হঠাৎ করে আমার ছোট বোনটাকে খুব মনে পরছে।
কয়েকদিন আগে বাসায় গিয়েছিলাম। তিশা কে জানাইনি। ওহ... হ্যাঁ। ওর নাম তিশা। তো, আমি পৌছালাম যখন রাত প্রায় দশটা। গ্রামে সাতটার পর কাউকে বাহিরে পাওয়া যায় না। আটটার পর কেউ জেগে থাকে না। যখন আমি আমাদের রুমে ঢুকলাম, তিশা ঘুম থেকে উঠে এক লাফে আমার কোলে আসলো। মনে হচ্ছিল, পারলে আমার বুকের ভিতরে ঢুকে যেত। যাতে সব সময় আমার সাথে থাকতে পারে। মুহূর্ত টা কল্পনা করে চোখে পানি আসছে।
তারপর,
আমাদের কত মান অভিমান।
রাগ।
বিচার দেওয়া মাস্ট।
সব শুনলাম। অভিমান ভাঙ্গালাম। রাগ ভাঙ্গালাম। বিচার করলাম আমার আম্মুর আর বড়(ছোট দুইটার মদ্ধে) বোনের। আব্বুর ও বিচার করলাম। সবার শাস্তি, এরপর আর তিশাকে কেউ পড়তে বলবে না। বললেই তিশা আমার সাথে ঢাকায় যাবে। আর ফিরে আসবে না।
পরের কয়েকদিন ওর বিরক্তে অতিষ্ঠ হলাম। আহা! বিরক্তই তো চাই।
সকালে আমি ঘুম থেকে উঠি, এগারোটায়। তিশা আমাকে ডেকে তোলে সাতটায়। তারপর মুখ ধোওয়ার সময়টুকু দেয় না নাস্তা করার জন্য।
আমি যেখানে যাব, সেখানে উনাকে নিয়ে যেতে হবে। না হলে চিরদিনের আড়ি। আড়ি আড়ি আড়ি।
যেকোনো ব্যাপারে তিশার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
আরও অনেক কাহিনী।
কয়েকদিন থাকার পর আমাকে ঢাকায় ফিরতেই হবে। উপায় নেই। আর ঢাকায় ফিরলে আমি ভয়ে তিশার সাথে কথা বলতে পারি না। পিচ্চিটা যখন নিরীহভাবে আমাকে জিজ্ঞেস করে,"ভাইয়া কবে আসবা?" তখন আমি "এখনি" ছাড়া অন্য কোন উত্তর দিতে পারি না।
তিশা বলল, আমাকে গঞ্জে এসে সিএনজি তে উঠায়ে দিবে। আব্বুরও আমার সাথে ঢাকায় আসার কথা।
তিশা আসলো গঞ্জে। সারাটা পথ গল্প। অনেক। আমি আবার কবে বাসায় ফিরব, সেটাই বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করল।
আমি সিএনজিতে বসে আছি... এখন ছেরে দিবে। স্টার্ট দিয়েছে। পাশে তিশা। বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে করুন চোখে। বোঝা যাচ্ছে, ও চায় না, আমি ওর চোখের পানি দেখে ফেলি। এতোটুকু মেয়ে অনেক বেশি বুঝে ফেলেছে। আমি ওর চোখের পানি সহ্য করতে পারব না। তারপর উল্টা দিকে ঘুরে জোরে একটা দৌড় দিল বাসার দিকে।
আমার চোখ থেকে তখন কয়েক ফোঁটা পানি আমি মুছলাম রুমাল দিয়ে। এখন যেমনটি মুছছি হাত দিয়ে।