একবার শীতকালে এক রাজপুত্রের পায়ে ময়লা লাগলো। রাজপুত্র ভীষণ ক্ষুব্ধ। কেন তার পায়ে ময়লা লাগবে? ময়লা পরিষ্কারের উপায় বলার জন্য সব মন্ত্রীকে মন্ত্রী সভায় ডাকল।
একটা মন্ত্রী এসে বলল, হুজুর, ধুয়ে দিব? পানি আনাব?
রাজপুত্র পা ধুবে না। শীতকালে পায়ে পানি ঢেলে ঠান্ডা লাগাবে? হতেই পারে না।
অন্য একটা মন্ত্রী এসে বলল, পানি গরম করে দিলেই হবে হুজুর।
নাহ! এতেও রাজপুত্র খুশি না। বেশি গরম হয়ে গেলে পা পুড়ে যেতে পারে। সেই রিস্ক রাজপুত্র নিবে না।
একটা মন্ত্রী তোয়ালে এনে বলল, হুজুর, মুছে দেই?
রাজপুত্র রাজি হল না। তবে মনে মনে অই মন্ত্রীর উপর খুশি হল। অন্য মন্ত্রীরা সেটা বুঝতে পারল। কে বেশি খুশি করতে পারে, সেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল।
একটা মন্ত্রী এসে নিজের পাঞ্জাবীর কোনা দিয়ে মুছে দিতে চাইল। রাজপুত্র ভীষণ খুশি।
এটা দেখে অন্য আর একটা মন্ত্রী এসে আগের মন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে পায়ের কাছে বসে পরল। মাথার পাগড়ি খুলে নিয়ে পা মুছে দেওয়া শুরু করল।
দূরে একটা বৃদ্ধ মন্ত্রী বসে বসে সব দেখছে। কিন্তু কিছু বলছে না। এটা দেখে রাজপুত্র রেগে গেল। ওকে সাথে সাথে মন্ত্রীসভা থেকে বের করে দেওয়া হল।
দারওয়ান সব দেখছিল। সে রাজপুত্রকে এসে বলল, হুজুর, আমি একটা চেষ্টা করি?
হুম। কর।
দারওয়ান একেবারে রাজপুত্রের পা চাটা শুরু করে দিল। রাজপুত্র মহাখুশি। সাথে সাথে দারওয়ান কে অই বৃদ্ধ মন্ত্রীর পদ দিয়ে দিল।
এদিকে অন্য মন্ত্রীরাও ভীত হয়ে গেল। যদি তাদেরও চাকরী চলে যায়, বউ বাচ্চাদের খাওয়াবে কি? সবাই একসাথে এসে রাজপুত্রের পায়ের কাছে পরে গেল। সবাই মিলে চাটা শুরু করল। সবাই চেটেই রাজপুত্রের পা পরিষ্কার করে দিচ্ছে। এতক্ষণে পরিষ্কার হওয়ার কথা। কিন্তু কেউ থামছে না। যদি আগে থামে, তাহলে রাজপুত্র কম খুশি হবে। যে সবার শেষে থামবে, রাজপুত্র তার উপর সবচেয়ে বেশি খুশি হবে।
এদিকে যে দারওয়ান মন্ত্রী হল, সে মন্ত্রী সভার দরজা বন্ধ করে দিয়ে বাহিরে একটা সিংহাসন নিয়ে বসে পরল।
ভেতরে চাটাচাটি চলছে। আর বাহিরে বসে বসে দারওয়ান নিজের ইচ্ছা মত দেশ চালাচ্ছে।
যে অন্যায় করছে, তার শাস্তি দারওয়ান এর পা চাটা দুই মিনিট। এরপর তাকে পাঠানো হচ্ছে উপদেষ্টা পর্ষদ এ। যে যত বড় অন্যায় করে, সে তত বড় পদে চাকরী পাচ্ছে। যে যত নিপুণ ভাবে পা চাটে, তার জন্য তত ভালো পজিশন।
পা চাটা-চাটির এই রাজনীতি শেষ হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি।
(ইহা একটি কাল্পনিক গল্প)