বিকেল পর্যন্ত কেটেছে প্রচণ্ড উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনদের ফোনে ফোনে অস্থির সময়। কেউ আটকা পড়েছেন, বাসায় ফিরতে পারছেন না; কেউ বা বাচ্চার জন্য চিন্তা করছেন- ঠিকমতো বাসায় ফিরতে পারবে কী না এই ভেবে- এইসব তো ছিলোই, সঙ্গে আরেকটি শংকাও কাজ করছিলো- এই ঘটনা কতোদূর পর্যন্ত গড়াবে? শুধু কি সদর দফতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে এই বিদ্রোহ, নাকি সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়বে? সারাদেশে কর্মরত সদস্যরা একসঙ্গে বিদ্রোহ করে বসলে ফলাফল হতে পারে ভয়াবহ। যেহেতু, প্রায় সাড়ে চার হাজার মাইল সীমান্ত পাহারার দায়িত্বটা তারাই পালন করে, যদি বিদ্রোহ করে বসে তাহলে পুরো সীমান্তটিই অরক্ষিত হয়ে পড়বে! ভাবা যায় না!
সরকার অতিদ্রুত পদক্ষেপ নেয়ায় আপাতত শংকা সামান্য হলেও কমেছে। রাজনৈতিক সরকার থাকার এই এক সুবিধা, যে কোনো সমস্যাকে তারা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার কথা ভাবে। আজকে যদি কোনো সামরিক সরকার বা অরাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় থাকতো তাহলে নিশ্চিত রক্তের গঙ্গা বয়ে যেত পিলখানায়! আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়ায় সরকারকে সাধুবাদ জানানোই যায়!
কিন্তু তাতে উদ্বেগ কমে না। এমনিতেই সশস্ত্র বাহিনীর অভ্যন্তরিণ টানাপোড়েনের কারণে বেসামরিক মানুষের আহত-নিহত হওয়ায় বিমূঢ় হয়ে আছি, তার ওপর এই ভাবনা আসছে মনে- এই বিদ্রোহীরা কি সত্যিই ক্ষমা পাবে? নাকি তারাও মারা পড়বে আমাদের অজান্তেই?
বিডিআর সদস্যরা তাদের সমস্যা ও অভিযোগের কথা জানাতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে গতকালের দরবারে! জানাতে দেয়া হয়নি! উর্ধ্বতন কতৃপক্ষই সে ব্যবস্থা করেননি।
তা কি ছিলো তাদের অভিযোগ বা দাবিদাওয়া?
এমন বিরাট কিছু নয়! বেতন বৈষম্য কমানো (মানে তাদের বেতন বাড়ানো), প্রাপ্য ভাতা প্রদান (যেমন ডাল-ভাত কর্মসূচিতে নিজেদের প্রাপ্য ছুটি বাতিল করে অবিরাম কাজ করে যাওয়ার বিনিময়ে সামান্য কিছু মজুরি), উর্ধ্বতনদের কাছ থেকে একটু ভালো ব্যবহার! এই তো! সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের এইটুকু নায্য দাবির কথা তাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারবে না?
মনটা খারাপ হয়ে আছে.. সব মিলিয়ে...