somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাত্র ৩.৬ সেকেন্ডে রিচার্জ হবে ত্রিমাত্রিক ব্যাটারি!

২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ব্যাটারির তৈরির নতুন ধরণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। কার্যকরিতার এবং আকারের দিক থেকে হার মানাবে অতিতের সব কিছুকে। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের গঠন শৈলীতে। সম্প্রতি ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি নির্ভর এই ব্যাটারি নিয়ে অনলাইন জার্নাল ন্যাচার কমিউরিকেশনস এ গবেষণার বিস্তারিত বিষয়াদি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের মতে তাদের এই উদ্ভাবন সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন নিয়ে আসবে স্মার্টফোন এবং ক্ষুদে আকৃতির ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতিতে।



স্বপ্নকে ছাড়িয়ে: আবিষ্কারের নেতৃত্বে থাকা ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের মতে, এ ধরণের ব্যাটারি নির্মাণে ব্যবহার করা হবে ত্রিমাত্রিক ইলেকট্রড। এই ত্রিমাত্রিক ইলেকট্রডের ছোঁয়ায় ব্যাটারির আকার হবে মাইক্রো [এক হাজার ভাগের এক ভাগ] পর্যায়ের। বাহ্যিক আকৃতির দিক থেকে যা বর্তমান সময়ের ব্যাটারির তুলনায় কয়েকগুণ থেকে কয়েকশত গুণ ছোট আকারের হবে। তবে কাজের দিক থেকে এগুলো আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। সবচেয়ে বড় সুবিধা গতানুগতিক ব্যাটারির মতো রিচার্জ করার ক্ষেত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় অপচয় করার প্রয়োজন হবে না। আগেকার ব্যাটারির তুলনায় এক হাজারগুণ দ্রুত গতিতে রিচার্জ করা যাবে। সে হিসেবে ধরুণ আপনার নোকিয়া ফোনের ব্যটারি রিচার্জ করার জন্য আগে সময় লাগতো ১ ঘন্টা। এখন সে সময় এসে দাঁড়াবে মাত্র ৩.৬ সেকেন্ডে। উদ্ভাবক দলের প্রধান অধ্যাপক কিং এর মতে আমাদের মডেল অনেকটা কাপড়ের মধ্যে বুটিক প্রক্রিয়ায় নকশা তৈরির মতো। এই প্রযুক্তির একটি ব্যাটারি আকারের দিক থেকে বর্তমান সময়ে দশটি ব্যাটারি সমান এবং কার্যকরিতার দিক থেকেও দশটি ব্যাটারির সমতুল্য।



ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি: এই ব্যাটারির কেন্দ্রস্থালে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানোর জন্য থাকবে দুই বিশেষ উপাদান, যা ইলেকট্রড নামে পরিচিত। সহজে বলতে গেলে অ্যানোড এবং ক্যাথোড। এদের মধ্যে অ্যানোডের কাজ হলো ইলেকট্রন ছাড়া। অন্যদিকে ক্যাথোড এই ইলেকট্রনকে গ্রহন করে। পাশাপাশি তৃতীয় উপাদান হিসেবে বিদ্যমান ইলেকট্রলাইটের কাজ হলো ইলেকট্রনকে এলোমেলো অবস্থায় ভ্রমনে বাধাঁ দেওয়া। যখন ব্যাটারিকে কোনো যন্ত্রে লাগানো হবে তখন ইলেকট্রন একটি ইলেকট্রড থেকে অন্য আরেকটি ইলেকট্রডে যাত্রা শুরু করবে। বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে যুগান্তকারি সাফল্য এই অ্যানোড এবং ক্যাথোডকে মাইক্রো স্কেলে নিয়ে আসার উপায় বের করা। নতুন এই উপায়ে ইলেকট্রন পরিভ্রমণের পরিবর্তে মাইক্রো স্কেল আকৃতির অ্যানোড-ক্যাথোড একে অন্যের কাছে প্রয়োজন মতো চলে আসবে। এতে করে ব্যাটারির সর্বপোরি আয়তন অনেক কমে আসবে। অ্যানোড-ক্যাথোড পরস্পরের খুব কাছাকাছি অবস্থান নিতে পারবে বিধায় ইলেকট্রন আদান-প্রদানের ঘটনাটি অনেক দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটবে। সেজন্য ব্যাটারি রিচার্জ করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় আগের তুলনায় হাজারগুণ কমে আসবে। মূলত ব্যাটারির কাছ থেকে দ্রুত রিচার্জ সুবিধা আদায় করার জন্য অভ্যান্তরে ক্ষুদে পলি-স্টাইরিনের তৈরি গোলক ব্যবহার করা হবে। যার ফাঁকে খালি জায়গাগুলো পূরণের জন্য ধাতব কাঠামো বিশেষভাবে তৈরি করা হবে।



অপেক্ষার শুরু: ইতোমধ্যে ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তির এই ব্যাটারি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার এডওয়ার্ডসের মতে এই প্রযুক্তিকে বাণিজ্যিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন কাজ। তবে এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতার কথাটি জানালেন ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লেয়ার গ্যারি। তার মতে এই ব্যাটারির অভ্যান্তরীণ গঠন অনেক জটিল হবে। পাশাপাশি পলি-স্টাইরিনের ইলেকট্রলাইট ব্যবহারের সমালোচনা করেন। কেননা পলি-স্টাইরিন দাহ্য পদার্থ হওয়ায় অভ্যান্তরীন শট সার্কিট ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। অন্যদিকে ইলেকট্রলাইট হিসেবে দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করার প্রসঙ্গে অধ্যাপক কিং জানান অনুবীক্ষনিক পর্যায়ে থাকায় এই দাহ্য পদার্থের খুব একটা সক্রিয় ভ’মিকা থাকবে না। তবে যদি বড় মাপের ব্যাটারি তৈরি করা হয় তবে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। সেজন্য অচিরেই নতুন নিরাপদ পলিমার ভিত্তিক ইলেকট্রলাইট সংযুক্ত করার ব্যাপারটি প্রক্রিয়াধীন আছে। সব কিছু অনুক’লে থাকলে এই প্রযুক্তির ব্যাটারি পরীক্ষমূলকভাবে বাজারে আসবে এ বছরের শেষভাগে।


বি:দ্র: ভালো লাগলে অবশ্যই জানাবেন।


এ জাতীয় আরো কিছু পোষ্ট.....

* এ সময়ের প্রযুক্তি বিস্ময়: পর্ব- ১
* কম্পিউটারে ফায়ার- ফক্স ওএস চালাবেন যেভাবে
* জেমস বন্ড কায়দায় ঝাঁকিয়ে লক-আনলক করুন আপনার সেলফোন
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫০
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×