somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিজুস প্রেম। পর্ব-৮

২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব-৭

মেয়েটার বিষ্ময়ের ঘোর কাটতে কিছুটা সময় লাগল, অথবা সে প্রথমে ঠিকভাবে বুঝতে পারেনি যে, নিচে মাঠের মধ্যে যে ছেলেটাকে দেখা যাচ্ছে সে আমি না অন্য কেউ। কথাটি সে ফোন করে আমাকে জিজ্ঞেস করল-

- আচ্ছা একটু ঘরে যাই?
- কেন ?
- ছোটবোন জেগে গেছে মনে হচ্ছে, আমাকে পাশে না দেখলে আবার কান্না করতে পারে, তখন আবার আব্বুর ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমার খবর হয়ে যাবে।
-ও আচ্ছা যাও, বোনকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে নিচে আসো তাড়াতাড়ি, আমি চাঁদের আলোয় তোমাকে একটু দেখি, তুমি আমাকে দেখো, এই স্নিগ্ধ, কোমল, সু-নীল আলোরছটায় দেখি কেমন তোমার রূপ।
- উম, দাঁড়াও একটু।

কলটি না কেটেই সে ঘরে গিয়ে তার ছোট বোনের সঙ্গে কথা বলছে, কয়েকটি কথা আমার কানে এল। কিছুক্ষণ চুপচাপ, এরপর তার কণ্ঠ আবার শুনতে পেলাম, 'এবার লক্ষ্মী আপুর মতো ঘুমাও' 'তুমি আসো'। আপু একটু বাথরুমে যাই, তুমি ঘুমাও। এবার সে মোবাইলটা হাতে নিয়ে আবারও বেলকোনীতে এসে দাঁড়ালো।

-হুম কি বলে আমার শ্যালিকা।
- তোমার শ্যালিকা বলে আমারে ছাড়া ঘুমাবে না।
- হায় হায় তাহলে আমি এখন কই ঘুমাবো?
- কি! কই ঘুমাবা মানে? আমি কি তোমাকে আমার ঘরে ঘুমাতে দেবো নাকি?
- আরে নাহ, আমি এমন অর্থে বলিনি। কথাটা এজন্য বললাম যে, তোমাকে না বললাম নিচে আসতে, তুমি আসলেনা তাই আমি এখন আর এখানে থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। বাকি রাতটুকু কোন হোটেলে ঘুমিয়ে, সকালে ফিরে যেতে যাই।
- ইশ্! কেনো? এভাবে যদি চলে যাবা তাহলে এলে কেনো?
- আসছিলাম তোমাকে দেখার জন্য, আর তোমার আব্দার অনুযায়ী দুজনের বার্থডে একসঙ্গে সেলিব্রেট করার জন্য।
- তো, এখন তা না করেই কেনো চলে যাবা?
- বাহ্ তোমাকে না বললাম একটু নিচে আসতে, আমি চাঁদ আর তোমায় পাশাপাশি রেখে দেখেতে চাই কে বেশি সুন্দর!
- শোন, ঢং করবা না, এতরাতে এখন আমি নিচে নামি আর কেউ দেখে আমার বাবার কাছে বললে কি হবে একবার ভাবো?
- কি আর হবে, দুজনকে একসঙ্গে ধরতে পারলে ধরে বিয়ে দিয়ে দেবে, এটাই তো তুমি বলছো, তাই না! তাহলে আসতে সমস্যা কোথায়?
- শোন, এমন পাগলামী কইরো না, এখন তুমি বাসস্ট্যান্ডে যাও, ওখানে আবাসিক হোটেল আছে, কোন একটাতে রাতটা কাটাও,আব্বু ৯টার মধ্যে অফিসে যাবে, আমি সাড়ে নটার দিকে তোমার সঙ্গে দেখা করব।
- কোথায় দেখা করবে?
- উম, সেটা তোমাকে সকালে জানাবো।
- ওহ্ কি কষ্ট, এত দূর থেকে আমি এত কষ্ট করে তোমাকে দেখার জন্য ছুটে এলাম আর তুমি আমাকে আবার সেই সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে! নাহ্, আমি পারবো না, আমি বরং চলেই যাই!
- দেখো প্লিজ এমন কোরোনা লক্ষ্মী সোনা, সকালে তো দেখা হচ্ছেই।
- আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যেহেতু নিচে আসতে পারছো না তাহলে এক কাজ করি আমিই না হয় উপরে আসি, তুমি গেটটা একটু খুলে দাও।
- ইশ্ শখ কত, গেটের চাবি আব্বুর কাছে।
- ওহ্ হো, তাহলে কি করা যায়।

হঠাৎ তাকিয়ে দেখি ও যে বেলকোনীতে দাঁড়িয়ে রয়েছে তার কাছেই একটি সুপারির গাছ। গাছটি দেখে মাথায় একটি দুষ্ট বুদ্ধি খেলে গেলো।

- আচ্ছা, আমি যদি সুপারির গাছ বেয়ে তোমার কাছে পৌছাই, তাহলে তো আর সমস্যা নাই?
- আয় হায়, বেডায় কয় কি? কেউ যদি দেখে তাহলে কি হবে একবার ভাবো তো? শোন, যা বলছি শোন, সকাল ১০ টার আগেই আমি কলেজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হবো, তখন তো দেখা হবেই।
- আচ্ছা, কি আর করা, আমি তবে ফিরেই যাই।

কথাটি বলে আমি মোবাইলের কলটা কেটে দিয়ে, ঘুরে হাঁটা শুরু করি, একসময় মাঠ পেরিয়ে রাস্তায় উঠে বাস স্টপেজের দিকে হাঁটতে থাকি। একবারও পেছন ফিরে তাকালাম না। রাস্তার বাঁকে আমি তার দৃষ্টির আড়ালে হওয়ার পরেই মোবাইলে রিং হলো, আমি না ধরে হাঁটতে থাকি। বেশ কয়েকবার রিং হওয়ার পর এবার রিসিভ করি।

-কি ব্যাপার, ফোন দিছো কেনো?
- তুমি কি রাগ করছো, প্লিজ সোনা রাগ করো না!
- রাগ না করে করবটা কি?
- শোন কাল দেখা হলে তোমার এই কষ্টটা আমি পুষিয়ে দেবো কথা দিলাম, তোমাকে দেখে আমার খুব পছন্দ হইছে।
- কিন্তু আমি তোমাকে তো এখনও ভালো করে দেখলামই না, তুমি কালো না ফর্সা, সুন্দরী না বান্দরী, না দেখেই চলে যেতে চাচ্ছি।
- প্লিজ, সোনা, আমাকে আর কষ্ট দিওনা, রাতটুকু অপেক্ষা করো, এখন তো প্রায় ৪টা বাজে, আর মাত্র ৪-৫ ঘণ্টা হোটেলে একটু রেষ্ট নাও, এরপর তো আমি তোমার। শুধুই তোমার!

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×