somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবাক ভালোবাসা!

২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অরশির কথা খুব মনে পরছে। আজকাল অফিসে বসে বসে কাজের সময় ওকে দেখতে ইচ্ছা করে। অর ছবি দেখে মন ভরে না।
ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরল সেহান। রাস্তায় অনেক জ্যাম। আজ রাত আটটা বেজেই যাবে। জ্যামে বসে থাকতে বিরক্ত লাগছে। এতো জ্যাম লাগার কথা না। ভিআইপি ক্লিয়ারেন্স নিয়ে কেউ হয়ত রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। এরজন্য সাধারণ মানুষকে ঘন্টার পর ঘন্টা বসসিয়ে রাখা হয়েছে। কোন মানে হয়? ওদের এতোই সিকিউরিটির অভাব, হেলিকপ্টার ইউজ করলেই তো হয়। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার কি দরকার তবে সাধারণ মানুষেরও দোষ আছে। তাদের দোষ, তারা অসাধারন মানুষ না।
আগে যখন অরশির সাথে বের হত, তখন জ্যাম অনেক ভাল লাগত। একটুও বিরক্ত লাগত না। অরশি বলত,
এই, দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু। তারাতারি ফিরতে হবে।
হ্যাঁ হ্যাঁ। ফিরছ তো বাবু। রাস্তায় জ্যাম, কি করব?
চল, হেটে যাই।
হাটতে তো আমার ভালোই লাগে। কিন্তু তুমি তো কষ্ট পাবা। তোমার পা ব্যাথা করবে।
করলে করুক। তুমি আমার পা টিপে দিও
হেহেহে! আচ্ছা। চল।
কি আচ্ছা? তুমি আমার পা টিপে দিবে?
হুম। তাই তো বললে।
ধুর বোকা! বিয়ে হইলে তুমি আমার স্বামী হবে। তুমি আমার পায়ে হাত দিবে, এটা হতেই পারে না।
তাহলে বসেই থাকি। কি আর করা?
না না। চল। হেটে যাব। আমার পা ব্যাথা করবে না।
সত্যি তো? আচ্ছা, চল...
কতদিন অরশির সাথে হাটে না, একসাথে রিক্সায় বসে না! খুব মনে পরে ওকে। খুব দেখতেও ইচ্ছা করে। কিন্তু ওকে তো আর সব সময় দেখা যায় না। বাসায় রাখা আছে। বাসায় না গেলে দেখা সম্ভব না।
বাস থেকে নেমে পরল সেহান। হেঁটে হেঁটে যাওয়া যাক। তাহলে সিগারেট খেতে খেতে যাওয়া যাবে। অবশ্য, সেহান বাস থেকে নেমে পরলেই বাস ছেড়ে দেয় সবসময়। আজ এমনটা হবে না। আজ বাস নড়াচড়া করার কোন নাম গন্ধই পাওয়া যাচ্ছে না।
আরেকদিন এভাবে হাটছিল সেহান। একা একা। দুইদিন ধরে অরশিকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ ফোন করল।
হ্যালো! কি হল? সমস্যা কি? ফোন বন্ধ কেন? গ্রামে গেলে ফোন বন্ধ করতে হয়?
সরি।
সরি কেন? কখনও দেখেছ, তোমার উপর আমি রাগ করে থাকতে পারছি কয়েক মুহুর্তের বেশী?
না। কিন্তু...
কিন্তু কি?
দেখ, আসলে বাস্তবতা অনেক কঠিন। এটাকে মেনে নেওয়া উচিত। তাই না?
এসব কথা বলতেছ কেন?
আসলে, তোমার সাথে আমার বিয়ে হওয়া সম্ভব না।
কেন?
দেখ, কিছু মনে করো না। জানি, তুমি অনেক উন্নতি করবে জীবনে। কিন্তু আমার বাবার রাজি হওয়ার একটা ব্যাপার আছে। তোমার বাবা গ্রামের একটা স্কুলের শিক্ষক। আমার বাবা আসলে মেনে নিবে না তোমাকে।
আজব! তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে নাকি আমার বাবা কে? আর আমার বাবাকে অপমান করার সাহস তোমাকে কে দেয়?
দেখ, কিছু মনে করো না। আমি তো আগে এসব ভাবিনি। কিন্তু আমার মা আমার চোখ খুলে দিয়েছে। এসব আমার ভাবা উচিত ছিল।
বাহ!
প্লীজ, কিছু মনে করো না।
আচ্ছা।
কি করো?
কিছু না। মনে পরছে। কে যেন বলেছিল, আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না। স্বয়ং ঈশ্বরও না।
সরি!
ইটস ওকে।
ফোন রেখে দিল সেহান। বাসায় এসে গেছে প্রায়। পাশের দোকান থেকে এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে নিল। আজকাল রাতে ঘুম হয়না। সারারাত জেগে সিগারেট খায়। আর অরশিকে দেখে।
অরশি একদম সিগারেট পছন্দ করত না। একবার ওরা হাঁটছিল। রাস্তায় কেউ নেই। অনেক সকাল বেলা। হঠাৎ অরশি ওকে জড়িয়ে ধরল। সাথে সাথে আবার ছেড়ে দিল।
এই, তোমার গায়ে সিগারেটের গন্ধ কেন?
সরি অরশি!
তোমাকে কতবার বলেছি, সিগারেট খাবা না?
আজ শেষ বারের মতো বলছি, আর খাব না। প্রমিস। আজ তোমার প্রমিস।
এরপর সেহান সিগারেট ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু ওইদিনের ঘটনার পর আবার সিগারেট জ্বালিয়েছিল। কেন জানি খারাপ লাগছিল ওর ফোন রাখার পরে। সামনে সিগারেটের দোকান পরল। কিনে ফেলল।
দরজা খুলে ভেতরে ঢুকল। এতো বড় একটা বাসা। সেহান একা থাকে। তবুও খারাপ লাগে না। কারন, এই বাসায় আছে অরশি।
মাঝেমাঝে পুর্নিমার চাঁদ অনুমতি ছাড়াই ঢুকে যায় জানালা দিয়ে। সেহান একা একা চাঁদ দেখে। জ্যোৎস্না মাখে গায়। আর অরশিকে দেখে। জীবন অনেক সুন্দর মনে হয়।
ঘরের লাইট জ্বালিয়ে দিয়ে ডীপ ফ্রিজ খুলে অরশির কাটা মাথা দেখে নিল সেহান। এখন মনে শান্তি শান্তি লাগছে। অরশিকে না দেখেলে যে ভালোই লাগে না। তবে দিনদিন মেয়েটার মুখ কেমন জানি শুকিয়ে যাচ্ছে।

(ফেসবুকে কোন একটা জায়গায় কয়েক লাইনের একটা লেখা দেখেছিলাম এই টাইপ। সেটা দেখেই এটা লিখতে ইচ্ছা করল। অই লেখাটা কই দেখেছি, মনে করতে পারছি না। sorry for that)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×