতিপয় নরপশু যখন তোমার ওই শরীরটাকে খুবলে খায় সমাজ তখন নির্বিঘ্নে নিদ্রা যায় নতুবা আয়েশ করে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে তোমার পরাজয়। ওরা বারবার করবে তোমায় অপদস্ত। সুযোগ খুঁজবে তোমার সতীত্বে কলঙ্ক অঙ্কনের। তোমাকে করতে চাইবে বিনোদনের খোরাক। কিন্তু ওরা জানে না এ যে শুধু তোমার নয় বিবেকের পরাজয়। মনুষত্বের গুমড়ে কেঁদে ওঠা। সময়ের বুকে মানুষের পশুত্ব বরণ।



কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, তুমি যত বেশি এগুচ্ছো ততই তোমার জীবনে সংযোজিত হচ্ছে অত্যাচার-নির্যাতনের নতুন মাত্রা। শিক্ষা, পেশা, পরিবার সর্বক্ষেত্রে তুমি সম্মুখীন হও অধিকার আদায়ের তীব্র প্রতিদন্ধীতায়। তবু তুমি মাথা উঁচু রেখে করে চলো করে যাও বেঁচে থাকার সংগ্রাম। ওরা তোমায় চেপে ধরে, তুমি মুক্তির আনন্দ পাও ওরা পরাজয়ের। ওরা তোমায় ধর্ষন করে, তুমি বিচারের দাবিতে চিৎকার করো ওরা মুখ লুকোয় মুখোশের আড়ালে।

তুমি অজেয়। অপরিমেয় জীবন শক্তি তোমার মাঝে। আমি স্যালুট করি তোমায়। যতবার তোমায় দেখি ততবার নতুন করে তোমায় আবিষ্কার করি। তোমায় একটা অনুরোধ করি, তুমি শিউলি ফুল হয়ো না। যে ঝরে যায় দিনের শুরুতে। তুমি নির্মেঘ আকাশে একফালি চাঁদ হয়ে থেকো। ঝড়ো রাতে হয়ে দমকা বাতাস আর কোন রৌদ্দ্রজ্জল দিনে আমার ছায়াসঙ্গী হয়ে।

উৎসর্গঃ আমি জানি না আমার এই লেখাটা যাকে উৎসর্গ করবো তাকে উৎসর্গ করার উপযুক্ত হয়েছে কিনা। প্রিয় মনিরা আপু। আপুকে আমি দেখি নি শুধু তার কিছু লেখা আমি পড়েছি। কিছু মন্তব্য পেয়েছি। তার লেখায় কিছু মন্তব্য আমি করেছি। এটুকুই। তবুও আপু নামক সম্পর্কের যে শূন্যতা আমার আছে সেটা  প্রকট হয়েছে আপুকে সামুতে পেয়ে। ভালো থাকবেন আপু।
২৪টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×